সকল মেনু

চাঁদপুরে ডিসিকে ইলিশ খাওয়াতে যেয়ে এক যুবক অগ্নিদ্বগ্ধ

chandpur_75681নিজস্ব বার্তা পরিবেশক, চাঁদপুর: চাঁদপুরে জেলা প্রশাসক আব্দুস সবুর মন্ডল। সদ্য যোগ দেয়া জেলার এ শীর্ষ কর্তাকে খুশি করতে জেলা প্রশাসনের এক শ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারী ছাড়াও চাটুকারদের চলছে নানা প্রয়াস । আর এই চাটুকারদের ফরমায়েশ অনুযায়ী উপঢৌকন সরবরাহ করতে যেয়ে শহরের একটি নামকড়া বেকারির এক কর্মচারী আগুনে ঝলসে গেছে। চাঁদপুরের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডল গত ২ জুলাই যোগ দেন। এর আগে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।  জেলা প্রশাসক হিসেবে চাঁদপুরে যোগ দেবার পর থেকেই এক শ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারী তার সুনজরে পড়ার জন্য নানা প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এরই ভেতর চলে আসে। ওইসব অসাধু ব্যক্তিদের সামনে সুযোগ এসে যায় ঈদের দোহাই দিয়ে ডিসিকে তুষ্ট করার। ডিসি অফিসের দীর্ঘদিনের নাজির কাম প্রশাসনিক কর্মকর্তা নির্মল ডিসিকে খুশী করানোর জন্য বেছে নেন চাঁদপুরের বিখ্যাত ইলিশ মাছ।  এমন উৎসবে ডিসি সাহেব রূপালি ইলিশের শহরে আস্ত ‘ইলিশ ফ্রাই’ খাবেন না তা তো হয় না। তাইতো ঈদের দিন সকালে জেলা প্রশাসককে খুশি করতে আয়োজন করা হয় আস্ত ইলিশ ফ্রাই ভোজের। চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির নির্মল চন্দ্র  ১০ টি মেগা সাইজের ইলিশ ফ্রাই করার জন্য হাজির হন শহরের খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান ‘ঢাকা কনফেকশনারীতে’। এদিকে ঈদের ছুটির কারণে এক দিন আগেই ওই কনফেকশনারীর উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। কর্মচারীরা চলে যান ছুটিতে। শুধুমাত্র ফ্যাক্টরীর সামনের শো-রুমটি খোলা রাখা হয়। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার ঈদের দিন সকাল ১০টায় ডিসির নাজির নির্মল ইলিশগুলো ফ্রাই করে দিতে কর্মচারীদের চাপ সৃষ্টি করেন।  ঈদের মাত্র দু’দিন আগে ওই কনফেকশনারীতে অভিযান চালিয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানাও করেন। সেই ভয়েই অনেকটা নিরুপায় হয়ে সেলসম্যান তাপস গ্যাস চালিত চুলা জ্বালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ফ্যাক্টরীর কাজে অনভিজ্ঞ তাপস চুলাতে আগুন দেয়ার সাথে সাথেই বিকট শব্দে আগুনের স্ফুলিঙ্গ এসে তার কানসহ মুখমন্ডলের ডান পাশ ঝলসে দেয়। তার চিৎকারে অন্যরা এসে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। এতেও নাজির নির্মলের খায়েশ মিটেনি ইলিশ ফ্রাইয়ে। শেষতক বেলা ১২টায় নিরুপায় হয়ে ম্যানেজার সঞ্চয় ও কম্পিউটার অপারেটর মনোজ মিলে ওই ইলিশ ফ্রাই করে দেন  । জানা গেছে, ওই ইলিশেই দুপুরের ভোজন চলে বড় কর্তাদের । এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নাজির নির্মল চন্দ্র জানান, বাংলোতে থাকা ওভেনে বড় ইলিশ ফ্রাই করা সম্ভব হয়নি বলে বেকারিতে নিয়েছিলাম । যা হবার হয়ে গেছে ভাই এ নিয়ে লিখে কি লাভ হবে । ঢাকা কনফেকশনারির ম্যানেজার সঞ্জয় জানান, এ ঘটনা নিয়ে আমরা কোন কথা বলতে চাই না । ইলিশ ফ্রাই করতে চুলা জ্বালাতে গিয়ে আমাদের এক কর্মচারী আহত হয়েছে । এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ আব্দুস সবুর মন্ডলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন। তবে ওই বিষয়ে খোঁজ নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জোর করে কাউকে দিয়ে কিছু করানো হলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানান, চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান। এই দুই কর্মকর্তাই জানান, তারা কোন অনৈতিক কার্যকলাপকে প্রশ্রয় দেন না এবং দেবেনও না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top