সকল মেনু

পানি পথে মালয়েশিয়া গমনে মনিরামপুরের কয়েক’শ যুবক নিখোঁজ

 unnamed যশোর প্রতিনিধি: যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কয়েকশত যুবক দালাল চক্রের ক্ষপ্পরে পড়ে পানি পথে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় ২৩ মাস যাবত নিখোঁজ রয়েছে। এদের মধ্যে লাশ হয়ে ফিরেছে কয়েক জন। সম্প্রতি থাইল্যান্ডের গভীর জঙ্গলে একের পর এক গণ-কবর হওয়ার খবর শুনে নিখোঁজ যুবকদের পরিবার গুলোতে বিরাজ করছে চরম উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। এদিকে দালাল চক্রর মানব পাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় এ ধরনের অপরাধ প্রবনতা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। দালাল চক্রর মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হলে মানব পাচারকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় একদিকে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি-ধামকি দিচ্ছে অন্যদিকে প্রশাসনের নীরবতাকে জনমনে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। সরেজমিন তথ্যানুসন্ধান কালে জানা গেছে, উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের কপোতাক্ষ নদ বন্যা কবলিত এলাকার সাতটি ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ দরিদ্র। একটি অসাধু দালাল  চক্রের মানব পাচারকারীরা এই দারিদ্রতাকে পুঁজি করে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে মানব পাচার করে চলেছে। এসব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে গত ২৩ মাস ধরে উপজেলার প্রায় কয়েক’শ যুবক মালয়েশিয়ায় যাওয়ার সময় পানি পথে নিখোঁজ হয়ে গেছে। এদের মধ্যে কিছু নারীও রয়েছে।  নিখোঁজদের মধ্যে উপজেলার মশ্বিমনগর গ্রামের আমানউল্লাহ, কামরুল জামান, কামাল হোসেন, সোহেল খান, চাকলা গ্রামের সারাত আলী, হাসানুর রহমান, মলিল্লকপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন, খালিয়া গ্রামের তহিদুল ইসলাম, মোবারকপুর গ্রামের পীর বক্স, তপন, কিসমত চাকলা গ্রামের শাহ আলম, হাসান আলী, ফারুক হোসেন, সুমন হোসেন, শৈলগ্রামের মাসুদুর রহমান, শিমুল হোসেন সহ প্রায় কয়েকশত যুবক এখনো নিখোঁজ রয়েছে। এদের মধ্যে লাশ হয়ে ফিরেছে এনায়েতপুর গ্রামের রুবেল হোসেন, সেলিম হোসেন ও রবিউল ইসলাম, চন্ডিপুর গ্রামের বজলুর রহমানের স্ত্রী সাইফুন নেছা, মাহবুবুর রহমান, রাজগঞ্জ এলাকার আশিকুর রহমান। মশ্বিমনগর গ্রামের নিখোঁজ কামাল হোসেনের তিন সন্তান ও স্ত্রীর আছে।
বৃদ্ধা মায়ের আহাজারী ও বৃদ্ধ পিতার কান্না ওই এলাকার আকাশ বাতাস ভারী হয়ে ওঠেছে। কামালের বৃদ্ধ পিতা মহাতাপ আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় দুই বছর আগে পার্শ্ববর্তী হযরত আলীর ছেলে আশরাফুল ও রবিউল আমার কামালকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাবে বলে নিয়ে গেছে। আজও আমার কামালের কোন খোঁজ পাইনি। শৈলী গ্রামের নিখোঁজ শিমুলের পিতা ছয়রুদ্দীন বলেন, ডুমুরখালী গ্রামের খোরশেদ আলীর ছেলে বাবলু আমার ছেলে সহ আট জনকে আকাশ পথে মালায়েশিয়ায় নিয়ে যাবে বলে চুক্তি করে পানি পথে নিয়ে যায়। তাদের মধ্যে সেলিম নামের একজন মারা গেছে। আজ প্রায় দুই বছর হয়ে গেল  আমার ছেলে শিমুলের কোন সন্ধান পেলাম না। দালাল  বাবলু বলেছে তারা ভাল আছে। এদিকে দালাল চক্রের সদস্য বাবলু জানায়, নিখোঁজ হয়নি, তারা থাইল্যান্ডের এলাকার জেল খানায় ছিল। সম্প্রতি সেখান থেকে তাদেরকে এখন গোলক বর্ডারের একটি শেল্টার রুমে রাখা আছে। মশ্বিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. আব্দুল গফুর বলেন, অত্র ইউনিয়ন থেকে প্রায় অর্ধ-শত যুবক নিখোঁজ রয়েছে। হরিহরনগর ইউপি চেয়ারম্যান উপাধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার বলেন, অত্র এলাকার হতদরিদ্র মানুষ গুলো দালাল চক্রের প্রলোভনে পড়ে পানি পথে মালয়েশিয়ায় যাচ্ছে। এ নিয়ে আমার পরিষদে শালিশ বিচারও হয়েছে। মনিরামপুর থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) মোল্ল্যা খবীর আহমেদ বলেন, এ বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top