সকল মেনু

শুরু হলো নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা

mail.google.comএস এন ইউসুফ, হটনিউজ২৪বিডি.কম : স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে ঢাকা ছাড়ছেন নগরবাসী। বাস, ট্রেন, লঞ্চে করে যার যার গন্তব্যে যাত্রা করছেন তারা।

ঈদুর ফিতর উপলক্ষে যানবাহনের বিশেষ সার্ভিস শুরু হয়েছে। আগাম টিকিট কিনে যাত্রীরা যার যার নির্দিষ্ট দিন থেকে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন।

জীবিকার তাগিদে সারাবছর ইট-পাথরের এই শহরে থাকলেও ঈদের সময় ঠিকই বাড়িতে ফিরতে হয়, না হলে মনে হয় জীবনটাই অর্থহীন। কথাগুলো বলছিলেন, গার্মেন্টেস লটের ব্যবসা করা শাহাব উদ্দিন। বউ এবং দুই মেয়েকে ট্রেনে উঠিয়ে দিতে স্বপরিবারে এসেছেন তিনি জংশনে। তিনি ফিরবেন ১৬ তারিখ রাতে।

অন্য যাত্রীদের মধ্যেও দেখা গেল বাড়ি ফেরার উৎকণ্ঠা। সোমবার বিশেষ ট্রেনে যাত্রীদের চাপ ছিল মোটামুটি। কিন্তু তাদের মুখে ছিল বাড়ি যাওয়ার আনন্দ আর প্রতীক্ষার প্রবল ছাপ। কখন বাড়ি যাবেন, কখন কাছে পাবেন স্বজনদের।

ঈদের এখনো ৪ থেকে ৫ দিন বাকি। কিন্তু ঝামেলা এড়াতে আগেভাগেই চলে যাচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে ছাত্র, গৃহবধু আর শ্রমজীবি মানুষের মধ্যে ঘরে ফেরার তাড়া বেশি। অফিস-আদালত ছুটি না হলেও রাজধানীতে লেখাপড়া করতে আসা ছাত্র-ছাত্রীরা ঈদ করতে আগেই গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাচ্ছেন। শেষ দিকে রাস্তায় যানজটের আশংকা, অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড় আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা ভেবে নাড়ির টানে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ।

বিকেল সাড়ে ৩টার পর ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া ট্রেন দিয়ে শুরু হয়েছে ঈদের বিশেষ রেল সার্ভিস। যদিও এই ট্রেন বেলা ৩টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে প্রথম দিনে যাত্রীদের তেমন চাপ লক্ষ্য করা যায়নি। সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার উদ্দেশ্যে এবং রাতে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে অপর দুটো ট্রেন ছেড়ে যাবে।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলছেন, পবিত্র শবে কদর উপলক্ষ করে আগামীকাল (মঙ্গলবার)  বিকাল থেকে যাত্রীদের চাপ বাড়বে। তারা বলছেন, আজ মানে ১৩ জুলাইয়ের জন্য যেসব ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়েছিল সেসব ট্রেনের যাত্রীরা অনেকটা ঝামেলাহীনভাবেই যাত্রা করতে পারবেন।

বাংলাদেশ রেলওয়ের যুগ্ম-মহাপরিচালক (অপারেশন) এস এম মুরাদ হোসেন জানান, সাধারণত ঈদের দুয়েকদিন আগেই চাপটা বেশি থাকে। তখন টিকেট কেনা থাকলেও ছাদে উঠে হলেও মানুষ যাত্রা করে।

তিনি জানান, এবার ঈদে আটটি রুটে বিশেষ ট্রেন চলবে। এগুলো হলো- ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা (১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই), চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম (১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই), পার্বতীপুর-ঢাকা-পার্বতীপুর (১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই), খুলনা-ঢাকা-খুলনা (১৫-১৭ জুলাই ও ২০-২৬ জুলাই)।

এছাড়া ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ (সোলাকিয়া এক্সপ্রেস, ঈদের দিন),  ঢাকা-খুলনা একজোড়া ও ঢাকা-পার্বতীপুর একজোড়া।

তিনি জানান, মূলত ১৫ জুলাই থেকে বড় আকারে যাত্রী পরিবহন শুরু হবে। কারণ এদিন থেকে ৬টি রুটে বিশেষ ট্রেন চলা শুরু হবে।

যুগ্ম-মহাপরিচালক আরো জানান, ঈদ উপলক্ষে আজ থেকে ঈদের পূর্বদিন পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনের কোনো সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে না।

এদিকে গত ১০ জুলাই যারা অগ্রিম টিকেট কিনেছিলেন তারা আগামীকাল ঢাকা ছাড়বেন। আর ১১ জুলাই টিকেট বিক্রি হয়েছে ১৫ তারিখের, ১২ জুলাই ১৬ তারিখের এবং আজ শেষদিনে ১৭ জুলাইয়ের টিকিট বিক্রি হয়েছে।

ঈদের পর ফিরতি টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১৬ জুলাই। ওইদিন পাওয়া যাবে ২০ জুলাইয়ের আগাম টিকিট। এছাড়া ১৭ জুলাই ২১ তারিখের, ১৮ জুলাই ২২ তারিখের ও  ১৯ জুলাই ২৩ তারিখের এবং ২০ জুলাই ২৪ তারিখের আগাম টিকিট মিলবে। ঈদের পরের টিকিট রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, দিনাজপুর, লালমনিরহাট স্টেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় বিক্রি হবে।

অন্যদিকে আজ সোমবার টিকিট বিক্রির মাধ্যমে শেষ হয়েছে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য কমলাপুরে রেলস্টেশনে রেলের আগাম টিকিট বিক্রি। আজ সকাল ৯টা থেকে টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে বেলা ২টায় শেষ হয় আগাম টিকিট বিক্রি।

শেষ দিনও কমলাপুরের ২০টি কাউন্টারেই ছিল টিকিট প্রত্যাশীদের উপচে পড়া ভিড়। রাত থেকেই টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়ান টিকিট প্রত্যাশীরা। তবে অনেকেই টিকেট না পেয়ে হতাশ হয়ে ফিরেছেন।

ঈদের বিশেষ ট্রেন সার্ভিস পরিদর্শনে রেলপথ মন্ত্রী মজিবুল হক দুপুরের পর রেলস্টেশনে এসেছিলেন। তখন তিনি বলেছেন, ঈদ সামনে রেখে এবারও পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছে রেলওয়ে। এবার কোনো রকম সিডিউল বিপর্যয় হবে না বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

রেলপথ মন্ত্রী জানান, স্বাভাবিকভাবে প্রতিদিন বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার যাত্রী পরিবহন করে। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রতিদিন প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার যাত্রী পরিবহনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top