সকল মেনু

দখল- দুষণে বুড়িগঙ্গার পরিবেশ বিপর্যস্থ

index

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ০৯ জুলাই : পানি মানুষের জীবন বাচায়। তাই ‘পানির অপর নাম জীবন’, ‘ তেমনি রাজধানী ঢাকার জীবন বুড়িগঙ্গা’- উক্তিটি করেছেন কেরানীগঞ্জের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব আব্দুস সাত্তার। দখল ও দূষণে ক্রমশ বিলীন হতে থাকা বুড়িগঙ্গার শাখা নদীগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখার সময় তিনি এসব কথা বলেন। মূল নদী বুড়িগঙ্গার মতো এর শাখা নদীগুলোকেও গিলে খাচ্ছে দখলদার ভূমিদস্যু আর স্থানীয় প্রভাবশালীরা। দেখার যেন কেউ নেই। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই হয়তো হারিয়ে যাবে বুড়িগঙ্গার শাখা নদী ‘মাছধরা’, ‘বান্দুরা’, ‘আটিপার’ আর ‘ইটাখোলা’ খাল। গাবতলী থেকে কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন খোলামোড়া পর্যন্ত সরেজমিনে বুড়িগঙ্গা নদীর শাখাগুলো  ঘুরে ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে দেখা ও জানা যায় , নদীর শাখাগুলোকে অবাধে দখল করে ফেলছে ভূমিদস্যু আর স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দখলদাররা রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকেই নদী দখলের মতো অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে।ফলে অনেক সময় এর প্রতিবাদ করতে গেলে উল্টো হয়রানির শিকার হন বিবেকবান ও পরিবেশ সচেতন সাধারণ মানুষ। আর দখলদাররা থেকে যায় বহাল তবিয়তে। সরেজমিনে দেখা যায়, গাবতলী ব্রিজের নিচ থেকে শুরু করে বসিলা ব্রিজ (বুড়িগঙ্গা-৩ নং সেতু) পর্যন্ত বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত ৩টি শাখানদী রয়েছে। আর কিছুটা দূর এগুলে কেরানীগঞ্জের বালুচরের পেছনে চোখে পড়বে ‘আটিপাড়’ খাল। নদীর নাম কেন খাল—এ প্রশ্নও হয়তো জাগবে অনেকের মনে। এর জবাব একটাই–স্থানীয় লোকজন এগুলোকে শাখানদী নয় ‘খাল’ হিসেবেই চেনে। স্থানীয় আসলাম বেপারী, জমির উদ্দীন, জয়নাল মোল্লা, রহিম কোম্পানিসহ আরো কয়েকজন প্রবীণ আক্ষেপ করে বলেন, ‘আমরা এক সময় এই বুড়িগঙ্গায় সাতার কাটতাম, গোসল করতাম। তখন বুড়িগঙ্গা ছিল বড় আর বেগবান নদী। নদীতে গোসল করতে নেমে সাঁতরে খালের ভেতর ঢুকে গোসল শেষ করতাম। এখন ক্রমাগত দখলে-দূষণে বুড়িগঙ্গা ও এর শাখাগুলো মৃতপ্রায়। এক সময়ের প্রশস্ত, খরবেগ, প্রবহমান আর চঞ্চল বুড়িগঙ্গা নদী ও তার শাখাগুলো এখন অর্ধমৃত। চূড়ান্ত মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে এরা। এমন অবস্থায় জনসাধারণের দাবি, জীববৈচিত্র্য রক্ষা, প্রকৃতি ও মানুষের প্রয়োজেনে দখলদারদের উচ্ছেদ করে বুড়িগঙ্গা ও তার শাখাগুলোকে উদ্ধার করতে হবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দখল হওয়ার পর নদীর অবশিষ্ট অংশ’র পানিদূষণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তা রীতিমত ‘বিষে’  পরিণত হয়েছে। স্থানীয়দের মতে, এই  দূষণের জন্য হাজারীবাগের ট্যানারির বর্জ্যই সবচেয়ে বেশি দায়ী। স্থানীয়দের দেয়া তথ্য অনুযায়ী গাবতলী থেকে খোলামোড়া পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর শাখাগুলোর মধ্যে রয়েছে মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলার ‘মাছধরা’, ‘বান্দুরা’, ‘ইটাখোলা’ এবং কেরানীগঞ্জ মডেল থানাধীন বালুরচর গ্রামের পেছন দিক দিয়ে প্রবাহিত ‘আটিপাড়’ খাল। এই খাল বা বুড়িগঙ্গার শাখাগুলো ক্রমেই সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, খালগুলো ভূমিদস্যুদের গ্রাসে চলে যাচ্ছে। যেনো গিলে খাওয়া হয়েছে নদীর শাখাগুলো। ভেতরে সামান্য পানির উপস্থিতি থাকলেও শাখানদীগুলো দুই পারে ধীরে ধীরে বালু জমে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। উপস্থিত লোকজন মন্তব্য করলেন ধীরে ধীরে প্রতিযোগিতামূলকভাবে বালি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে খালগুলো। এ-কারণে হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের পরিবেশ। দখলদারদের কাছে স্থানীয় সাধারণ লোকজন অসহায়।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top