সকল মেনু

বরগুনায় শিশুকে পিটিয়ে হত্যা, নর পশুদের শাস্তি নিশ্চিত করুন

Barguna_Rabiul_BG_212760668

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৬ আগস্ট: ১শ’ টাকার একটি জাল নিয়ে বিরোধের জেরে প্রাণ গেলো শিশু রবিউলের (১১)। স্থানীয়ভাবে মাছ ধরার জন্য তৈরি বুচনা (মাছ ধরার জন্য বিশেষ ফাঁদ) চুরির অভিযোগে পিটিয়ে হত্যা করা হলো শিশুটিকে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সপ্তাহ খানেক আগে রবিউলদের বাড়ির পাশে বুচনা পেতে রেখেছিলেন একই এলাকার মিরাজ। কিন্তু কে বা কারা ওই জালসহ মাছ চুরি করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় রবিউলকে সন্দেহ করে বাড়িতে গিয়ে শাসিয়ে আসেন মিরাজ। ফের এ ধরনের ঘটনা ঘটলে রবিউলকে হত্যারও হুমকি দেন তিনি। নিহত রবিউলের মা মোর্শেদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, মাত্র একশ’ টাকার একটা জালের জন্য আমার ছেলেকে হত্যা করেছে মিরাজ। আমি ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ওরে দেইখ্যা সবাই যেন শিক্ষা নেয়। আর কোনোদিন কেউ যেন এরকম ঘৃণ্য-জঘন্য অপরাধ করতে সাহস না পায়। তিন ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট ছিল রবিউল। তাই একটু বেশি আদরেরও ছিল। রবিউল আমখোলা গ্রামের ফরাজী বাড়ী দাখিল মাদ্রাসার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। প্রতিদিন পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করতো সে। কারো সঙ্গে বাকবিতণ্ডা তো দূরের কথা ঠিকমতো মাথা উঁচু করে কথাও বলতো না বলে জানান এলাকাবাসী। কিন্তু সামান্য জাল ও জালের মাছ চুরির অভিযোগ এনে সিলেটের শিশু রাজন এবং খুলনার রাকিব হত্যার মতো বরগুনার তালতলীতে ১১ বছরের রবিউল নামের এক শিশুকে পিটিয়ে  হত্যা করলো একই এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মিরাজ। রবিউলের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সোমবার রাত ৮টার দিকে ঘর থেকে বের হয় রবিউল। এরপর আর ফিরেনি। মঙ্গলবার বিকেলে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইউনুচ ফরাজীর মাছের ঘেরে রবিউলের মরদেহ পরে থাকতে দেখা যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে রবিউলের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।  তার কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন ও বাম চোখ ফোলা পাওয়া গেছে। প্রথম মরদেহ দেখতে পাওয়া মো. সোহাগ বলেন, দুপুরের পর আমি ভাত খেয়ে বীজতলা দেখতে গিয়েছিলাম। প্রথমে ওর লুঙ্গি ও পা দেখতে পাই। লুঙ্গি দেখেই আমি চিৎকার দিয়ে এসে সবাইকে বলি। পরে তারা সবাই গিয়ে রবিউলকে শনাক্ত করে পুলিশকে খবর দেয়। স্থানীয় ছোট আমখোলা গ্রামের আধিবাসী বেল্লাল হোসেন বলেন, ছেলেটিকে প্রতিদিন দেখতাম মাদ্রাসায় যেতো। কারো সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। কখনো কারো ক্ষতি করেনি। কে বা কারা এই নিরীহ ছেলেটিকে পিটিয়ে মেরেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একই এলাকার আছিয়া বেগম বলেন, হেই ছোড বেলা হইতে পোয়াডারে দেহি। কোনো দিন কোনো অন্যায় হরছে দেহি নাই। হেরপরও মরতে হইলো। এক বাপের একপোলারে এইরহম যারা মাইরা হালাইলো, হেরা মোর নিজের পেটের ভাই হইলে হেগো মুই ফাঁসি চাই। এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আখতার বলেন, প্রথমে নিহতের পরিবার অভিযোগ করেনি। বুধবার লিখিত অভিযোগ করলে সঙ্গে সঙ্গে আমরা অভিযুক্ত মিরাজকে গ্রেফতার করি। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কেউ যুক্ত আছে কি-না সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে বরগুনা পুলিশ সুপার বিজয় বসাক পিপিএম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি মর্মান্তিক। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর এঘটনায় আরো কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top