সকল মেনু

চট্টগ্রাম বন্দরে আন্তর্জাতিক মাদক চক্রের হামলার আশঙ্কা

1435602513

নিজস্ব প্রতিবেদক-চট্টগ্রাম, হটনিউজ২৪বিডি.কম ৩০ জুন: তেলের ড্রামে কোকেন আটকের ঘটনায় চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় (কেপিআই) বড় ধরনের নাশকতার আশঙ্কা করছেন শুল্ক গোয়েন্দারা। তাদের ধারণা, কোকেন আটকের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে অথবা আটক করা বহুমূল্যের কোকেন ছাড়িয়ে নিতে আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্র যে কোনো সময় হামলা চালাতে পারে। শক্তিশালী এই চক্রের হামলা প্রতিরোধে এসব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এই পরিপ্রেক্ষিতে বন্দরের জেটিতে নিরাপত্তা জোরদারে সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়। তবে পুলিশ বলেছে, বাংলাদেশের কোনো স্থাপনায় এ মুহূর্তে বহিরাগত শত্রুর হামলার আশঙ্কা নেই। সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য জানান, তেমন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা মোকাবেলায় পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে। শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান গত সোমবার জানান, আন্তর্জাতিক মাদক পাচারকারী চক্র প্রথমবারে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে কোকেন পাচারের চেষ্টা করেছিল। সেই অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়ে যাওয়ায় প্রতিশোধ নেয়ার জন্য চট্টগ্রাম বন্দরসহ যে কোনো স্থাপনায় তারা হামলা করতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই বন্দর এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে কেপিআইসমূহের নিরাপত্তা জোরদার করার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ৬০ কেজি কোকেনের অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। আন্তর্জাতিক বাজারে এর মূল্য কত সে সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা নেই। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী প্রতি কেজি কোকেনের মূল্য ৫০ কোটি টাকা। এই হিসাবে চট্টগ্রাম বন্দরে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার কোকেন আটকের বিষয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। সব নমুনা পরীক্ষা শেষ হলে কোকেনের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে তিনি জানান। চট্টগ্রাম বন্দরে আটক কন্টেইনারে কোকেনের পরিমাণ নির্ধারণ করতে জাতিসংঘের একটি বিশেষজ্ঞ টিম আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বাংলাদেশে আসার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন) মো. জাফর আলম বলেন, বন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর আমাদেরকে মৌখিক অনুরোধ করেছে। বন্দরে সকল পণ্যই নিরাপত্তার মধ্যেই রাখা হয়। তবে কোকেন শনাক্ত হওয়ার পর বন্দরে সিসিটিভিসহ সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এদিকে প্রাইম হ্যাচারির ম্যানেজার মো. গোলাম মোস্তফা সোহেলকে কোকেন উদ্ধারের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আজ মঙ্গলবার একই আদালতে গোলাম মোস্তফার রিমান্ড শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম মো. ফরিদ আলমের আদালত গত সোমবার এ আদেশ দেন। এদিকে, কোকেন উদ্ধারের ঘটনা তদন্তে গতকাল থেকে কাজ শুরু করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের ৪ সদস্যের কমিটি। কমিটিকে আগামী ১০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মঈনুল খান জানান, প্রথম দিনে কমিটি বিভিন্ন  স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে। বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে তথ্য সংগ্রহ করেছে। উল্লেখ্য, গত ৮ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের সিসিটি ইয়ার্ডে সূর্যমুখী তেল ঘোষণা দিয়ে আমদানি করা তরলের একটি কন্টেইনার আটক করা হয়। বলিভিয়া থেকে আমদানি করা এই কন্টেইনারটিতে ১০৭টি ড্রাম ছিল যার প্রতিটির ওজন ১৮৫ কেজি। এসব ড্রামে তরল কোকেন রয়েছে, পুলিশের দেয়া এমন তথ্যের ভিত্তিতে কন্টেইনারটি আটক করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। আটক কন্টেইনার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর প্রাথমিকভাবে সেখানে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও পরবর্তীতে উন্নত পরীক্ষার পর একটি ড্রামে তরল কোকেনের অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হন শুল্ক গোয়েন্দারা।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top