সকল মেনু

গরমে জমজমাট এসির বাজার চাহিদার শীর্ষে দেশীয় ব্র্যান্ড ওয়ালটন

unnamed  অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: এবার গ্রীস্মে গরম তুলনামূলক বেশি। গরম আরো বাড়বে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা। আর তাই এয়ারকন্ডিশনার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রন যন্ত্র এসির বিক্রি বেড়েছে। এরমধ্যে বেশি বিক্রি হচ্ছে দেশীয় ব্র্যান্ড। বিশেষ করে ওয়ালটন এসির চাহিদা বাজারে সবচেয়ে বেশি। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মার্চের প্রথম থেকেই এসি বিক্রি শুরু হয়েছে। এপ্রিলের শেষের দিকে ব্যাপকহারে বিক্রি বেড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে মে মাসে এই বিক্রি আরো বাড়বে। বিদ্যুত পরিস্থিতির উন্নতি এবং অসহনীয় গরমের কারণে এসি এখন হয়ে উঠেছে প্রয়োজনীয় গৃহসামগ্রী। উল্লেখ্য, গত বছর মে মাসে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। অসহনীয় গরমে ক্রেতারা ছুটেছেন এসি মার্কেটে। ফলে হঠাৎ করেই এসির চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। বাজার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে ওয়ালটন এবছর তাদের উৎপাদন এবং বিক্রির লক্ষমাত্রা দ্বিগুন করেছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে বাড়ানো হয়েছে মজুদ। পূর্ন ক্ষমতায় চলছে উৎপাদন। তিন বছরের নিয়মিত ওয়ারেন্টির সঙ্গে ওয়ালটন এসিতে এবার ছয় মাসের রিপ্লেসমন্টে গ্যারান্টি দেয়া হচ্ছে। এছাড়া রয়েছে দীর্ঘমেয়াদী কিস্তিু সুবিধা। দামে সাশ্রয়ী, টেকসই এবং আন্তর্জতিকমানের হওয়ায় ক্রেতাদের আগ্রহ দেশে তৈরি এসির প্রতি। এ কারণে কমেছে বিদেশী ব্র্যান্ডের আমদানি।
জানা গেছে, একসময় এসি ছিলো পুরোপুরি আমদানিনির্ভর। এখন দেশেই তৈরি হচ্ছে উচ্চমান সম্পন্ন এসি। এমনকি বিভিন্ন দেশে রপ্তানিও হচ্ছে বাংলাদেশে তৈরি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের এসি। আধুনিক প্রযুক্তিতে বাংলাদেশে  তৈরি ওয়ালটন এসিতে ক্রেতারা পাচ্ছেন সঠিক বিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট)।
ওয়ালটন এসিতে যুক্ত হচ্ছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির গোল্ডেন ফিন। পরিবেশবান্ধব এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে এসি হবে টেকসই, ময়লা জমবে না এবং বাতাস হবে তুলনামূলক বেশি ঠান্ডা। শর্তসাপেক্ষে ওয়ালটন এসিতে দিচ্ছে ৬ মাসের রিপ্লেসমেন্ট গ্যারান্টি এবং ৩ বছরের সার্ভিস ওয়ারেন্টি। সম্প্রতি ওয়ালটন বাজারে এনেছে আকর্ষণীয় ডিজাইন ও মডেলের উচ্চমান সম্পন্ন এসি। ট্রিপল এ টেকনোলজিতে তৈরি এসব এসি তুলনামূলক বিদ্যুত সাশ্রয়ী।
ওয়ালটন এসি তৈরি হয় শূন্য দশমিক ৫ মিলিমিটার পুরুত্বের কপার টিউব দিয়ে। এতে ঠান্ডা বেশি হয়, এসি হয় টেকসই। অন্যদিকে সাধারন এসি তৈরি হয় শূণ্য দশমিক ৩ মিলিমিটার পুরু টিউব দিয়ে। যাতে সব সময় কপার টিউব থাকে না। ফলে এসির স্থায়ীত্ব কম হয়। সেইসঙ্গে অন্য এসির ইভাপরেটর ও কন্ডেন্সার লিকেজ হবার সম্ভাবনা থাকে। যে ভয় ওয়ালটন এসিতে নেই। ওয়ালটন এসির ইভাপরেটর ও কন্ডেন্সার টিউব শতভাগ কপারের। বাড়তি সুবিধা হিসেবে আছে ডুয়াল মোড হিটিং ও কুলিং অপশন, ডিজিটাল ডিসপ্লে এবং ডিহিউমিডিকেশন মোড। বাজারে ৩২ হাজার টাকা থেকে ৫৫ হাজার ৭০০ টাকার মধ্যে ওয়ালটনের এসি বিক্রি হচ্ছে। একই সঙ্গে সহজ বিক্রয়োত্তর সেবা নিশ্চিত করতে সার্ভিস সেন্টারের আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
ওয়ালটন এয়াকন্ডিশনার প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে, এসি একটি ইঞ্জিনিয়ারিং প্রডাক্ট। এটি সঠিকভাবে স্থাপন বা ইন্সটলেশন জরুরী। তাদের দাবি- দক্ষ কর্মী দিয়ে সঠিকভাবে ইন্সটলেশন হলে ওয়ালটন এসিই বাজারের সেরা।
সূত্র মতে, বর্তমানে বাংলাদেশে এয়ারকন্ডিশনারের বার্ষিক চাহিদা দেড় লাখের কিছু বেশি। যদিও ওয়ালটন কারখানার উৎপাদন ক্ষমতা বছরে ৩ লাখ। অর্থাৎ চাহিদার প্রায় দ্বিগুন এসি উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে ওয়ালটনের। গত বছরের  তুলনায় এবার বিক্রির টার্গেটও দ্বিগুন।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার বলেন, গত বছর হঠাৎ করেই এসির চাহিদা বেড়েছিল। বিষয়টি মাথায় রেখে এবার ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে। বেড়েছে মজুদের পরিমান। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এ মৌসুমে ওয়ালটন এসিই সবচেয়ে বেশি বিক্রি হবে।
ওয়ালটনের অপারেটিভ ডিরেক্টর উদয় হাকিম জানান, ওয়ালটন এসির প্রধান বৈশিষ্ট এতে সঠিক বিটিইউ থাকে। যা আমদানি করা এসিতে সাধারনত থাকে না। ফলে ক্রেতারা ঠকতে না চাইলে ওয়ালটন এসি কেনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। তিনি বলেন, ওয়ালটন দামে প্রায় ৬০ শতাংশ পর্যন্ত সাশ্রয়ী। ওয়ালটন এসিতে গোল্ডেন ফিন নামে নতুন প্রযুক্তি সংযোজিত হচ্ছে। ব্যবহৃত হচ্ছে উচ্চ গ্রেডের কম্প্রেসার। এখন ওয়ালটন এসি তৈরি হচ্ছে সর্বোচ্চ মানের নিশ্চয়তা নিয়ে।
রাজধানীর গুলিস্তান স্টেডিয়াম মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ওয়ালটন, মার্সেল, সনি র‌্যাংগস, এলজি বাটারফ্লাই, যমুনা ইলেক্ট্রনিক্স ও প্যানাসনিকসহ এসি বিক্রির সকল শোরুমে পর্যাপ্ত এসি রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, এবছর গরম পড়ার আগ থেকেই এসি বিক্রি শুরু হয়েছে। তাদের ধারণা, মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত এসির চাহিদা কয়েকগুণ বাড়বে।
ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বনানী থেকে এসি কিনতে এসেছেন ব্যাংক কর্মকর্তা মোর্শেদুল ইসলাম। তার মতে, দাম এবং মান দুটো বিচার করলে ওয়ালটনই কিছুটা ভালো। স্টডিয়াম মার্কেটে ওয়ালটনের এক্সক্লুসিভ শোরুমের ম্যানেজার অলোক ঘোষ জানান, বিক্রি ভালো হচ্ছে।
অন্যান্য ব্র্যান্ডের এসির বিক্রিও বেড়েছে। সনি র‌্যাংগস শোরুমের ম্যানেজার মাহবুবুল হক প্রিন্স বলেন, গরমের শুরুতেই ক্রেতাদের ভালো সাড়া পাচ্ছি। গরম বাড়লে এসির চাহিদা কয়েকগুন বাড়বে।
এলজি বাটারফ্লাই এর ব্র্যাঞ্চ ম্যানেজার মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রচন্ড গরম পড়েছে। ক্রেতাদের প্রয়োজনও বাড়ছে। সবমিলিয়ে বিক্রি নিয়ে তিনি সন্তুষ্ট। বাজারে এসি সরবরাহে কোনো সঙ্কট তৈরি হবে না বলে জানান তিনি।
এদিকে আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস জানান, গত বছরের তুলনায় এবার গড় তাপমাত্রা আরো বাড়বে। এরইমধ্যে এপ্রিলের গড় তাপমাত্রা রেকর্ড পরিমান বেড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top