সকল মেনু

শ্রেষ্ঠ নবী

ডাঃ জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
বিশ^ সৃষ্টির শুরুতে আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা দেন“আউয়ালু মা খালাকাল্লাহু নুরী
প্রথম নূরে মোহাম্মাদী সৃষ্টি করিয়া উহাকে দুইভাগে বিভক্ত করিয়া ফেলেন।
প্রথম ভাগে নূরে জাতিহী
দ্বিতীয় ভাগে নূরে ছেফাতিহী
এই ছেফাতেহী নূরের একাংশ হইতে বিশ্ব জগতে যাহা কিছু আছে যেমনঃ সূর্য, গ্রহ, নক্ষত্র,বন,উপবন, সাগর,নদী, আরশ, কুরশি, বেহেস্ত, দোযখ, লৌহকলম, মানব-মানবী সহ সকল জীব-জানোয়ার কীট-পতঙ্গ অনু পরমানু সৃষ্টি করিয়াছেন।
আমাদের প্রাণপ্রিয়নবী আকায়ে নাম দার তাজেদারে মদিনা হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কোন নির্দিষ্ট দেশ,গোত্র ও জাতির জন্য নবী বা রাসূল হিসাবে আভির্ভূত হন নাই। তিনি সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ট নবী এবং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন সকল সৃষ্টির মাঝে সর্বোত্তম রহমাতাল্লিল আলামিন উপাধিতে ভূষিত করেন। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, আল্লাহর নবী বলেন যে, সকল সৃষ্টির মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হইলাম আমি।এতে আমার গর্বের কিছু নাই। (তিরমিজি)। আল্লাহর নবী বলেন যে,আল্লাহ পাক সর্বপ্রথম আমার নূর সৃষ্টি করিয়াছেন। হযরত জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে,এক ব্যক্তি আরজ করিল,ইয়া রাসূল্লাহ কবে আপনি নবী মনোনীত হয়েছেন? প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন আদম (আঃ) জম্মের চৌদ্দ হাজার বছর পূর্বে আল্লাহর দরবারে নূর আকারে ছিলাম। এই মর্মে আল্লাহ পাকের ঘোষণা“হে রাসূল আপনি বলে দিন হে মানব জাতি আমি তোমাদের সকলের প্রতি আল্লাহর রাসুল হিসাবে প্রেরিত হইয়াছি।” (সূরাঃ আরাফ)
রিক বেদের প্রথম স্লোকে বলা হইয়াছে যে, “অথঃতেষাং ভবিষ্যতি মনাংসি বিষদানি নৈ বাসুদেনাঙ্গ রাগাতি পূণ্যগন্ধা নিলস্প্রেসামু। অনুবাদঃ আর মানব সভ্যতার শেষ সময়ে পাপে ভরা ভঙুর সমাজে একজন মহানুভব দেবের আবির্ভাব ঘটিবে যাহার সুগন্ধ বাহির হইয়া সমাজের চতুর্দিক আলোকিত করিবে। তিনি হইলেন শেষ অবতার যাহার পদাঞ্ক অনুসরনে পূর্ণ মুক্তি নিহিত রয়েছে।
পারা ১৪ সূরায়ে “নহল” নহল অর্থ মৌমাছি। আয়াত ৬৮,৬৯ কুল্লিচ্ছামারাতি ফাছলুকি ছুবুলা রাব্বিকি জুলুমা । অনুবাদঃ সকল ফুল ফল হইতে কিছু আহার সংগ্রহ কর এবং উদর হইতে বাহির হয় এক প্রকার রির্যাস (মধু) লা আ ইয়াতা ল্লিক্কাউ মিউ  (ব্যধী নিবারক) হজরত সোলায়মান (আঃ) একদিন মৌমাছির একটা দলকে থামাইয়া দিল। কারণ আল্লাহ হজরত সোলায়মান (আঃ) কে একটা মোজেজা দান করিয়াছেন যে, বিশ্ব সৃষ্টি কুল জীব জানোয়ার গাছ লতাপাতা কিটপতঙ্গ আকাশ বাতাস চন্দ্র সূর্য তারকারাজি সকলের জবান বা কথা বুঝিতে পারত এবং সকলের সরদারি করত। তাই জিজ্ঞাসা করিল,
হে মৌমাছি কোথা যাও নাছী নাছী
মোহাম্মদ (সঃ) নাম গুঞ্জন শুনিতেছি
হে মৌমাছি কোথা যাও নাছী নাছী
মৌমাছি উত্তর দেয়
ফুল ফুটিয়াছে কাননে
যাই মধু আহরনে
সুধালেন মধুর বচনে
কিভাবে মৌচাকে মধু মওজুদ
করিয়াছ রাশী রাশী
হে মৌমাছি কোথা যাও নাছী নাছী
মোহাম্মদ (সঃ) নাম যত জপি
তত মধুর লাগে
এ নামেতে এত মধু
কে জানিত আগে
কোরাআন মজিদে মধুর গুনগুণ সম্পর্কে পূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়াছে।
পিতা আদম (আঃ) তিন শত বৎসর সত্য সাধনার পর পিতা আদম আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে প্রার্থনা করিলেন হে আল্লাহ আপনার নামের সাথে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পবিত্র নামের উছিলায় আমাকে ক্ষমা বা মাফ করিয়া দিন। আল্লাহ তায়ালঅ এরশাদ করেন, “ আমি  তাহাকে সৃষ্টি করি নাই তাহার পরিচয় তুমি কিভাবে জানিলে।” উত্তরে পিতা আদম (আঃ) বলেন, হে আল্লাহ যখন আমাকে রুহু দান করিয়াছেন তখন আমি দেখিয়াছি আরশ মহল্লায় আপনার নামের সঙ্গে মুহাম্মদ (সাঃ) পবিত্র নাম লিখা রহিয়াছে। তাহলে এভাবে তুমি আমার বন্ধুর পরিচয় পাইয়াছ। তাই আমি আল্লাহ ঐ পবিত্র মুহাম্মদ (সাঃ) নামের মহব্বতে তোমাকে মাফ করিয়া দিলাম।
কোন কোন সাহিত্যিক লিখিয়াছেন যে, আল্লাহ তাহার আরশ মহল্লায় নূরে মোহাম্মাদীকে ফুল  অথবা মৈয়ূর আকারে সঙ্গে রাখিয়াছেন। তাহারা বলেনঃ
আমি ফুল আমি  ফুল
বেহেস্তের ফোটা ফুল
দিগন্ত মুখরিত সৌরভে মম
তাই বুঝি আজ পৃথিবী হল আকুল
আমি ফুল আমি  ফুল
বেহেস্তের ফোটা ফুল
মৌমাছি এসে গুঞ্জন রবে
মধু নিয়া যায় অনুকুল
বোলতারা এসে মন বুকে বসে
বৃথা কেন হানে হুল।
আমি ফুল আমি  ফুল
বেহেস্তের ফোটা ফুল
এ ফুলের গন্ধে মানব নন্দে
টুটে যাবে লক্ষ মানুষের ভূল
আমি ফুল আমি  ফুল
বেহেস্তের ফোটা ফুল
আছে যার নছিবে মিলাবে মিলিবে
সে ফুল নিতে করো নাকো ভুল
আমি ফুল আমি  ফুল
বেহেস্তের ফোটা ফুল।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের শেষ দিকে যখন শিশু সন্তান হত্যাজজ্ঞ চলিতেছে, পৃথিবী মানব শুন্য প্রায় আল্লাহ তায়ালার পরিকল্পনা ছিল এই পৃথিবীতে মানুষ বাস করিবে কিন্তু জালেমের জুলুমে মানুষ নিষ্পেশিত। তাই আল্লাহর একজন অলী তাঁর কাছে দোয়া করিলেন “হে আল্লাহ জালেমের জুলুমে মানব আত্মা নিষ্পেশিত তাই অন্যায় অত্যাচার অবিচার জালেমের জুলুম হইতে মানব সন্তানকে বাঁচান। সকল মানুষের কল্যাণ দান করুন।আমিন।”
আল্লাহ এই অলীর দোয়া কবুল করিলেন। তাই আল্লাহর কৌশলের অভাব নাই।
ঐ রক্ষিত মহাম্মদী নূর নামক ফুলটাকে আরবের লোহিত সাগরে নিক্ষেপ করিলেন। আর এই ফুলের সুগন্ধে পৃথিবী মাতোয়ারা হইয়া উটিল। তথাকথিত স¤্রাট আবু জাহেল এই সুগন্ধিতে পাগল হইয়া সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, স্থলবাহিনীকে আদেশ করিল ৫দিনের মধ্যে ফুল এনে দিতে হবে। কিন্তু তাহারা অনেক চেষ্ঠা করিয়া ব্যার্থ হইল। তখন আবু জেহেল এই ফুল এনে দিলে ১০০স্বর্ণ মুদ্রা পুরস্কার ঘোষণা করিলেন। দেশের বীর যোদ্ধা  সেনাপতি, উজির, নাজির, সৈন্য সামন্ত, সাধারন মানুষ এই ফুলের তালাসে সমুদ্রের দুই পার মানুষ দিয়া পরিপূর্ণ কিন্তু লোহিত সাগরে সাদা ধপধপে ফুটা ফুল এক ঢেউ দিয়ে ভাসে আরেক ঢেউ দিয়ে ডুবে যায়, যার কাছে যায় ধরতে চায় কিন্তু ধরতে পারেনা ডুবে যায়। আল্লাহর কৌশল কে জানে।পিতা আব্দুল্লাহ এই সাধারন মানুষের সাথে সাগরের তীরে যায়।এই ফুল ধরলে ১০০স্বর্ণ মুদ্রা পুরস্কার পাওয়ার আশায় সমুদ্রের দুই পাশে অসম্ভব মানুষের ভীড়।পিতা আব্দুল্লাহ চেষ্ঠা করিবার পর ফুল তার হাতে ধরা পড়ল।কিন্তু পিতা আব্দুল্লাহ মনে মনে ভাবিলেন যে,ফুল আমার হাতে দেখিলেই সেনাবাহিনীর লোকেরা আমার কাছ হইতে জোর করিয়া ফুল ছিনাইয়া লইবে। কাজেই ঐ ফুল পিতা আব্দুল্লাহ মুখে দিয়া খাইয়া ফেলিলেন। ফুলের সুগন্ধি বন্ধ হইয়া গেল কিন্তু আব্দুল্লাহর চেহারা এত সুন্দর হইল যে নূরের তাজাল্লীতে পরিপূর্ণ হইয়া গেল। ঐতিহাসিকগণ বলেন, যে নারী পিতা আব্দুল্লাহকে দেখিয়াছে সে নারী পাগল হইয়া পরিয়াছে। ঐ সময় বড় বড় রাজন্যবর্গ মহারাজা, রাজা, মন্ত্রী,উজির, নাজিরগণ পিতা আব্দুল্লাহকে কন্যা দানের প্রস্তাব দিয়াছেন। উপহার হিসাবে জমিদারী, রাজ্য সম্রাজ্য, বাড়ি,গাড়ি,মনি, মুক্তাসহ যাহা চায় পিতা আব্দুল্লাহ তাই পাবে।পরে এই অবস্থায় পৌছিল যে, পিতা আব্দুল্লাহ এই বিবাহে রাজি না হইলে তাহাকে হত্যা করিয়া ফেলিবে।পিতা আব্দুল্লাহ যথা তথা ভ্রমণ ও বাড়ি হইতে বাহির হওয়া নিরাপদ মনে করিলেন না। তাই তিনি অত্যান্ত গরীব ওহাব জহুরীর কন্যা মা আমিনার সহিত শুভ বিবাহ সম্পাদন করিয়া বাসর ঘর যাপন করিবার পর, নূরে মুহাম্মদী মা আমিনার গর্ভে চলিয়া গেল। পিতা আব্দুল্লাহ সাধারণ মানুষ হইয়া প্রাণে বাঁচিয়া গেলেন। আল্লাহর রহমতের কাছে মানুষের কোন কৌশল কাজে আসে না। আল্লাহ তায়ালা বিশ্ব বাসীর মুক্তি ও কল্যাণের জন্য নূরে মুহাম্মদীকে মাতৃগর্ভে ১০ মাস ১০ দিন পূর্ণতা প্রাপÍ করে দুনিয়ায় পাঠাবেন। রহমাতুল্লিল আল- আমিনের মুজেজায় বিশ্ব ভান্ডার রহমত দ্বারা পরিপূর্ণ করাইবেন। ইহা আল্লাহর পরিকল্পনা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top