সকল মেনু

সৈয়দপুরের ফসলী জমিতে ইটভাটা গড়ে উঠায় পরিবেশ ও ফসল আবাদে মারাত্মক প্রভাব

মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী প্রতিনিধি : Bric Field.j1নীলফামারীর সৈয়দপুরে আইন অমান্য ফসলী জমিতে একের পর এক ইটভাটা গড়ে উঠছে। এতে করে প্রাকৃতিক পরিবেশের ক্ষতিসহ ফসল আবাদে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। এছাড়া মাটি কাটার ফলে উর্বর জমি ডোবা খালে পরিণত হচ্ছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের ফসলী জমিতে ও গ্রামের অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয়েছে প্রায় ৩০টির মতো ইটভাটা। এরমধ্যে উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ফসলী জমিতেই স্থাপন করা হয়েছে ২২টির উপরে ইটভাটা। এসব এলাকায় সারাবছর ধান, গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, সিম, পেঁয়াজ, মরিচ, ফুলকপি, বাঁধাকপি, মুলা, পুইশাক, লালশাক, ধনেপাতাসহ বিভিন্ন তরিতরকারীর চাষ করা হতো। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হতো। কিন্ত বর্তমানে এসব এলাকায় কৃষি চাষাবাদের পরিবর্তে উর্বর মাটি পুড়িয়ে তৈরি হচ্ছে ইট।
নির্মল বাতাসের পরিবর্তে ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় এলাকায় কাংখিত ফসল হচ্ছে না। আম, কাঁঠাল ও অন্যান্য ফসলে মারাত্মকভাবে প্রভাব ফেলাসহ প্রাকৃতিক ও মানব পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। অন্যদিকে এসব জমির মালিকদের টাকার লোভ ও ভয় দেখিয়ে ফসলের চেয়ে জমির মাটি বিক্রি করতে উৎসাহী করা হচ্ছে। তাই কৃষক টাকার লোভে ও দালালদের খপ্পড়ে পড়ে কৃষি উর্বর জমির মাটি ইটভাটাগুলোতে বিক্রি করছে। এতে করে কৃষি উর্বর জমিগুলো একের পর এক ডোবা-নালা ও গর্তে পরিণত হচ্ছে। ফলে সামান্য সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আকবর আলী, তোফাজ্জল হোসেন, ছাবেদুল ইসলাম, অতুল চন্দ্র সরকার জানান, এলাকায় ইটভাটা হওয়ার পর থেকে তাদের জমিগুলোতে ফসল ও ফলন ভাল হয়না। ফসলে বিভিন্ন ধরণের রোগবালাই দেখা দেয়। আম ও কাঁঠাল খুব একটা মুকুল আসছে না। ফসলের দানাও পুষ্ট হচ্ছে না। এতে করে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান।
কৃষি উর্বর ফসলী জমিতে কোনোক্রমেই ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়া ও অন্যান্য অনুমোদন না নিয়ে কোনোভাবেই ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। শুধু তাই নয়, যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ইটভাটায় আগুন দিতে হবে। অথচ দেশে এত সুন্দর আইন থাকা সত্বেও কিভাবে নীলফামারীর সৈয়দপুরের গ্রামের অভ্যন্তরে ও কৃষি উর্বর ফসলী জমিতে বিপুল পরিমাণ ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে সেটাই এখন অভিজ্ঞ মহলসহ সাধারণ জনগণের প্রশ্ন। দেশের স্বার্থ বিবেচনা করে অবিলম্বে ইটভাটাগুলো উচ্ছেদ করা প্রয়োজন বলে দাবি এলাকাবাসীর।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top