সকল মেনু

সৈয়দপুরে বিহারী ক্যাম্পের অন্ধকার ঘরে বাহারি নকশার কাজ

mail.google.com মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী  ১০ জুলাই:  ছোট্ট অন্ধকার ঘর। স্যাঁতস্যাঁতে মেঝেতে পাতা কাঠের ফ্রেম। পাশে মুঠোফোনে চলছে হিন্দি গান। কাঠের ফ্রেমের চার মাথায় আটকানো শাড়ি ও থ্রিপিস। আর সে ঘরেই শিল্পীরা সুনিপুণ দক্ষতায় করে চলেছেন কারচুপির কাজ। একটা একটা করে পুঁতি, জরির সুতা আর চুমকি দিয়ে শাড়ি ও জামায় নকশা করেন কারিগররা। কখনো নিজের পছন্দে, আবার কখনো বা ক্রেতার পছন্দে।
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আটকেপড়া সৈয়দপুরের ২২টি পাকিস্তানি ক্যাম্পে গেলে শত শত পরিবারে দেখা যাবে এমন দৃশ্য। কারচুপির কাজে বেশ নাম করেছেন শহরের বাঁশবাড়ি বিহারী ক্যাম্পের বাসিন্দারা। যদিও তারা প্রশিক্ষিত নয়, তবু ঈদের সময় চাহিদার একটা বড় অংশ মেটান তারা। নারী- পুরুষ সবাই ঘরে বসে কারচুপির কাজ করে সংসার নির্বাহ করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্যাম্পের প্রতিটি ঘরে একটা করে ছোট্ট কাঠের ফ্রেম। কোনো কোনো ফ্রেমে বাঁধানো কামিজ। একটা কামিজের গলায় ও হাতে কারচুপির কাজ করতে সময় লাগে দু-তিন ঘন্টা। আর ভালো মানের শাড়িতে কাজ করতে সময় লাগে দুইদিন। তবে সময় ও কাজ অনুযায়ী মজুরী খুবই কম। কারিগর সোহাগ ও আরিফ জানায়, ভারত থেকে কাপড় চোরাই পথে এ দেশের বাজারে ঢুকে পড়ায় স্থানীয় এসব নকশা করা জামা- কাপড়ের কদর একটু কমেছে। তবে ঈদ মওসুমে এসবের চাহিদা অনেকগুন বেড়ে যায়।
হালিমা নামে এক কারচুপির কারিগর জানান, সৈয়দপুর বিহারী ক্যাম্পের চুমকি- কারচুপির সুনাম রয়েছে। প্রতি বছর ঈদ মওসুম ছাড়াও বুটিক হাউসগুলোর চাহিদামতো অর্ডার থাকে। তাই সারাবছর বিহারী ক্যাম্প কারচুপির কাজে মুখরিত থাকে। এই কারচুপির কাজ করে উদ্যোক্তারা অনেকেই লাভবান হলেও যারা কাজ করে তারা পায় নামমাত্র মজুরী। বর্তমান দ্রব্যমূল্যের বাজারে সেই মজুরীতে তাদের না পোষালেও তারা বাধ্য হয়ে এই অল্প মজুরীতে কাজ করছে। সোহেলি নামে এক নকশাকার বলেন, ‘ইসাব কামমে বাহুত মাহেনাত হ্যায়, মাগার যো মাজদুরী মিলতা হ্যায় উসমে ইলেকট্রিক বিলকা খরচা ভি নাহি উঠতা হ্যায়।’ অর্থাৎ এই কাজে খুব পরিশ্রম কিন্ত যে মজুরী পাওয়া যায় তাতে কারেন্টের বিলও ওঠছে না।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top