সকল মেনু

অবহেলার কারণে ঐতিহাসিক নয়াবাদ মসজিদ ধ্বংসের পথে

unnamed বেলাল উদ্দিন, দিনাজপুর: প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের উদাসীনতা আর স্থানীয় প্রশাসনের অবহেলার কারণে প্রায় সাড়ে ৩শত বছরের পুরাতন দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলায় অবস্থিত নয়াবাদ মসজিদটি আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে। সংস্কারের অভাবে খুলে পড়ছে মসজিদের করুকার্য, গম্বুজ মিনার, মেহেরাব। মসজিদ প্রাঙ্গণে কোন সীমানা প্রচীর না থাকায় অবাধে প্রবেশ করছে হাঁস, মুরগী ও গরু-ছাগল, নষ্ট হচ্ছে মসজিদের পবিত্রতা। এ নিয়ে নয়াবাদ গ্রামের অধিবাসীরা মসজিদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বিভিন্ন ছুটাছুটি করে ব্যর্থ হয়েছেন।

নয়াবাদ মসজিদ নিমার্ণ হয় সম্রাট দ্বিতীয় শাহ’র আমলে ১৭শত খ্রিষ্টাব্দের মধ্যভাগে। ১২.৭৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৫.৫ মিটার প্রস্থ। মসজিদের সামনে রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা। ৩ গম্বুজ ও ৪ মিনার বিশিষ্ট্য এই মসজিদটি অত্যন্ত সুরম্য দৃষ্টিনন্দন। কিন্তু ঐতিহাসিক এই মসজিদ শুধুমাত্র রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ধ্বংস হতে চলেছে। বৃষ্টি হলে ছাদ চুঁয়ে জল পড়ে, বাতাসে মিনারগুলো দুলতে থাকে মসজিদের গায়ে  পোড়ামাটির ১০৪ টি আয়তাকার ভাস্কর কারুকার্য রয়েছে যা সংস্কারের অভাবে খুলে খুলে পড়ছে। দেয়ালে শ্যাওলা জমে ধারণ করেছে বিবর্ণরূপ। সীমানা প্রাচীর না থাকায় গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগী এখানে অবাদে বিচরণ করছে। মসজিদের সাধারণ সম্পাদক মওলানা আব্দুল মান্নান জানান- মসজিদটি যেকোন সময় ভেঙ্গে যাওয়ার ভয়ে ভিতরে নামাজ আদায় করা যাচ্ছে না। তাই আবহাওয়া খারাপ হলে আমরা বাইরে বারান্দায় নামাজ আদায় করি। এটা যেকোন সময় ভেঙ্গে পড়ে ঘটতে মর্মান্তিক দূর্ঘটনা। তিনি আরও জানান, এই মসজিদটি সরাসরি প্রতœতাত্ত্বিক বিভাগ থেকে নিয়ন্ত্রণ হয়ে থাকে। তাই স্থানীয়ভাবে মেরামত করার কোন সুযোগ নেই।
ইতিহাস থেকে জানা যায় ঢেপা নদীর তীরবর্তী নয়বাদ গ্রামে অবস্থিত এই নয়াবাদ মসজিদে একসময় বিদেশী বণিকরা রাত্রিযাপন ও নামাজ আদায় করতেন। সে সময় পার্শ্ববর্তী নদী দিয়ে বণিকরা যাওয়ার সময় এই মসজিদে বিশ্রাম নিতেন। মসজিদের সভাপতি জানান যে, এই মসজিদটি সরাসরি প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের তত্ত্বাবধানে তাই স্থানীয়ভাবে সংস্কার করার এখতিয়ার নাই। মসজিদটি সংস্কার তার ঐতিহ্য ধরে রাখতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে দিনাজপুরের জনগণ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top