সকল মেনু

চাঁদপুরে হাজার হাজার একর রেলওয়ের ভূমি দখল

unnamed শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দু’পাশে থাকা এবং রেলস্টেশন সংলগ্ন ভূমি দখলের প্রতিযোগিতা চলছে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় রেলওয়ের এক শ্রেণির অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে দখলের ওই প্রতিযোগিতা চলছে।  বনায়ন ও মাছ চাষের নামে যৎসামান্য ভূমি বা ডোবা এক বছরের জন্য ইজারা এনে তা ভরাট করে রাতারাতি গড়ে তোলা হচ্ছে পাকা ও স্থায়ী স্থাপনা। বিশেষ করে রেলের ডোবা, খাল ও জলাশয়গুলো ভরাট করে যেভাবে স্থাপনা গড়ে তোলা হচ্ছে তা ভয়াবহ। এ অবস্থা চলতে থাকলে বন্যা লাগবে না, শুধু বৃষ্টির পানি জমেই চাঁদপুর শহরে সারা বছর বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে।
চাঁদপুর শহরের ছায়াবাণী সিনেমা হলের পাশ দিয়ে এক সময় সিএসডি গোডাউনে (জেলা খাদ্য গুদামে) রেলওয়ের মালবাহি বগি দিয়ে খাদ্য আনা-নেয়া করা হতো। যা স্বাধীনতার পরও কয়েক বছর চালু ছিল। গত ১৮/১৯ বছর যাবৎ এটি সম্পূর্ণ বন্ধ। কিন্তু এখনও রেল লাইনটি রয়েছে। এ লাইনে মালবাহী ট্রেন না চলায় ভ’মিদস্যুরা  পুরো রেল লাইনকে দখল করে স্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এমনকি বাণিজ্যিকভাবে মার্কেটও নির্মাণ করেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে লিয়াজোঁ করে যৎ সামান্য বনায়নের নামে ইজারা নিয়ে পুরো এলাকাটি জুড়ে স্থাপনা নির্মাণ করে দখলে নিয়েছে। অন্যদিকে চাঁদপুর-লাকসাম রেল লাইনের দুপাশে ৩০ ফুট করে ৬০ ফুট জমি রেলওয়ের অধীনে থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে তার অধিকাংশ বেদখল হয়ে আছে। চাঁদপুরের কিছু সংখ্যক ভূমিদস্যু ভূমি দখল করে তা ভরাট করে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করে চলেছে। কাগজে কলমে সামান্য জমি একসনা  লিজ থাকলেও ক্ষমতার দাপটে এরা তাদের ইচ্ছেমত ভূমি ভরাট করে বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুলে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। আর এর সুবিধাভোগী হচ্ছেন চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের ভূমি কর্মকর্তারা। তারাও রাতারাতি লাখপতি হচ্ছে। এ বিষয়ে তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা এক বিভাগ আরেক বিভাগের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে মোট ১১টি রেলস্টেশনের আশপাশের ভূমি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে দখল করে অসংখ্য স্থাপনা ও মার্কেট নির্মাণ করা হয়েছে। এমনকি শহরের গুরুত্বপূর্ণ কোর্ট স্টেশনের প্লাটফর্ম দখল করে গরু রাখার ঘর পর্যন্ত করা হয়েছে। মৈশাদী রেলস্টেশন লাগোয়া ভূমি দখল করে বহু বাণিজ্যিক দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। যার ফলে রেলস্টেশনটিই এখন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক লাগোয়া রেলওয়ের বিশাল জলাশয়ের বড় অংশই দখল কওে সেখানে স্থায়ী ও পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাসা-বাড়ি তুলে সেগুলো ভাড়া দেয়া হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য স্টেশনগুলোরও একই অবস্থা। এতকিছুর পরও রেলওয়ের কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করছেন। রেলওয়ের লাকসামস্থ কানুনগো আব্দুল হালিম ভূমিদস্যু কর্তৃক অবৈধভাবে রেলওয়ের ভূমি দখলের কথা স্বীকার করে বলেন, আমাদের জনবল সংকটের কারণে আমরা এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। অবৈধ দখলকৃত স্থাপনার সংখ্যা চিহ্নিত করে রেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top