সকল মেনু

কুড়িগ্রামে বন্যা: ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

Kurigram Flood Water Picture-13.06.15(2)ডাঃ জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামে অবিরাম বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে ১৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড শনিবার জানিয়েছে,গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার সামান্য নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে জেলার বিভিন্ন উপজেলার শতাধিক চর ও দ্বীপচর। এসব এলাকার অন্ততঃ ২০ হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়াও এসব এলাকার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। কাঁচা রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। রাস্তা ভেঙ্গে পড়ায় পায়ে হেটে কষ্ট করে যেতে হচ্ছে অনেককে। ইতোমধ্যেই সদর উপজেলার ৩টি, উলিপুর উপজেলার ৪টি, চিলমারীর ৫টি, রাজিবপুরের ৩টি ও রৌমারী উপজেলার ৪টিসহ মোট ১৯টি ইউনিয়নের নিন্মাঞ্চল বন্যা কবলিত হয়ে পড়েছে। উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল করিম জানান,আমার নিজের বাড়িতেও পানি উঠেছে এবং এখানে প্রায় ৩০টির বেশি বাড়িতে পানি উঠেছে।সাহেবের আলগা ইউনিয়নেও কিছু এলাকার নিন্মাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। এদিকে, পানি বাড়ার সাথে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। গত ৪ দিনে জেলার সদর উপজেলার যাত্রাপুরে ও পাঁচগাছিতে নদী ভাঙ্গনে পড়েছে বেশ কিছু পরিবার এবং রৌমারী-রাজিবপুরে বালিয়ামারী বাজারের কসাই খানার এক অংশ নদীতে দেবে গেছে। অপরদিকে, মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ পড়েছে ভাঙ্গনের কবলে। মোহনগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন আনু জানান,কয়েক ঘন্টার মধ্যে তার ইউনিয়ন পরিষদের ভবন নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়ার আশংকা করছেন। তার এলাকার বিভিন্ন চরের অধিকাংশ বাড়িতে পানি উঠেছে। চরের রাস্তা ঘাট পানিতে ডুবে যাওয়ায় নৌকা পথে যাতায়াত করতে হচেছ সকলকে। কোদাল কাটি ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম যোদ্দার জানান,তার এলাকার অধিকাংশ চরের বাড়িগুলো ডুবে গেছে। যে হারে পানি বাড়ছে  তাতে তার ইউনিয়নের পাটের আবাদ নষ্ট হয়ে যাবে। রাজিবপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরে-ই-শাহী  ফুল জানান,তার ইউনিয়নের রাজিবপুর মেম্বর পাড়া এলাকায় নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। তাছাড়া ভারী বর্ষনে অধিকাংশ রাস্তা -ঘাট ধব্বসে যেতে চলেছে। এতে যানবাহন চলাচলের মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।একটি মাদ্রাসা ও প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে ভাঙ্গনের মুখে পতিত হয়েছে। এছাড়াও নদী তীরবর্তী নিন্মাঞ্চলের ফসল পাট,পটল,তিল ও কাউনের আবাদ সমুহ বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলার নিন্মাঞ্চলের প্রায় দেড়শ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহাফুজার রহমান জানান, আমরা আগে থেকে পানির গতি-প্রকৃতির উপর নজর রাখছি। কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের পানি দ্রুত বাড়ছে। এছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৭ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে নুন খাওয়া পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৫ সেন্টিমিটার এবং কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি ১১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ধরলা নদীর পানি সেতু পয়েন্টে অপরিবর্তিত রয়েছে।মারাতœক বন্যা পরিস্থিতির উদ্ভব এখনও হয়নি বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top