সকল মেনু

আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী

 

jahanara-imam

নিজস্ব প্রতিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২৬ জুন : আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ২১তম মৃত্যুবার্ষিকী । ১৯৯৪ সালের এইদিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে তার ছেলে শফি ইমাম রুমী শহীদ হন। এছাড়া তার স্বামী শরীফ ইমামও মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ইন্তেকাল করেন। তাঁর নেতৃত্বেই তেইশ বছর আগে ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদী-সামপ্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধকরণের দাবিতে নাগরিক আন্দোলন সূচিত হয়েছিল। বহু ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে আজ তা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যকর হওয়া শুরু হয়েছে। তার একাত্তরের দিনলিপি নিয়ে বিখ্যাত গ্রন্থ ‘একাত্তরের দিনগুলি’তে একজন মুক্তিযোদ্ধার মায়ের দৃঢ়তা, ত্যাগ ফুটে উঠেছে। যা তাকে দেশের মানুষের কাছে এক চির সম্মানের আসনে পৌঁছে দেয়। ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামী তাদের দলের আমীর ঘোষণা করলে বাংলাদেশে জনবিক্ষোভের সূত্রপাত হয়। বিক্ষোভের অংশ হিসাবে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয়। তিনি হন এর আহ্বায়ক। পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-বিরোধী প্রতিরোধ মঞ্চ, ১৪টি ছাত্র সংগঠন, প্রধান রাজনৈতিক জোট, শ্রমিক-কৃষক-নারী এবং সাংস্কৃতিক জোটসহ ৭০টি সংগঠনের সমন্বয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি গঠন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন ও একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি। এর আহ্বায়ক নির্বাচিত হন জাহানারা ইমাম। তার নেতৃত্বেই এই কমিটি ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ গণআদালতের মাধ্যমে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গোলাম আযমের ঐতিহাসিক বিচার সম্পাদন করা হয়। ১২ জন বিচারক সমন্বয়ে গঠিত গণআদালতের চেয়ারম্যান শহীদ জননী জাহানারা ইমাম গোলাম আযমের ১০টি অপরাধ মৃত্যুদণ্ডযোগ্য বলে ঘোষণা করেন। তার এই বিচারের পরে দেশব্যাপী এই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। তৎকালীন সরকারের বিরোধিতা জেল-জুলুম সহ্য করে তিনি এই আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। আন্দোলন চলাকালীন তার ক্যান্সার আরো বেড়ে যায়। আমেরিকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। জাহানারা ইমাম ১৯২৯ সালে বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় এক রক্ষণশীল বাঙালি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহন করেন।
একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আয়োজন
শহীদ জননীর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে প্রতিবারের মতোই একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি ‘জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা’, আলোচনা সভা এবং ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় ধানমন্ডির ডব্লিউ ভিএ মিলনায়তনে আয়োজিত জাহানারা ইমাম স্মারক বক্তৃতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন। ‘বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন (১৯৬১-১৯৭১)’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা প্রদান করবেন বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, সঙ্গীতশিল্পী এবং ‘ছায়ানট’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপিকা সন্জীদা খাতুন। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এবছরও বরেণ্য ব্যক্তিত্ব ও সংগঠনকে ‘জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক’ প্রদান করা হবে। এবছর ব্যক্তি হিসেবে অধ্যাপক অজয় রায়কে এবং সংগঠন হিসেবে ‘ছায়ানট’-কে জাহানারা ইমাম স্মৃতিপদক প্রদান করা হবে। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখবেন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির, ‘উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী’র সভাপতি সাংবাদিক কামাল লোহানী, ‘হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনরিটিজ’-এর সভাপতি অধ্যাপক অজয় রায় ও ‘বাংলাদেশ ইতিহাস সম্মিলনী’র সভাপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। এর আগে কমিটির পক্ষ থেকে সকাল সাড়ে ৭টায় মিরপুরে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top