সকল মেনু

মহিউদ্দিনের ১৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী পালন

mail.google.com  বেলাল উদ্দিন: তৎকালীন ভারতবর্ষের প্রখ্যাত ফুটবলার ফুটবল জগতের চীনের প্রাচীর হাফ মহি ওরফে আলহাজ্জ্ব মহিউদ্দিন আহম্মেদের ১৩ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে দিনাজপুরের পার্বতীপুর হুগলীপাড়া মুহীউস্সুন্নাহ হাফিজিয়া ক্বারিয়ানা লিল্লাহ্ বোডিং ও এতিমখানায় এক ইফতারী ও দোয়া খায়ের আয়োজন করা হয়েছে।
ফুটবল যাদুকর আব্দুস সামাদের ঘনিষ্ট সহচর মহির ছিলেন তার দলের মধ্যমাঠের খেলোয়ার। সেই সময় সামাদের পরপর তার ফুটবলের ক্রীড়া নৈপূণতা দেখে ফুটবল খেলার মাঠে উপদি পেয়েছিলেন চীনের প্রাচীর হিসেবে। ফুটবল যাদুকর সামাদের উক্তি ছিল ”মহিরকে ভেদ করে গোল করা আর চীনের প্রাচীর ভাঙ্গা একই কথা। সে মাঠে থাকলে আমার খেলার চিন্তা থাকতো না।”
মহিউদ্দিন শুধু ফুটবল খেলোয়ার ছিলেন না। একাধারে একজন দানশীল ও সমাজসেবী হিসেবে আজো মানুষের মনে প্রাণে ঠাই করে আছে। তার হাতে গড়া প্রতিষ্ঠানগুলো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। সেই সময় পার্বতীপুরে নতুনবাজারে পোষ্ট অফিসের বসানো জন্য বিহারীদের মতভেদকে উপেক্ষা করে স্থাপন করেছিলেন যা আজো একই স্থানে পোষ্ট দাঁড়িয়ে আছে।
এছাড়া পার্বতীপুর জ্ঞানাঙ্কুর স্কুল, বালিকা বিদ্যালয়, ডিগ্রী কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা এমন কি আজ পার্বতীপুর উপজেলা চত্বর তার অবদান ভুলবার নায়। এই উপজেলার পুকুরটির নামটি ছিল মহিরের পুকুর।
১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের যে অবদান তা মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণার এক মাইল ফলক হিসেবে আজো যারা বেঁচে আসেন তারা বুকে লালন করছেন। তিনি তৎকালিন সময়ে দেশের পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ভারতের পতিরামে গিয়ে ভারত সরকারের অনুমুতি নিয়ে মুক্তিপাগল যুবকদের একত্রিত করে পতিরাম ইউথ ক্যাম্প স্থাপন করে তিনি নিজের তা পরিচালনা করেন। সেখানে ভারত সরকার যুদ্ধের ট্রেনিং দেওয়ার জন্য ক্যাপ্টেন শিরহীকে যোগাদান করান। আজো অনুগত স্বীকার করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই, জামাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর মনসুর উর রহমান, বীরমুক্তিযোদ্ধা জহুরুল ইসলাম প্রমুখ।
মহিউদ্দিন আহম্মেদের আর একটি বড় পরিচয় ছিলো। তিনি বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ এর চেয়ারম্যান ছিলেন। সবচেয়ে বড় কথা তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের একজন বিশ্বস্ত ও স্নেহভাজন ব্যক্তি ছিলেন। তৎসঙ্গে তৎকালীন স্বাধীনতার পূর্বে ও পরে আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রভাবশালী নেতা ছিলেন। তিনি সেই সুবাদে বর্তমান প্রধানমন্ত্রি শেখ হাসিনাকে বিয়ের পিড়িতে বসিয়ে ছিলেন প্রখাত পরমাণু বিজ্ঞানী ডঃ ওয়াজেদ আলী মিয়া’র সঙ্গে।
মহিউদ্দিন আহম্মেদের জীবৎদশায় যেসব সামাজিক কাজের জন্য অবদান রেখে গেছেন তা এমন মানুষ আর আসবেন না।
উক্ত ইফতারীও দোয়া খায়ের অনুষ্ঠানের মধ্যে বক্তারা এসব আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহেনুল ইসলাম। তিনি আলহাজ্জ্ব মহিউদ্দিন আহম্মেদের অনেক অজানা তথ্য জানতে পেরে পুলকিত হন। এবং সেই সাথে তাঁর তৈরী এতিমখানকে সর্বত্তক সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিকবিদ মুরহুমের বড় ছেলে সালেহ আহম্মেদ মঞ্জু, পার্বতীপুর শিক্ষক সমিতির সভাপতি জামাতা অধ্যাপক ফয়েজুর রহমান, রাজনীতিবিদ মোঃ আখতার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক, আনসার ভিডিপি কমান্ডার আব্দুল রাজ্জাক, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও গবেষক মোজাহিদ ইফতেখার হাবিব, ডাঃ আব্দুর রহমান প্রমুখ।
আলহাজ্জ্ব মহিউদ্দিন আহম্মেদ দীর্ঘদিন অসুস্থ অবস্থা বিছানায় শয্যারত অবস্থা থাকার পর ২০০২ সালের ৬ জুলাই নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top