সকল মেনু

চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস লোকসানের আশংকায় হতাশ চিংড়ি চাষীরা

unnamedপাইকগাছা থেকে ফিরে যশোর প্রতিনিধি, আব্দুল ওয়াহাব মুকুল: খুলনার পাইকগাছা ব্যাপক অঞ্চল জুড়ে চিংড়ি ঘেরে দেখা দিয়েছে মারাত্মক ভাইরাসসহ ব্যাপক রোগ-বালাই। মৌসুমের শুরুতেই বাজারজাত করার আগেই অধিকাংশ চিংড়ি ঘেরের চিংড়ি মরে সাবাড় হয়ে যাচ্ছে। অপরদিকে বিগত বছরের চেয়ে অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে চিংড়ির বাজার মূল্য। ফলে চলতি বছর মোটা অংকের টাকা লোকসানের আশংকায় হতাশ হয়ে পড়েছে চিংড়ি চাষীরা। দেশের ‘গোল্ডেন ফিস’ উৎপাদনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলায় ৮০’র দশকে শুরু হয় বাণিজ্যিক ভিত্তিতে লবণ পানির চিংড়ি চাষ। শুরুর দিকে চিংড়ি চাষ অধিক লাভজনক হওয়ায় গোটা উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে এ চাষ ব্যবস্থা। ৯০ দশকের মাঝামাঝিতে দেখা দেয় ভাইরাসসহ নানাবিধ রোগ বালাইয়ের প্রকোপ। নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে চিংড়ি শিল্পকে এগিয়ে নেয় এ শিল্পের  সাথে জড়িত সংশি¬ষ্টরা। রোগবালাই চিংড়ি চাষের প্রধান প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলেও বিগত বছর বাজার মূল্য অধিক পাওয়ায় লাভের মুখ দেখে চিংড়ি চাষীরা । উপজেলা মৎস্য বিভাগের সুত্র মতে বর্তমানে উপজেলায় ১৭.০৭৫ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। ছোট বড় মিলিয়েই ঘেরের সংখ্যা ৩,৯৪৯ টি। চলতি মাছ ধরা মৌসুমের শুরুতেই অধিকাংশ চিংড়ি ঘেরে ভাইরাস সহ বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। অপরদিকে বিগত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কমে নেমে এসেছে চিংড়ির বাজার মূল্য। আবার চড়ামূল্যে হারির (জমি লিজের) টাকা দিয়ে এবং রেনু-পোনা ছাড়ার মৌসুমের শুরুতেই চাহিদা বেশি থাকায় পোনা হ্যাচারী মালিকরা পোনার দাম বাড়িয়ে দেয়। ফলে সব মিলিয়ে উৎপাদন খরচ যায় বেড়ে। এ অবস্থায় ঘের করতে গিয়ে বিপাকে রয়েছেন ঘের মালিকরা।
ঘের ব্যবসায়ী দাউদ শরীফ জানান, গত বছর যে চিংড়ির কেজি ৮’শ থেকে ১ হাজার টাকা মূল্য ছিল। সেখানে এ বছর বিক্রি হচ্ছে ৩শ টাকা দরে। চিংড়ির এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে ভবিষ্যতে চিংড়ি চাষ ছেড়ে দিতে বাধ্য হতে হবে ঘের মালিকরা।
জলবায়ু পরিবর্তন, তাপমাত্রা উঠা-নামা, দুর্বল নার্সারী ও ঘের ব্যবস্থাপনা এবং চাষাবাদে ভাইরাসমুক্ত পোনা ব্যবহার না করা ও উন্নত পদ্ধতি অনুসরণ না করায় চিংড়ির রোগ-বালাইয়ের অন্যতম কারণ বলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা এসএমএ রাসেল জানান। জাতীয় স্বর্ণপদক প্রাপ্ত চিংড়ি চাষী আলহাজ্ব ফসিয়ার রহমান জানান, বাংলাদেশের রপ্তানী আয়ের অন্যতম খাত হচ্ছে হিমায়িত চিংড়ি। যা রপ্তানী করে সরকার প্রচুর পুরমান বৈদিশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে। কিন্তু চলতি বছর রোগ-বালাইয়ের প্রকোপ বৃদ্ধি, চিংড়ির বিক্রয় মূল্য কম ও ভাইরাসমুক্ত পোনা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা না থাকায় হুমকির মুখে পড়েছে চিংড়ি শিল্প। এ শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে সরকারের মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সংশি¬ষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপজেলার চিংড়ি চাষীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top