সকল মেনু

আমরা এখন খাস জমির মালিক হইছি : সানোয়ারা বেগম

নিজস্ব প্রতিবেদক-চাটমোহর (পাবনা), হটনিউজ২৪বিডি.কম ২০ জুন : ‘আমরা এখন খাস জমির মালিক হইছি, আমাগর অভাব দূর হইছে। আগে এক বেলা খাইছি, এখন পেট ভরে খাই। বিলকুড়ালিয়ার খাস জমি সরকার আমাগরে দিছে। কত মাইর খাইছি এই খাস জমির আন্দোলন করব্যার যায়া, আপনেরা সবই জানেন।’ কথাগুলো বললেন চাটমোহর উপজেলার বিলকুড়ালিয়ার খাসজমি আন্দোলনের নেত্রী সানোয়ারা বেগম।
চাটমোহর উপজেলার বহুল আলোচিত খাসজমি আন্দোলনে পুরুষের পাশাপাশি নারীদের ভূমিকা ছিল অগ্রগণ্য। ভূমিগ্রাসীদের কবল থেকে সরকারি জমি উদ্ধার এবং তাতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় পুরুষের সঙ্গে নারীদের আন্দোলন সংগ্রাম ছিল আলোচিত। বিলপাড়ের ১৪টি ভূমিহীন পল্লীর নারীরা ঘর ছেড়ে ফালা, বল্লভ আর লাঠি নিয়ে বেরিয়ে এসেছিল। ভূমিহীনদের দীর্ঘ দু’যুগের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল খাসজমির স্থায়ী বন্দোবস্ত পাওয়া। এই আন্দোলন-সংগ্রামে আর ১০টি নারীর সঙ্গে সামনের কাতারে থেকে সংগ্রাম করেছেন বিলপাড়ের চৌধুরী পাড়ার সানোয়ারা খাতুন।
উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের হরিপুর চৌধুরীপাড়া গ্রামে সানোয়ারা খাতুনের বাড়ি। তার স্বামী মো. সৈয়ব আলী। দুই ছেলে এক মেয়ের জননী। এই চৌধুরী পাড়ায় বিখ্যাত লেখক ও কবি প্রমথ চৌধুরী ও জি এম চৌধুরীদের পৈত্রিক বাড়ি। গ্রামের নাম চৌধুরী পাড়া হলেও সানোয়ারাসহ পাড়ার সকলেই ভূমিহীন। সানোয়ারাদের বাড়ির জায়গা ছাড়া নিজস্ব কোনো চাষাবাদের জমি নেই। অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে।
১৯৯২ সালে ভূমিহীন উন্নয়ন সংস্থা (এলডিও) নামক একটি এনজিও বিলকুড়ালিয়া মাঠে প্রায় ৪৭৩ একর খাস জমি নিয়ে ভূমিহীনদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রাম শুরু করে। সানোয়ারা ও তার স্বামীসহ এলাকার ভূমিহীনরা এলডিও’র  পরিচালনায় সংগঠিত হয়ে খাস জমির জন্য আন্দোলনে যোগ দেয় এবং খাস জমি দখল করে। তারপর থেকে তারা খাস জমি চাষাবাদের ফসলে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। সানোয়ারা তার গ্রামের ভূমিহীন মহিলা সমিতির সভানেত্রী হয়ে ভূমিহীন উন্নয়ন সংস্থা এলডিও’র বিভিন্ন উন্নয়ন ও সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন ও বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে নারী নেতৃত্ব হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন।
সানোয়ারা নারীর ক্ষমতায়নে অগ্রণী দলনেত্রী হিসাবে দলীয় সভা-সমাবেশ, সেমিনার ও র্যালিতে নেতৃত্ব দিয়ে ভাল বক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রায় দেড় হাজার ভূমিহীন মহিলা সদস্য সানোয়ারার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
সানোয়ারা জানান, মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষক আতাউর রহমান রানার নেতৃত্বে খাসজমির আন্দোলন শুরু করি। এরপর অনেক দিন গড়িয়েছে। ভূমিহীন পরিবারের গৃহবধূ হয়েও এখন সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। তিনি এই আন্দোলনে সাংবাদিকসহ সকলের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
হটনিউজ২৪বিডি.কম/এআর

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top