সকল মেনু

আপনাকে ফেসবুকের বন্ধুরাই সবচেয়ে বেশি বিষন্ন করে দিতে পারে!

imagesঅাফিফা জামান : আজকাল কী ফেসবুকে অধিকাংশ সময় পার করার পর আপনার বিষন্ন বোধ হয়?তাহলে আপনাকে কিছু বিষয় এখন থেকেই খেয়াল রাখতে হবে। ফেসবুকে আপনি সফল বন্ধুদের সঙ্গে নিজের তুলনা করবেন না এবং সোশ্যাল সাইট শুধুমাত্র পুরোনো আর নতুন বন্ধুদের সঙ্গে বিভিন্ন স্মৃতি এবং খবরাখবর বিনিময়ের জন্যই ব্যবহার করবেন, অন্য ক্ষেত্রে নয়।

হাস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের মতে, ফেসবুকে অধিকাংশ সময় যখন কোনো ব্যবহারকারী নিজের বন্ধুদের সঙ্গে নিজের সামাজিক অবস্থানের তুলনা করে ব্যয় করে তখন বেশিরভাগ ব্যবহারকারী নিজেদের মধ্যে নিজেকে নিয়ে বিষন্নতা অনুভব করে।

‘যে সকল মানুষ মানসিক বিভিন্ন সমস্যায় নিপীড়িত তারা যদি বন্ধুদের সঙ্গে সোশ্যাল কমপ্যারিজন অথবা সামাজিক তুলনা করে অনেকটা সময় নষ্ট করে তবে তা তাদের মানসিকভাবে আরো বিষন্ন ও দুর্বল করে দেয়।’ মতামত সামাজিক মনোবিজ্ঞানী মাই-লাই স্ট্রিটসের।

যারা ইতোমধ্যে সমস্যায় জর্জরিত, বন্ধুদের জীবনের বিভিন্ন উন্নতি তাদের আরো মনমরা করে দিতে পারে এবং এর কারণে ভেতরে ভেতরে আরো একাকিত্ব ভর করে আর সেই থেকেই একটা সময় নিজেদের মধ্যেই একটা যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়।

আরেকটা সমস্যা হলো ফেসবুক আমাদের সবসময় বন্ধুদের সম্পর্কে এমন অনেক তথ্য দেয় যা আমরা এমনিতে হয়তবা নাও জানতে পারি। যা আমাদের আরো বেশি অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করার সুযোগ করে দেয়।

স্ট্রিটস এ ব্যাপারে বলেন, ‘আপনি হয়ত জানেন না যে আপনার বন্ধু কী পোস্ট করতে যাচ্ছে তাই আপনি চাইলেও তুলনা করার এই মানসিকতা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে পারবেন না।’

‘আসলে ফেসবুকে বন্ধুরা সবসময় তাদের জীবনের ভালো দিক এবং ভালো খবরগুলোই পোষ্ট করে থাকে, খারাপ আর বাজে দিকগুলোকে বাদ দিয়ে দেয়। ফলে বন্ধুদের বিষয়গুলো আমাদের ভাবতে বাধ্য করে যে তারা অনেক ভালো আছে বা তার জীবন আমার জীবনের চেয়ে অনেক ভালোভাবে চলছে। এই ধারণা থেকে আরো বিষন্নতা জন্মায়।’

এই বক্তব্যের মাধ্যমে স্ট্রিটস বুঝাতে চেয়েছেন যে, কীভাবে ফেসবুকে সামাজিকভাবে নিজেকে অন্যের সঙ্গে তুলনা করার প্রবণতা একজন মানুষের সাইকোলজির ওপর কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। এবং কীভাবে ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মধ্যে নিজের সঙ্গে অন্যের এরকম তুলনা করার প্রবনতা তাদেরকেই বিষন্ন জীবনের দিকে নিয়ে যায়।

‘এর মানে এই নয় যে, ফেসবুক বিষন্নতা বাড়ায় বরং অতিরিক্ত সময় ফেসবুকে ব্যয় করা আর অন্যের সঙ্গে নিজেকে তুলনা করার ফলে তা মানুষের অনুভুতিকে বিষন্ন করে দিতে থাকে।’, জানান স্ট্রিটস।

তবে এই গবেষণা একটা পরিষ্কার ধারণা দেয় যে আসলে সামাজিক অবস্থান থেকে একজনের সঙ্গে নিজের তুলনা দীর্ঘমেয়াদী একটা ধ্বংসাত্মক মনোভাব সৃষ্টি করে। স্ট্রিটস মনে করেন, তার এই গবেষণা মানুষকে এই ব্যাপারটা
বুঝতে সাহায্য করবে যে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রায়ই বিভিন্ন অনিচ্ছাকৃত ফলাফল ভোগে বাধ্য করতে পারে। সুতরাং নিজেকেই এ ব্যপারে সবচেয়ে বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top