সকল মেনু

বিশ্বব্যাংক ৪ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে দুই প্রকল্পে

WorldBank1435663210   অর্থনৈতিক প্রতিবেদক : আর্থিক খাত জোরদার এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের দুটি আলাদা প্রকল্পে ৪৭৩ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দিচ্ছে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৩ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা।

প্রকল্প দুটি হলো- ফাইনান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্ট (এফএসএসপি) এবং বাংলাদেশ আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি)।

প্রথমটির জন্য অনুমোদিত হয়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। আর দ্বিতীয় প্রকল্পের জন্য ১৭৩ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ১ হাজার ৩৮৪ কোটি টাকা।

এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলনকক্ষে দুটি আলাদা ঋণ চুক্তি সই হয়।

চুক্তিতে সই করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন, বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্রিস্টিন ই কাইমস এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহসান উল্লাহ।

চুক্তি স্বাক্ষর শেষে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর জোহানেস জাট বলেন, ‘আর্থিক খাত জোরদার এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধের এ দুটি প্রকল্প বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে সহায়তা করবে।’

তিনি বলেন, গত কয়েক দশকে দারিদ্র্য হ্রাসে বাংলাদেশ বেশ অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বাধাগুলো দূর করতে পারলে দেশটির উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই ঋণ দেওয়া হয়েছে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন থেকে। ছয় বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ এর মেয়াদ হবে ৩৮ বছর। সার্ভিস চার্জ দিতে হবে শূন্য দশমিক ৭৫ ভাগ। বর্তমানে বিশ্বব্যাংকের ঋণের ওপর কোনো কমিটমেন্ট চার্জ নেই।

অনুষ্ঠানে ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর সাপোর্ট প্রজেক্ট (এফএসএসপি) প্রকল্প বিষয়ে জানানো হয়, প্রস্তাবিত প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দেশের রপ্তানি ও ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের সুবিধা সম্প্রসারণ, আর্থিক খাতের সুপারভিশন ও রেগুলেশন ক্ষমতা আরো শক্তিশালীকরণ, আর্থিক মধ্যস্থতা কার্যক্রমের পদ্ধতিগত মানোন্নয়ন এবং মূলধন সঞ্চয়ন বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে, যা আর্থিক খাত শক্তিশালী করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে।

ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত উৎপাদনশীল ফার্ম, বিশেষ করে মাঝারি আকারের রপ্তানিমুখী ফার্মসমূহ ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধির মাধ্যমে এ প্রকল্প রপ্তানি প্রবৃদ্ধি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ নিম্ন বিনিয়োগজনিত ক্ষতি হ্রাস করবে।

প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে সার্বিকভাবে আর্থিক খাত আরো শক্তিশালী হবে, যা আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করাসহ আর্থিক মধ্যস্থতা কার্যক্রমের উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করবে।

আর্থিক খাতে সহায়তার লক্ষ্য হলো আর্থিক বাজার অবকাঠামো উন্নয়ন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রেগুলেটরি ও ওভারসাইট ক্যাপাসিটির উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে প্রাইভেট ফার্মগুলোকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থ সহায়তা প্রদান।

উপযুক্ত ঋণের ডিজবাজড অ্যামাউন্টের ওপর বিশ্বব্যাংককে বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ প্রদান করতে হবে। এ ঋণের অর্থ ছয় বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩৮ বছরে পরিশোধ করতে হবে।

অপরদিকে বাংলাদেশ আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট (ইউআরপি) ভূমিকম্পের মতো জরুরি আপদ মোকাবিলায় হাতে নেওয়া হয়েছে।

বিশ্বব্যাংক বলছে ভূতাত্ত্বিক গঠনের কারণেই বাংলাদেশ ভূমিকম্পের বড় ধরনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিশ্বের ২০টি ঝুঁকিপূর্ণ শহরের মধ্যে ঢাকা অন্যতম।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশ আরবান রেজিলিয়েন্স শীর্ষক আমব্রেলা প্রকল্পের মাধ্যমে শহর এলাকায় বৃহদাকারের জরুরি অবস্থা মোকাবিলা এবং উদ্ধার কার্যক্রম সফল ও কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য সরকারি সংস্থাগুলোর দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

প্রস্তাবিত এ প্রকল্পের কম্পোনেন্টসমূহ বাস্তবায়নে পৃথক চারটি উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) প্রণয়ন করা হয়েছে। এসব বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করবে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবং পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম বিভাগ। প্রথম পর্যায়ে ঢাকা ও সিলেট শহরে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্পটি আগামী জুলাই মাস থেকে শুরু করে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top