নিজস্ব সংবাদদাতা, কলাপাড়া:পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা- কলাপাড়া ২২ কিলোমিটার সড়কের তিনটি ফেরির এখন বেহাল দশা। ফেরির ইঞ্জিন, পন্টুন, বেইলি ব্রিজ ও গ্যাংওয়ে লক্কর ঝক্কর হওয়ায় যান-বাহন চলাচলা করতে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এমনিতে প্রায় দিন অস্বাভাবিক জোয়ারের পানিতে ডুবে থাকছে বেইলি ব্রিজ, গ্যাংওয়ে। এছাড়া লক্কর-ঝক্কর পন্টুনের তলা ফুটো হয়ে ডুবে থাকে। ফেরিগুলোতে একটি ইঞ্জিন প্রায় সময় থাকছে বিকল। জোয়ার-ভাটার সময় ফেরি গন্তব্যে পৌছতে পারে না। ভেসে যায় অন্যত্র। কখনও চরে গিয়ে আটকে থাকছে। ফলে পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। ২২ কিলোমিটার পথ পার হতে সময় লাগছে কখনও ১০ থেকে ১২ ঘন্টা। রাতভর অপেক্ষায় কেটে যায় ফেরিঘাটে। জোড়া তালি দিয়ে চালু রাখা তিনটি ফেরির ইঞ্জিন বিকল হচ্ছে প্রতিনিয়ত। ফেরি ও পন্টুনের তলদেশ ফেটে গেছে। চটের বস্তা দিয়ে রিপেয়ার করে চরম ঝুঁিক নিয়ে যানবাহন পারাপার করতে গিয়ে যে কোন সময় ডুবিতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।
জানাগেছে, কলাপাড়া অংশে আন্ধারমানিক নদীর ফেরির ইঞ্জিন প্রায় সময় একটি নষ্ট থাকছে। সর্বশেষ সোমবার রাতে একদল পর্যটক ফেরিতে গাড়ি নিয়ে উঠে চরে আটকে যায়। পাঁচ/ছয় ঘন্টা অপেক্ষা করে গাড়ি রেখে মাইক্রো ভাড়া করে তারা বরিশালে যেতে বাধ্য হন। পর্যটক রফিকুল আলম জানান, ফেরি খারাপ থাকায় রবিবার সারা রাত তাদেরকে হাজিপুর ফেরিঘাটে অপেক্ষা করতে হয়েছে। একটি ইঞ্জিনে চালাতে গিয়ে এমন সমস্যা হয়েছে বলে চালকদের দাবি। সোনাতলা নদীর হাজীপুর পয়েন্টের ফেরি ঘাটের পন্টুনের তলদেশ ছিদ্র হয়ে গেছে। পানি প্রবেশ করে ফেরিটি ডুবে থাকায় মহাসেন পরবর্তী সাতদিন কুয়াকাটার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ থাকে। বর্তমানে জোড়াতালি দিয়ে চলছে। মহিপুর শিববাড়িয়া নদীর ফেরি অবস্থা আরো ভয়াবহ এ ফেরির পার্শ্বের বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গেছে। ভাঙ্গা অংশ দিয়ে সরাসরি পানি প্রবেশ করতে না পারে সে জন্য পাটের বস্তা দিয়ে রাখা হয়েছে। বোঝাই গাড়ি নিয়ে চলাচল করলে কোন সময় ফেরি ডুবে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে স্থানীয়রা ও ফেরি বিভাগের লোকজন আশঙ্কা করছেন। যে সম্প্রতি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কমলেন্দু মজুমদার ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বরিশাল) ইমদাদ হোসেন গাড়ি নিয়ে ফেরিতে আটকে যান। তারাও গাড়ি রেখে অন্য গাড়িতে ফিরে যেতে বাধ্য হন। অবস্থা এমন হয়েছে যে কোন সময় কুয়াকাটা- কলাপড়া সড়কের তিনটি ফেরি চলাচলা বন্ধ হয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশংঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এব্যাপারে সড়ক ও জন পথ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী যোগেশ চন্দ্র জানান, দুই এক দিনের মধ্যে নতুন ইঞ্জিন লাগানো হবে । হাজিপুর ফেরি ডক করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এ সড়কের ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।