সকল মেনু

গার্মেন্টস কর্মীদের ঈদ আনন্দ

1436730438

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ১৩ জুলাই : ঈদুল ফিতরের আমেজ শুরু হয় রোজার প্রথম দিন থেকেই। চলে ঈদ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা। উঁচু-নিচু সবশ্রেণি পেশার মানুষেরই থাকে সাধ্যের প্রাচীর ঘেরা সামান্যটুকু স্বাদ। তবে সকলেরই প্রত্যাশা বাড়ি ফিরে স্বজনদের সাথে ঈদ করা। ঈদের আনন্দ যে শ্রেণী ভেদে ভিন্ন হয় তার বাস্তব চিত্র সর্বত্রই। ট্রেনের টিকিট না পেয়ে একশ্রেণীর মানুষের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ছাদে আর সাধারণ টিকিটের চেয়ে চারগুণ মূল্যে এসি বাসের টিকিটে ভ্রমণকারীদের আনন্দ যেমন আলাদা। তেমনি অভিজাত বিপনী-বিতানের শপিং আর ফুটপাতের কেনা কাটাও আনন্দের শ্রেণী বিভাজন করে। এই ফুটপাতের ক্রেতা আর চলতি টিকিটে জীবন বাজি রেখে নাড়ির টানে বাড়ি ফেরা উল্লেখযোগ্য একটা অংশই গার্মেন্টস কর্মী। জীবন যুদ্ধের সর্বত্রই যারা ধরাশায়ী। ঈদের মাস খানেক আগে থেকে সময় মতো বেতন বোনাস না পওয়ার চিন্তা নিয়ে ঈদের মলিন আনন্দ শুরু হয়। এরই মাঝে ধারকর্য করে শুরু হয় ঈদের কেনাকাটা। ঈদের বাড়তি কাজের চাপে সময় নেই। তবু কোন এক ফাঁকে বের হয়ে কেনাকাটা শেষ হয়। ঈদের ১৫ দিন আগ থেকে বিক্রি শুরু হয় অগ্রিম টিকিট। সেদিকে রাজধানী অন্য সব কর্মজীবী মানুষের নজর নেই গার্মেন্টস কর্মীদের। একদিনের ডিউটি মিস করে টিকিট কিনতে আসার মতো সময় তাদের হাতে নেই। অগ্রিম টিকিট না কাটলেও বাড়ি যাওয়া হবে চলতি টিকিটে। যে টিকিটে নিয়ম-নীতিতে চলা কোন গাড়ি পাওয়া যায়না। আর ট্রেনের বগিতেও জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়ে। তাই তাদের চাপ যেমন ট্রেনের ছাদে থাকে আবার থাকে লোকাল বাসের ছাদেও। গার্মেন্টস কর্মীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বছরে দুই বারের বেশি গ্রামের বাড়ি যাওয়ার সুযোগ সাধারণত পায় না পোশাক শ্রমিকরা। দুই ঈদেই সাধারণত পরিবার পরিজনদের সাথে দেখা সাক্ষাত থেকে শুরু করে আনন্দ কষ্টগুলো ভাগাভাগি করার সুযোগ পান এই পোশাক শ্রমিকরা। যে দিনগুলির জন্যে পুরো বছর ধরে শত অপেক্ষা আর প্রতীক্ষা সে দিনের সমষ্টি মাত্র তিন বা চার দিন। ঈদ উপলক্ষটি নিকটবর্তী হওয়ার সাথে সাথেই শ্রমিকদের পক্ষ থেকে মালিক পক্ষকে অনুরোধ করা হয় আমরা আপনাদের যে কোন শর্ত মেনে নিতে রাজি। তবে ছুটিটা দুই-তিন দিন বাড়িয়ে দিতে হবে।
কারখানা থেকে বের হওয়ার পর তাদের জানা নেই কোন পথে কিভাবে কোন যানবাহনেই বা প্রিয় মানুষগুলোর কাছে ফিরবেন তারা। বাস বা ট্রেনের ছাদে কেউবা ট্রাকে বা লঞ্চের অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে যাত্রা শুরু করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পুরো পথ পাড়ি দিয়ে হয়তো ঈদের দিনের ২/১ ঘন্টা পূর্বে পৌঁছান গাঁয়ের বাড়িতে। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি শেষ না হতেই এরই মধ্যে সুতোয় টান পড়েছে, ফিরতে হবে প্রিয় গার্মেন্টসে! আবার সেই কর্মস্থলে ফেরার প্রস্তুতি। আবারও একটা জীবন যুদ্ধে জয়ী হয়ে ফিরতে হবে চিরচেনা সেই গার্মেন্টসে। তাছাড়া ঈদের ঘরমুখো মানুষ শিকড়ের টানে বাড়ি ফিরলেও জীবিকার তাগিদে আবারও দুর্ভোগ পোহাতে হয় গার্মেন্টস কর্মীদের। বাস না পেয়ে মালবোঝাই ট্রাক থেকে শুরু করে ট্রেন ও বাসের ছাদে চড়ে যাচ্ছে শেকড়ের সন্ধানে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top