সকল মেনু

বখাটের অত্যাচারে এক কিশোরীর আত্নত্যা

unnamed শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর:  মতলব দণি উপজেলার ৫নং উপাদী উত্তর ইউনিয়নের দণি নওগাঁ গ্রামে বখাটেদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে লিপি আক্তার (১৭) নামে এক স্কুল ছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১২ জুন  দুপুরে। নিহত স্কুল ছাত্রী লিপি আক্তার মতলব দণি উপজেলার নওগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। সে এবার এসএসসি পরীায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
লিপির বাবা ওয়ালী উল্যাহ জানান, সে প্রতিদিন স্কুলে আসা যাওয়ার পথে পার্শ্ববর্তী আঁচলচিলা গ্রামের শাহআলম মিজির ছেলে সাইফুল ইসলাম লিপিকে উত্ত্যক্ত করতো। প্রেম নিবেদনের নামে বিভিন্ন কথাবার্তা বলে বেড়াতো। এ ব্যাপারে লিপি তার বাবা-মার কাছে জানালে গত ২০ মে বিকেলে লিপি স্থানীয় একটি কাপড় সেলানোর দোকানে যাওয়ার পথে তাকে একা পেয়ে সাইফুল এবং তার সহযোগী আবুল বাশারের ছেলে শাহাদাত ও অজ্ঞাত আরেক যুবকসহ লিপিকে জোর করে সিএনজি স্কুটারে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ওইদিন রাতেই লিপির বাবা ওয়ালী উল্যাহ মতলব দণি থানা পুলিশের সহযোগিতায় পার্শ্ববর্তী নায়েরগাঁও গ্রামে সাইফুলের নানার বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করে। ওই সময় সাইফুল পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ সাইফুলের বাবা শাহআলম মিজিকে আটক করলে সে মুচলেকা দিয়ে থানা থেকে বের হয়ে আসে। তিনি আরো জানান, ১২ জুন দুপুরে লিপি পরিবারের লোকজনের কাছে বলেছে ‘সাইফুল অসভ্য ছেলেটা আমাকে অনেক অপমান করেছে। আমি স্কুলে ও বাইরে মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারি না। মানুষ আমাকে নিয়ে নানা মন্তব্য করছে।’ তার কিছুণ পরই তারা বুঝতে পারেন লিপি বিষপান করে মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছে। তারা তাকে প্রথমে মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখান থেকে তাকে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। সরকারি হাসপাতালে আনার পর ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপ বিষয়টি চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে অবহিত করলে থানার এসআই প্রদীপ লাশ থানায় নিয়ে যায়।
নিহতের বাবা মোঃ ওয়ালী উল্যাহ জানান, আমার মেয়ে অপহরণ হওয়ার পর আমি মতলব দণি থানায় মামলা করেছি। মামলা নং-০৭, তারিখ ২১/০৫/২০১৫ খ্রিঃ। থানা পুলিশের সহযোগিতায় আমার মেয়েকে উদ্ধারের পর হতে সে মনমরা হয়ে থাকতো। মেয়ে উদ্ধারের পর থেকে সাইফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা আমাকে মুঠোফোনে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। এ ঘটনার পর থেকে লিপি আক্তার স্কুলে যায়নি। পরে এসএসসি পরীার ফলাফল আনতে স্কুলে গেলে এবং বাজারে বা কোথাও হাটতে গেলে বিভিন্ন লোকজন ও সাইফুলের সহযোগীরা বিভিন্নভাবে লিপিকে অপমান করে। এ ব্যাপারে আমি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে অবহিত করলে তারা বিষয়টি মীমাংসা করে দেবে বলে জানান। মোঃ ওয়ালী উল্যাহ তার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার আত্মীয়-স্বজনদের সাথে আলাপ আলোচনা করে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে।
মতলব দণি থানার এসআই ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তপন চন্দ্র দাস জানান, আমরা বিভিন্ন কৌশলে সাইফুলসহ তার সহযোগীদের আটক করার জন্য চেষ্টা করছি এবং এ চেষ্টা এখনো অব্যাহত আছে।
মতলব দণি থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কবির হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে জানান, লিপি আক্তারের উদ্ধারের পর তার পিতা ওয়ালী উল্যাহ তাকে নিজ জিম্মায় নিয়ে যান। তারপর আর আমাদের সাথে যোগাযোগ করেন নি। লিপি আক্তারকে উদ্ধারের আগে সাইফুলের বাবা শাহআলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। তবে তখনো এ ব্যাপারে কোনো মামলা হয়নি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top