সকল মেনু

কামারুজ্জামানের ফাঁসি যেভাবে কার্যকর করা হয়েছে

kamrujjaman3-540x238ডেস্ক রিপোর্ট :  বহু নাটকীয়তার পর অবশষে আজ শনিবার দিবগত রাত ১০টা ৩০ মিনিটে কার্যকর করা হলো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে জাড়িত থাকার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দায়ের করা মামলায় মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের রায়। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এদিকে ফাঁসি দেয়ার আগে ৮নং কনডেম সেলে গিয়ে কামারুজ্জামানকে গোসল করিয়ে কারাগার জামে মসজিদের পেশ ইমামের মাধ্যমে তওবা পড়িয়ে নেন কারা কর্তৃপক্ষ। এ সময় তার কাছ থেকে তার শেষ কোনো কথা থাকলে তাও প্রশ্ন করে জেনে নেয়া হয়।
ইমাম সাহেব তাকে তওবা পড়ানোর ১০ মিনিট পর কনডেম সেলে জল্লাদরা আসেন। তারা কামারুজ্জামানকে নিয়ে যান ফাঁসির মঞ্চে। আগে থেকেই মঞ্চের পাশে রাখা ছিল মরদেহ বহনের জন্য এম্বুলেন্স। ফাঁসির মঞ্চে নেয়ার পর তার মাথায় পরানো হয় একটি কালো রংয়ের টুপি। এ টুপিটিকে বলা হয় যমটুপি। ফাঁসির মঞ্চে তোলার পর কামারুজ্জামানের ২ হাত পিছন দিকে বাধা হয়। এ সময় ফাঁসির মঞ্চের সামনে উপস্থিত ছিলেন কারা কর্তৃপক্ষ, সিভিল সার্জন ও একজন ম্যাজিস্ট্রেট। ফাঁসির মঞ্চে প্রস্তুত ছিলেন জল্লাদও। মঞ্চে তোলার পর তার ২ পাও বাধা হয়। পরানো হয় ফাঁসির দড়ি।
কারা কর্তৃপক্ষের হাতে ছিল একটি রুমাল। রুমালটি হাত থেকে নিচে ফেলে দেয়ার সাথে সাথেই  জল্লাদ ফাঁসির মঞ্চের লিভারে টান দেন। লিভারটি টান দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফাঁসির মঞ্চের নিচে চলে যান কামারুজ্জামান। এ সময় অন্তত ১০ মিনিট তিনি মাটি থেকে ৪-৫ ফুট শূন্যে ঝুলে থাকেন। এতে মুহূর্তের মধ্যেই তার ঘাড়ের হাড় ভেঙ্গে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে যায়। ফাঁসি কার্যকর করার সময় ফাঁসির মঞ্চে ও কারাগারের ভেতরে ছিলেন আইজি (প্রিজন) সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অতিরিক্ত আইজি (প্রিজন) কর্নেল কবির, ডিআইজি (প্রিজন) গোলাম হায়দার, ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ফরমান আলী, জেলার নেসার আলমসহ অন্য কারা কর্মকর্তারা।
ছিলেন ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন, ঢাকার সিভিল সার্জন আবদুল মালেক মৃধা, কারাগারের চিকিৎসক আহসান হাবিব, ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি এবং ডিএমপি কমিশনারের প্রতিনিধি ডিসি-ডিবি (নর্থ) শেখ নাজমুল আলম। ডিএমপির জয়েন্ট কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) শেখ মারুফ হাসান, ডিসি-ডিবি (সাউথ) কৃষ্ণপদ রায়, র‌্যাবের ইন্টিলিজেন্স প্রধান আবুল কালাম আজাদ এবং ডিবির বোমা ডিসপোজাল ইউনিটের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার সানোয়ার হোসেনও কারাগারে উপস্থি ছিলেন।
এর আগে ইসলাম ধর্মের নিয়ম অনুসারে কামারুজ্জামানকে তওবা পড়ান কেন্দ্রীয় কারাগার জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মনির হোসেন। এর আগেই তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন করেন কারা চিকিৎসক আহসান হাবীব। সিনিয়র জেল সুপার ফরমান আলী রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর করা হবে বলে কামারুজ্জামানকে জানিয়ে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এটাই আপনার শেষ রাত। এখন আপনাকে তওবা পড়তে হবে। মাওলানা মনির হোসেন তাকে বলেন, আপনার কৃতকর্মের জন্য আদালত আপনাকে ফাঁসির রায় দিয়েছেন। আপনি একজন মুসলমান ব্যক্তি। এ কারণে আপনি আল্লাহর এ দুনিয়ায় কৃতকর্মের জন্য তওবা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top