সকল মেনু

দিনাজপুর’র কান্তজিউ মন্দির বাংলাদেশের একটি অমূল্য সম্পদ

unnamedবেলাল উদ্দিন দিনাজপুর:  পোড়া মাটি চিত্রফলক আর ভাস্কর কারুকার্য মন্ডিত ঐতিহাসিক নিদর্শন কান্তজিউ মন্দির দিনাজপুর সদর থেকে ২০ কিঃমিঃ উত্তরে দিনাজপুর-তেঁতুলিয়া মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বে অবস্থিত। ট্যারাকোটা অলংকরণে বৈচিত্র ইন্দো-পার্সিয়ান কারু শিল্পে মহিমান্মিত ঐতিহাসিক রসদে সমৃদ্ধ বিস্ময়কর এই কান্তজিউ মন্দির বাংলাদেশের একটি মহামূল্যবান প্রাচীন সম্পদ। ইটের তৈরী পোড়ামাটি ফলকের উপর এমন সুন্দর কারু কার্য বাংলাদেশেই শুধু নয় উপমহাদেশের আর একটিও রয়েছে কিনা সন্দেহ।

মন্দিরের গায়ে পোড়ামাটি ফলকের  উপর অঙ্কিত রয়েছে রামায়ণ ও মহাভারতের প্রায় সবকটি কাহিনী। আরো রয়েছে সম্রাট আকবরের জীবদ্দশার কিছু কাহিনীসহ শ্রীকৃষ্ণের বিভিন্ন চিত্র। ঐতিহাসিক বুকানন হ্যামিল্টনের মতে এটি অবিভক্ত বাংলার সবচেয়ে সুন্দরতম মন্দির। প্রায় ১ মিটার উঁচু এবং ১৮ মিটার বাহু বিশিষ্ট্য একটি বর্গাকার বেদীর উপরে নির্মিত এই মন্দির। এর পাথরগুলি মন্দিরের জন্য আনা হয়েছিল প্রাচীন বানগড় কোটিবর্ষ বা দেবকোট নগরের ভেঙ্গে যাওয়া মন্দিরগুলো থেকে। বর্গাকার নির্মিত মন্দিরের প্রত্যেকটি বাহুর দৈর্ঘ্য ১৬ মিটার। চারিদিকে প্রতিটি বারান্দা রয়েছে দুটি করে স্তম্ভ যা বিরাট আকারের ও ইটের তৈরী। আর রয়েছে ৩ টি খোলা দরজা, এর মধ্যে রয়ে ছোট ছোট কামরা। তিনতলা বিশিষ্ট্য এই মন্দিরের সর্বমোট ৯ টি চূড়া ছিল, ১৯৯৭ খ্র্স্টিাব্দে একমারত্মক ভূমিকম্পের ফলে চূড়াগুলি ভেঙ্গে যায়। মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৭০ ফুট।

মন্দিরের শিলালিপি থেকে জানা যায়-দিনাজপুরের জমিদার মহারাজা প্রাণনাথ রায় তাঁর শেষ জীবনে এই মন্দির নির্মাণ কাজ শুরু করেছিলেন। ১৭২২ খ্রিস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হলে মহারাজার দত্তক পূত্র রামনাথ রায় ১৭৫২ খ্রিস্টাব্দে এই মন্দিরের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করেন। কান্তজিউ বা শ্রীকৃষ্ণের বিগ্রহ বা মূর্তি। এই মন্দিরে ৯ মাস অবস্থান করার শেষে এখানে রাসপূণিমা মেলা বসে, যা প্রায় পক্ষকাল ধরে চলে। এ মেলায় দেশ বিদেশ থেকে আগত বহুপূণ্যার্থী ও পর্যটকদের সমাগম ঘটে। এখানে একটি সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top