সকল মেনু

বড় চ্যালেঞ্জ বাজেটের …

Budget1433127291 অর্থনৈতিক প্রতিবেদক :  রাজনৈতিক অস্থিরতা কাটলেও অনিশ্চয়তা কাটেনি। এছাড়াও নানান কারণে বাড়ছে না বিনিয়োগ। এতে সরকারের জন্য আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে এ বিনিয়োগ বন্ধ্যাত্ব কাটানোই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

তাদের মতে, উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জনে বেসরকারি বিনিয়োগের গুরুত্ব সর্বাধিক হলেও কয়েক বছর ধরেই তা নিম্নমুখী। ব্যাংক ঋণের ‍সুদ হার কমিয়েও টানতে পারছে না বিনিয়োগ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রকল্প বাস্তবায়নে এডিবিতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকা, মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ধীর গতি, গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো সমস্যাসহ নানা কারণেই উদ্যোক্তারা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না। তাই এ পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য আসছে বাজেটে বিনিয়োগ বাড়ানোর ওপরই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, আপাতত রাজনৈতিক অস্থিরতা না থাকলেও অর্থনৈতিক গতিশীলতা আসেনি। বিনিয়োগ ও ব্যবসার ক্ষেত্রে স্থবিরতা রয়েছে। কাগজে কলমে বাংলাদেশ বিনিয়োগ বান্ধব হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আসছে বাজেটে তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটানো।

আগামীতে বিনিয়োগ বাড়ানোই হবে সরকারের মূল চ্যালেঞ্জ বলে মনে করেন আরেক অর্নীতিবিদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতাসহ নানা কারণেই উদ্যোক্তারা আস্থা সঙ্কটে ভুগছেন। এছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অবকাঠামো সমস্যাও রয়েছে। ফলে নতুন বিনিয়োগে আগ্রহ কমছে।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্যমতে, বিনিয়োগবান্ধব বাজেটের ঘোষণা দেওয়ার পরও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ জিডিপির ২১ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে কমে এখন ২১ দশমিক ৩৯ শতাংশ। যদিও সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে গেল তিন বছর ধরেই মোট বিনিয়োগ আটকে আছে জিডিপির ২৮ থেকে ২৯ শতাংশে।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্ববধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা মির্জা আজিজুল ইসলাম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সরকারি বিনিয়োগ বেসরকারি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহায়তা করে। তাই সরকারের এডিবির প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নিতে হবে। এডিবির প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বেসরকারি বিনিয়োগও বৃদ্ধি পাবে।’

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গেল দুই বছরে ঋণের সুদ হার গড়ে সোয়া ১ শতাংশ কমেছে। ২০১৩ সালের মার্চে গড় সুদের হার ছিল ১৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ। এ বছরের মার্চে তা কমে দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক ৯৩ শতাংশ। কিন্তু এরপরও বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন না উদ্যোক্তারা। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি না বাড়ায় বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক লাখ কোটি টাকারও বেশি উদ্বৃত্ত তারল্য জমা পড়েছে।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি হোসেন খালেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিনত হওয়ার জন্য জিডিপিতে বিনিয়োগের অবদান ২৮ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি করে ৩৮ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। ডিসিসিআই প্রাক্কলিত ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশেকে পৃথিবীর ৩০তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত করতে হলে প্রবৃদ্ধি হার ছয় শতাংশ থেকে আট শতাংশে উন্নীত করতে হবে এবং জিডিপিতে বিনিয়োগের অতিরিক্ত অবদান ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি করতে হবে।

বিনিয়োগ বন্ধাত্ব না কাটার কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সিপিডি’র সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য বলেন, ‘এর অন্যতম কারণ মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে এডিবিতে পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকা।’

আর্থিক খাতের সংস্কারে সরকার যে হাতিয়ার থাকে তার ব্যবহার খুবই হতাশাজনক উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) প্রকল্পগুলো কার্যকর করতে না পারাও সরকারের বড় ব্যর্থতা। এছাড়া রাজনৈতিক অনিশ্চয়তাতো আছেই।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top