সকল মেনু

সড়ক নির্মানে নিন্মমানের সামগ্রী : ফুসে উঠেছে কেশবপুর পৌরবাসী

    unnamed যশোর প্রতিনিধি: কেশবপুর পৌর সভার মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস আবারও প্রায় ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ৪ টি প্রকল্পের কাজ অন্যের লাইসেন্সে বে-নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য জানতে চেয়ে আবেদন করায় কাউন্সিলর আব্দুল হালিমকে হুমকি দেয়া হয়েছে। উন্নয়ন মূলক কাজের তথ্য জানতে চেয়ে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মেয়র বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করেন ০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল হালিম। আবেদনটি গত ২ মাস ফাইল বন্দি করে রেখে গত সোমবার (১২এপ্রিল ২০১৫) পৌর সভার মাসিক সভায়, এ বিষয়ে সাবিক তথ্য জানতে চাওয়ার অপরাধে মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস, কাউন্সিলর আব্দুল হালিমকে মেরে ফেলার হুমকি দেন বলে কাউন্সিলর সাংবাদিকদের জানান। তিনি বলেন কেশবপুর পৌরসভাটি অর্থ লুটপাটসহ দুর্নীতির অখড়ায় পরিণত করেছে মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস । এদিকে মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস আবারও নিয়ম কানুনের কোন তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে কিছু কাউন্সিলারকে পক্ষে নিয়ে  তিনি পৌর সভার প্রায় ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকার ৪ টি প্রকল্পের কাজ অন্যের লাইসেন্সে বে-নামে হাতিয়ে নিয়েছেন।  সংশ্লিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের আইএফটি প্রকল্পের আওতায় কেশবপুর পৌর সভার অধিন ৬টি প্রকল্প গ্রহন করা হয়। এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। এ লক্ষে গত ৩০/১২/১৪ ইং তারিখে দরপত্র আহবান করে, ২৬/০১/১৫ ইং তারিখে দরপত্র দাখিলের দিন ধার্য করা হয়। ৬টি কাজের বিপরিতে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদাররা প্রায় ৩০/৪০টি দরপত্র কিনলেও মেয়রের কালো থাবার কারণে শেষমেষ ১৮-২০টি দরপত্র দাখিল করা হয়েছে বলে সূত্র জানায়। কার্য়াদেশ পেয়ে ঠিকাদাররা গত ০৮/০৩/১৫ ইং তারিখ থেকে সড়কের নির্মান কাজ শুরু করেন। যা আগামী ৬ মাসের মধ্যে শেষ করার কথা। দরপত্র অনুযায়ী সড়ক নির্মানে ১ ঝুড়ি পিকেট ইটের খোয়ার সাথে ১ ঝুড়ি ভাল মানের বালি দেয়ার কথা থাকলেও সেখানে ১ ঝুড়ি ডাষ্ঠ ইটের পুরানো খোয়ার সাথে ৫/৬ ঝুড়ি মাটি মিশ্রত বালি দিয়ে সড়কের নির্মাণ করা হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড বাসীরা জানান। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে সরফাবাদ রোর্ডের সরফাবাদ থেকে বাজিতপুর পর্যন্ত ৫৩০ মিটার আরসিসি সড়ক নির্মান, আলতাপোল থেকে ফতেপুর মোড় পর্যন্ত ১১০০ মিটার রাস্তা আরসিসি করণ, বায়সা থেকে কেশবপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহ পর্যন্ত ৭৬০ মিটার রাস্তা আরসিসি করণ, বালিয়াডাঙ্গার গৌরিঘোনা রাস্তা থেকে সাইক্লোন সেন্টার পর্যন্ত ২৫০ মিটার এবং ওই সড়কের পশ্চিম পাশে কামরুলের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় ১০০ মিটার রাস্তা আরসিসি করণ, সাবদিয়া মোড় থেকে কেশবপুর ত্রিমোহিনী মোড় পর্যন্ত ৭১০ মিটার রাস্তা আরসিসি ও আলতাপোল অফিস পাড়া থেকে সরকারী কবর ¯হান পর্যন্ত ৫৬০ মিটার রাস্তা আরসিসি করণ ইত্যাদী। পৌর সভার  নির্বাহী প্রকৌশলী আলী হায়দার জানান ৬টি সড়ক নির্মানে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আইনী বাঁধা থাকায় মেয়র ও কাউন্সিলদের নামে  ঠিকাদারী লাইসেন্স করার নিয়ম না থাকায়, মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ্বাস বে-নামে যশোরের শহিদুল ইসলাম কনকষ্ট্রাকশনের  নামে আলতাপোল ও বায়সা সড়ক, কুষ্টিয়ার মুন কনকষ্ট্রাকশনের  নামে বালিয়াডাঙ্গা সড়ক, সাতক্ষীরার এ এম ইনামুল হক এর নামে ভোগতি নরেন্দ্রপুর সড়ক ও শাহীন কনকষ্ট্রাকশনের  নামে, সরফাবাদ থেকে বাজিতপুর সড়কের কাজ তিনি বে-নামে নিজে নিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদাররা জানান। এছাড়া খান শাহিন এন্ড জয় ও আব্দুল আহাদ এন্টার প্রাইজের নামে অপর ২টি সড়কের কাজ দেয়া হয়েছে। ৪টি কাজের মধ্যে ২টি তিনি তার ভাই এবং অপার ২টি কাজ তার কাছের দুই কাউন্সিলরকে দিয়ে করাচ্ছেন বলে ঠিকাদাররা জানান। মেয়রের দুর্নীতি ওপেন সিক্রেট হলেও দেখার কেউ নেই। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের তদন্ত টিম কেশবপুর পৌরসভার কাজের হিসাব নিকাশের অডিট করলেও সংশ্লিষ্ঠ কর্তারা মোটা অংকের বিনিময়ে মেয়রের সকল দুর্নীতি ধামাচাপা দিয়ে চলে যান বলে অপর একটি সূত্র জানায়। মেয়র একই ভাবে, পৌর ভবন, মহাকবি মাইকেল মধুসূদন গেট, হাবাসপোল রাস্তা, ভোগতি সড়ক আলতাপোল সড়কসহ কোটিকোটি টাকার কাজ তিনি বে-নামে হাতিয়ে নিয়ে নিন্মমানের নির্মান সামগ্রী দিয়ে যেনতেন ভাবে কাজ শেষ তার সিংহ ভাগ অর্থই তিনি পকেটস্থ করেছেন। যা তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে। মেয়রের  এসব দুনর্তিীর খবর বিভিন্ন প্রত্রিকায় ফলাও করে প্রকাশিত হলেও অজ্ঞাত কারণে তিনি রয়েছেন ধরা ছোরার বাইরে।  পৌরবাসীরা মেয়রের সকল দুর্নীতির তদন্ত দাবী করেছেন। কাউন্সিলর আব্দুল হালিম জানান, তিনি কেশবপুর পৌর সভায় নিয়োগ বানিজ্যসহ মেয়রের লাগামহীন অনিয়ম ও দুনীর্তির ব্যাপারে হিসাব চেয়ে আবেদন করার কারণে তিনি তাকে হুমকি দিয়েছেন। তিনিও মেয়রের সকল দুর্নীতির তদন্ত দাবী করেছেন। পৌর সভার নির্বাহী প্রকৌশলী আলি হায়দার জানান, ৬টি কাজের বিপরিতে ২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তবে মেয়রের নির্দেশ ছাড়া আর কোন তথ্য সরবরাহ করা যাবেনা বলে তিনি জানান। পৌর সচিব  তফিকুর রহমান বলেন, কাউন্সিলর আব্দুল হালিম বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। মেয়র আব্দুস সামাদ বিশ^াস জানান, কাউন্সিলর আব্দুল হালিম তথ্য জানতে চেয়ে কোন আবেদন করেননি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে উত্থাপীত অভিযোগ গুলি সঠিক নয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top