সকল মেনু

সৈয়দপুরের ডেঞ্জারম্যান রাশেদ’র মৃত্যুকুপ খেলা

unnamed মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী  ১৪ মে: মৃত্যুকুপে মোটর সাইকেল চালনায় নৈপুন্য প্রদর্শন করে ইতোমধ্যে সকলের দৃষ্টিতে এসছেন এস,এম রাশেদ। শুধু দেশেই নয় ভারত ও নেপালের মানুষদেরও মন জয় করে এসেছেন। দেশে এক সময় সার্কাস ও যাত্রাপালায় বিভিন্ন রকম খেলার প্রদর্শন করা হত। মোটর সাইকেল বা কারের প্রদর্শনী তেমন একটা দেখা যেত না। ইতিমধ্যে বিভিন্ন শহরে এ প্রদর্শনী বেশ জনপ্রিয় ও আলোড়ন সৃষ্টি করেছে মৃত্যুকুপ খেলা। অত্যন্ত রোমাঞ্চকর, শ্বাসরুদ্ধকর এ খেলাটি না দেখলে বুঝার কোন উপায় নেই।
নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের ইসলামবাগ এলাকার গোলাম রব্বানীর পুত্র এস,এম রাশেদ (২৮) তরুন বয়সে এক বিস্ময়কর প্রতিভা নিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ডেঞ্জার গেম বা মৃত্যুকুপ খেলার আয়োজন করে পেয়েছেন বিভিন্ন সম্মাননা ও পুরস্কার। তিনি প্রথমে এ পেশায় আসেন বাবা এবং বড় ভাইয়ের হাত ধরে ২০০৩ সালে। বাবা সরকারি চাকরি করতেন পাশাপাশি মোটরসাইকেল প্রদর্শনী করতেন। বয়সের ভারে বাবা এ কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন কিন্ত তিনি ও তার বড় ভাই সারোয়ার হোসেন নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছেন দুঃসাহসিক এ খেলাটি।
চার ভাই তিন বোন, ভাই বোনের মধ্যর রাশেদ তৃতীয়। সৈয়দপুর রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি ও সৈয়দপুর মহাবিদ্যালয় থেকে পড়া লেখা শেষ করেন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জেলায় এ খেলা প্রদর্শনী করে সকল বয়সের মানুষদের আনন্দ দিয়ে যাচ্ছেন। এ বছর ঢাকা বানিজ্য মেলায় অংশ নিয়ে সব বয়সী মানুষের মন জয় করেন। সহযোগিতা পেলে বিদেশেএ খেলায় অংশ নিয়ে দেশে সুনাম বয়ে আনতে চান তিনি। শুধু এ খেলায় নয় রাশেদের গানের গলাও বেশ মধুর। গান গেয়ে বন্ধুুদের আড্ডাকে মাতিয়ে দেন তিনি। এ ছাড়া তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সমাজ সেবামুলক সংগঠনেরও সদস্য। মানুষের দুঃখ দেখলে নিজের সবকিছু উজাড় করে দিতে চান। এ সব কারনে বন্ধুদের কাছেও তিনি খুব প্রিয় এবং পরিবারের সকলের মধ্যমণি।
দাদা আবদুর রাজ্জাক ১৯৬২ সালে মোটর সাইকেল নিয়ে অনেকটা সখের বসবতী হয়ে ডেঞ্জার গেম নামে এ খেলার প্রদর্শনী শুরু করেন। সে থেকে এ খেলাটি তাদের পারিবারিক পেশায় রুপ নেয়। বাবা গোলাম রব্বানী ১৯৮৬ সালে ময়মনসিংহের উর্বরা প্রদর্শনী মেলায় তৎকাালীন রাষ্ট্রপতি হোসেইন মোহাম্মদ এরশাদের হাতে কৃতিত্বের সম্মাননা পেয়েছেন। তেমনি বড় ভাই সারোয়ার হোসেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১১ বেঙ্গল রেজিমেন্ট এর লে.কর্নেল মিজানুর রহমানের হাত থেকে পুরস্কারসহ পেয়েছেন অনেক পুরস্কার।
রাশেদ বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে আজ পর্যন্ত দাদা থেকে শুরু করে আমরা আমাদের প্রজন্ম পর্যন্ত সর্বমোট তিন পুরুষ এ পেশার হাল ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। যা এ পেশায় কেউ ধরে রাখতে পারেনি। দেশের যেসব জায়গায় প্রদর্শনী করেছি যেখানকার দর্শনার্থীরা আমাদের সুনাম অর্জন করেছে। কিন্ত দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত আমি বা আমার পরিবারের কোন সদস্য  আমাদের সৈয়দপুর শহরের কোন প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের প্রশংসনীয় স্বীকৃতি পায়নি।
গোলাম রব্বানী আক্ষেপ করে বলেন, আমার বাবা, আমি ও আমার সন্তানেরা এ খেলা প্রদর্শন করে দর্শকদের অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছি। মানুষ খেলা দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে। আবার অনেকে খেলা শেষে আমাকে স্পর্শ করে দেখে আমি আসলে মানুষ নাকি ভূত। আমরা খেলা প্রদর্শনকালে অনেকবার দূঘর্টনা আহতও হয়েছি। চিকিৎসা ভার নিজেই নিতে হয়েছে। সরকারি কোন পৃষ্ঠপোষকতা পায়নি। এ ছাড়া এ খেলাটি রাষ্ট্রীয় কোন স্বীকৃতি মেলেনি। অথচ বর্তমানে এ খেলাটি ক্রিকেট, ফুটবলের মত দর্শক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। সরকারি-বেসরকানি প্রতিষ্ঠানের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ খেলার মান এবং সুনাম দুটাই ছড়িয়ে যাবে দেশ-বিদেশে সর্বত্র এমনটিই মনে করেন সচেতনমহল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top