সকল মেনু

চাঁদপুর পৌরসভাকে দেনা মুক্ত করলেন মেয়র নাছিরউদ্দিন

  শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: ১১৮ বছরের চাঁদপুর পৌরসভা এখন সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হবার স্বপ্ন দেখছে। নয় বর্গ কিলোমিটার থেকে এখন এটি ২২ বর্গ কিলোমিটারের পৌরসভা। আশেপাশের আরো কিছু এলাকা নিয়ে এটি সিটি কর্পোরেশন করার প্রস্তাবনায় আছে। আর হবেই তো, যে পৌরসভার বার্ষিক রাজস্ব আয় সাড়ে তিন কোটি টাকা থেকে বেড়ে বর্তমানে ২৩ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে, যে পৌরসভাকে ২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকার দেনা পরিশোধ করে বর্তমানে দেনামুক্ত আতœনির্ভরশীল পৌরসভায় পরিণত করা হয়েছে সেটি তো সিটি কর্পোরেশন হওয়ার স্বপ্ন দেখতেই পারে। এমন কিছু গুরুগম্ভীর অভিমত ব্যক্ত করলেন চাঁদপুর পৌরসভার সচেতন কিছু নাগরিক। আর তাদের সোজা-সাপটা বক্তব্য হচ্ছে- বর্তমানে চাঁদপুর পৌরসভায় যে উন্নয়নের কাজ চলছে এর ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে হলে বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদের বিকল্প নেই। তাঁকেই আবার এই চেয়ারে বসতে হবে। এটি ঐতিহ্যবাহী চাঁদপুর পৌরসভার স্বার্থে, পৌরবাসীর স্বার্থে।আগামী ২৯ মার্চ রোববার চাঁদপুর পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদ এবং সাবেক পৌর চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ভূঁইয়া। নির্বাচনে মেয়র পদে প্রার্থী মাত্র দু’জন হওয়ায় এবং দু’জনই হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় লড়াই হবে জমজমাট। এই দুই প্রার্থী নিয়ে ইতোমধ্যে ভোটাররা বিচার বিশ্লেষণ শুরু করে দিয়েছে। আর তাঁদের নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ করতে ভোটারদের তেমন চিন্তা করতে হচ্ছে না। কারণ, দুজনের সেবাই পৌরবাসী দেখেছেন, দুজনই অভিভাবকত্ব করেছেন। সুতরাং কে কেমন তা ভোটারদেরকে বুঝাতে হবে না। কার আমলে এ পৌরসভার অবস্থান কী ছিলো তা পৌরবাসী জানে। গত ক’দিন পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ড ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার তথা চাকুরিজীবী (সরকারি-বেসরকারি), ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী, দিনমজুর, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবী, হিন্দু-মুসলিম, যুবক, বৃদ্ধসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রতিনিধি নারী-পুরুষের সাথে কথা হয় এই নির্বাচনের মেয়র প্রার্থী নিয়ে। তাদের অধিকাংশজনই অনেকটা দল নিরপেক্ষ। তাদের অভিমত হচ্ছে : এই নির্বাচনটি হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে দলীয় বিষয়টি মুখ্য কোনো বিষয় নয়। আমাদের প্রয়োজন উন্নয়ন। যাকে দিয়ে আমাদের এলাকার উন্নয়ন হবে, আমাদের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাবে, পৌর নাগরিকরা সহজেই তার প্রাপ্য সেবাটুকু পাবে তাকেই আমরা নির্বাচিত করবো। তারা আরো স্পষ্ট করে বলেন, পৌর নাগরিকদের চাহিদা হচ্ছে : পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা, রাতের বেলায় রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টে বাতি থাকা, জলাবদ্ধতা না থাকা, মশার উপদ্রব না থাকা; পাশাপাশি পানির বিল, পৌর কর, জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স এসব কিছু ঝামেলাহীনভাবে পরিশোধ করা। আর এ গুলোই আমরা বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদের আমলে সঠিকভাবে পাচ্ছি। এর সাথে রয়েছে রাস্তা-ঘাটের উন্নয়ন। এ ক্ষেত্রে তারা বঙ্গবন্ধু সড়কের কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। এ সড়কটি শহরবাসীর জন্য আশীর্বাদ বলে তারা মন্তব্য করেন।
ওই সচেতন নাগরিকরা আরো উল্লেখ করেন, মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদ শুধু নাগরিকদের ন্যায্য প্রাপ্য সেবার মধ্যে তাঁর কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ রাখেন নি, তিনি নানা জনহিতকর কাজেও নিজেকে এবং বর্তমান পৌর পরিষদকে সম্পৃক্ত রেখেছেন। যেমন তিনি ‘হার্ট অব দ্যা টাউন’ খ্যাত শহরের শপথ চত্বর মোড় সংলগ্ন রেলগেটকে প্রশস্ত করে যানবাহন ও মানুষজনের চলাচলের পথকে সুগম করে দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তিনি সম্পূর্ণ পৌরসভার অর্থায়নে একটি ‘পুলিশ বক্স’ করে দিয়েছেন। যেটির ভেতরে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ১৫/২০ জনের মতো সদস্য অনায়াসে বসতে পারেন। এর ভেতরে আধুনিক মানের বাথরুমসহ বিদ্যুৎ ও ফ্যানের ব্যবস্থাও রয়েছে। যার প্রয়োজনীয়তা দীর্ঘদিন যাবৎ শহরবাসী অনুভব করেছিলো। আর এই গুরুত্বপূর্ণ কাজটি করলেন মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদ। এছাড়া পুরাণবাজারসহ বর্ধিত এলাকায় রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। পুরাণবাজার লোহারপুলটি দীর্ঘদিন অপরিকল্পিত অবস্থায় ছিলো। যার কারণে জনসাধারণকে অনেক ভোগান্তি ও কষ্ট পোহাতে হতো। সেই লোহারপুল ব্রিজটিকে ভেঙ্গে এটিকে অনেক নিচু করে জনগণ ও যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে নতুন করে আধুনিক মানের রাস্তাসহ করা হয়েছে। দাতাগোষ্ঠীর অর্থায়নে বর্তমান মেয়রের আমলেই এটি হয়েছে। চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন পৌর কবরস্থানকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। পৌরসভার জলাবদ্ধতা সমস্যার অধিকাংশই দূর হয়েছে। সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। পুরো পৌর এলাকাকে স্যানিটেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে। এভাবে উন্নয়নের আরো অনেক ফিরিস্তি বলা যাবে। এসব উন্নয়ন বিবেচনায় এবং এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে আমরা মেয়র হিসেবে নাছির উদ্দিন আহম্মদকেই পেতে চাই।
চাঁদপুর পৌরসভা সূত্রে জানা গেলে, বর্তমান মেয়র নাছির উদ্দিন আহম্মদের সময় পৌর এলাকায় প্রায় ২শ’ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড হয়েছে। নয় বছর আগে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় পৌরসভার বার্ষিক রাজস্ব আয় ছিলো সাড়ে ৩ কোটি টাকা, আর বর্তমানে রাজস্ব আয় ২৩ কোটি টাকা। বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিলো ১৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা, টেলিফোন বিল ১০ লাখ ৭১ হাজার টাকা, পৌরসভার অবসরপ্রাপ্ত ও কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রাচুয়িটি বাবদ পাওনা ছিলো ৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, ঠিাকাদারদের বিল বাবদ বকেয়া ছিলো সাড়ে ৩ কোটি টাকা, বিএমডিএফ-এর ঋণ ছিলো ৯৬ লাখ ৫৮ হাজার টাকাসহ সর্বমোট ২৭ কোটি ৬২ লাখ টাকা দেনায় ছিলো চাঁদপুর পৌরসভা। এই দেনার ভার মাথায় নিয়ে নাছির উদ্দিন আহম্মদ দায়িত্ব নিয়ে সকল দেনা পরিশোধ করায় এখন এটি দেনামুক্ত পৌরসভা। বর্তমান চলমান উন্নয়ন কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : পৌরবাসীর শতভাগ পানির চাহিদা পূরণে ‘৩৭ জেলা শহরে পানি সরবরাহ প্রকল্প’-এর মাধ্যমে ৩৫০ ঘন মিটার/ঘণ্টায় উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ২টি ভূপৃষ্ঠস্থ পানি শোধনাগার (যার ১টি চাঁদপুর-ফরিদগঞ্জ সেতুর পশ্চিম পাশে এবং আরেকটি পুরাণবাজার)। এ ছাড়া ওভারহেড পানির ট্যাংক নির্মাণাধীন রয়েছে। মেয়র প্রার্থীকে ভোট প্রদানে এসব সমাপ্ত এবং চলমান উন্নয়ন কর্মকান্ড মাথায় রাখছে পৌরবাসী

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top