সকল মেনু

আনন্দের জোয়ারে ভাসছে দেশ

নিজস্ব প্র1434919725তিবেদক, হটনিউজ২৪বিডি.কম ২২ জুন : দেশজুড়ে বাঁধভাঙ্গা উল্লাস। ক্লান্তিহীন, ঘুমহীন  ঢাকা যেন এক ভিন্ন নগরী। গোটা শহর মুহূর্তেই পরিণত হল মিছিলের নগরীতে। ভারত-বধের এই আনন্দ-উল্লাসে শামিল হলেন ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ । নগরীর সব আনন্দের স্রোত এসে মিলল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে। আনন্দ মিছিলে মাতলো পুরো ক্যাম্পাস। টিএসসির রাজু ভাস্কর্য ঘিরে জাতীয় পতাকা হাতে বিজয়সূচক ‘ভি’ চিহ্ন প্রদর্শন করলেন অসংখ্য ক্রিকেটপ্রেমী। তাদের মুখে একটাই স্লোগান ‘বাংলাদেশ…বাংলাদেশ… বাংলাদেশ’। ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম সিরিজ জয়ের পর গত রোববার মধ্যরাতের চিত্র এটি।
শুধু রাজধানী নয় এ জয়ের পর সাতক্ষীরাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় আনন্দ মিছিল বের হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। স্মরণীয় এই জয়ে আনন্দের মধ্যমণি হয়ে ছিলেন ‘সাতক্ষীরা এক্সপ্রেস’ খ্যাত ক্রিকেটার সিরিজ জয়ের নায়ক তরুণ মোস্তাফিজুর রহমান। বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র নিয়ে এসব মিছিল থেকে স্লোগান দিয়ে স্বাগত জানানো হয় এই তরুণ-তুর্কিকে। ক্রিকেটপ্রেমীদের মতে, ভারতের বিপক্ষে ইতিহাস গড়া ঐতিহাসিক সিরিজ জয় কখনো ভুলবার নয়। এই জয়ের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে-এটাই তাদের চাওয়া।
ইংল্যান্ডকে হারানোর পর বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠা, এরপর পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ। এবার ভারত-বধে পুরো ঢাকা নগরীতে রাতভর চলে ক্রিকেট-উন্মাদনা। চতুর্থ রমজানের সেহরীর আগমুহূর্তে রাজধানীর সব অলিগলি ক্রিকেট উচ্ছ্বাসে মেতে উঠে। জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই আতশবাজি পুড়িয়ে শুরু হয় উল্লাস। গুলশান, বনানী, উত্তরা, ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, আজিমপুর, পুরান ঢাকা, গুলিস্তান, মতিঝিল, ওয়ারি, যাত্রাবাড়ি, বাংলামটর, কাওরান বাজারসহ নগরীর সব এলাকায় বের হয় আনন্দ মিছিল। মিছিলগুলোর মোহনায় পরিণত হয় হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণকেন্দ্র টিএসসি। মুহূর্তেই তা পরিণত হয় জনসমুদ্রে। রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ ঘিরে ক্রিকেটপ্রেমীদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস যেন পুরো বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। সাব্বির রহমানের ব্যাট থেকে জয়সূচক রান আসার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলের টিভি রুম থেকে দলে দলে মিছিল নিয়ে টিএসসিতে জমায়েত হন ছাত্র-ছাত্রীরা। রাজু ভাস্কর্যের মাথায় উঠে জাতীয় পতাকা তুলে চলে উল্লাস-আনন্দ। রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে মোটরবাইক নিয়ে ছুটে আসেন তরুণ-তরুণীরা। কাওরান বাজারের সার্ক ফোয়ারা ঘিরেও চলে আনন্দ-উচ্ছ্বাস। জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে টিএসসি। সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করার প্রতিযোগিতায় নামেন অনেকেই।
শরীরে টাইগারদের জার্সি জড়িয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএম হল থেকে মিছিল নিয়ে এসেছিলেন শাহীনুর রহমানসহ অসংখ্য শিক্ষার্থী। টিএসসিতে অন্যদের সঙ্গে আনন্দ করছিলেন তিনি। কেমন লাগছে বলতেই ‘ফাটাফাটি’ বলে জয়োচ্ছ্বাস প্রকাশ করলেন তিনি। শাহীনের মতো অসংখ্য শিক্ষার্থী আজ আনন্দে আত্মহারা। ক্রিকেটপ্রেমীরা জানালেন ‘বাংলাদেশ পারে। বাংলাদেশই পারবে। সামনের ম্যাচগুলোতে টাইগাররা এগিয়ে যাবে দৃপ্ত গতিতে।’
বাংলাদেশ যে জিতবে সে ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন নগরীর প্রতিটি ক্রিকেট ভক্ত। এ বিজয়ের মাধ্যমে ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য চ্যাম্পিয়ানস ট্রফিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হওয়ায় আনন্দ-উল্লাসের মাত্রা  যেন আরো বেড়ে যায়। টিভিতে খেলা দেখতে না পারলেও অনেক ক্রিকেট ভক্ত কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনেছেন দলের জয়ের খবর। একই অবস্থা ফুটপাতের ক্রেতা-বিক্রেতাদের। গণমাধ্যম কর্মীরাও অফিসে বসে উপভোগ করেছেন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সিরিজ  জয়। আনন্দ ভাগাভাগি করতে আনন্দ মিছিলও করেছেন তারা। মোস্তাফিজুরের দারুণ পারফরম্যান্সে যারপরনাই খুশি সাতক্ষীরার কালিগঞ্জের বাসিন্দারাও। বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই স্বর্ণ সময়টি উদযাপনে হাসিমাখা ছিল সবার মুখ। আপামর বাংলাদেশিদের এবার স্বপ্ন অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের। এরপর বিশ্বকাপ। টাইগার সমর্থকদের ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ জয়োধ্বনি টিকে থাকুক অনন্তকাল-এ কামনা দেশবাসীর।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top