সকল মেনু

সেই ফারাবী ১০ দিনের রিমান্ডে

 নিজস্ব প্রতিবেদক,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: লেখক অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি শাফিউর রহমান ফারাবীকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দিয়েছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম রেজাউল করিম এই আদেশ দেন। এরআগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক ফজলুর রহমান আসামি ফারাবীকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। কিন্তু এসময় আসামি ফারাবীর পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবীকে দেখা যায়নি। এ কারনে তার জামিনেরও আবেদন ছিল না। পরে শুনানী শেষে হাকিম ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ার অনুমতি দেন। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়েছে, আসামী ফারাবী একজন ধর্মান্ধ, কট্টরপন্থী কুশংস্কারে বিশ্বাসী ও উগ্রপন্থী জঙ্গি সংগঠনের বাংলাদেশের নেতা। সে ফেসবুকে ফেক আইডির মাধ্যমে জঙ্গী সংগঠনের সদস্যদের মধ্যে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গকে হত্যা ও গুরুত্বর জখম করার নির্দেশনা প্রদান করিয়া থাকেন। এছাড়া আসমী ফারাবী বিভিন্ন মুক্তমনা প্রগতিশিল ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছিল। ব্লগে লেখালেখির জন্য বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়কেও হত্যার হুমকি দিয়েছে। তার ফেসবুকে তা পাওয়া গেছে। এছাড়া দুবৃত্তরা অভিজিতকে নির্মমভাবে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে যা বিশ্বে দেশের ভাবমর্যাদা চরমভাবে ক্ষতি করেছে। তাই এই হত্যাকান্ডে সঙ্গে অংশগ্রহণ করা সকল সদস্যদের  সনাক্ত করা ও যাহাদের ইন্দনে এবং অর্থায়নে ঘটনাটি ঘটেছে মামলার সুষ্ঠ তদন্তের স্বার্থে এই আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে ১০ দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। রিমান্ড শুনানীতে ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী কমিশনার মিরাশ উদ্দিন আদালতকে বলেন, উগ্রপন্থি সংগঠনের নেতা হত্যা মামলার আসামি জামিনে মুক্তি পেলে সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে চাপ সৃষ্টি করতে পারে, তদন্তে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এবং আবারও নৃশংস হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে। এ কারনে গোয়েন্দা পুলিশ ফারাবীকে নিয়ে তার ‘সমমনা উগ্র ব্লগারদের’ ধরতে অভিযানে যেতে চায়। এছাড়া ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি শাহবাগ আন্দোলনের কর্মী ব্লগার আহমেদ রাজীব হায়দারের জানাজা পড়ানোয় ইমামকে হত্যার হুমকি দিয়েও ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন আসমি ফারাবী। তাই আসমি ফারাবীকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। রাষ্ট্র পক্ষের আইনজীবী তাপস কুমার পাল সাংবাদিকের জানায়, ফেসবুকের মাধ্যমে অভিজিতের সঙ্গে আসামি ফারাবীর পরিচয় হয়। প্রথম দিকে অভিজিতের সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো ছিল। ভিন্ন মতাদর্শের কারণে পরবর্তীতে অভিজিতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হয় তার। তবে অভিজিতের ব্লগের লেখাগুলো তিনি নিয়মিত পড়তেন। অভিজিৎ খুন হওয়ার পর পর ফারাবী তার ফেসবুক ও ব্লগে বিভিন্ন কমেন্ট ও ছবি শেয়ারও করেছে। এসব থেকে ধারণা করা হচ্ছে হত্যাকান্ডে সে জড়িত থাকতে পারে। এছাড়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার কাছে ফারাবী জানিয়েছে, জানিয়েমোন্নান রাহি নামে আরেক ব্লগারকে তিনি বলেছিলেন অভিজিতকে এখন হত্যা করা সম্ভব হবে না। সে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরলে তাকে হত্যা করা যেতে পারে। এরআগে তিন-চার বছর ধরে ফারাবী ব্লগার হিসেবে ইসলামী চিন্ত-চেতনা নিয়ে লেখালেখি করে জনপ্রিয়তা পান। নিজের মতাদর্শের বিপরীতে কথিত নাস্তিক ব্লগারদের বিভিন্ন ব্লগে বিরোধিতা করতে থাকেন তিনি। এ নিয়ে তার সঙ্গে রাজীব হায়দার (থাবা বাবা), আসিফ মহিউদ্দিন, অভিজিৎ রায়, তসলিমা নাসরিন, দাড়ি-পাল্লা ধমাধম, দিগম্বর-পয়গম্বর, সানতুনু মহাপাত্র, অগ্নিবীনা, মশিউর রহমান (আল্লামা শয়তান), সানতুনু আদিম, প্যানগ্যান দেবতা ও হিন্দু যোদ্ধা নামক ব্লগারদের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি হয়। এ কারনে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে বইমেলা থেকে ফেরার পথে বিশ্ববিদ্যালয়ের মিলন চত্বরের উল্টো পাশে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ফুটপাতে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা করতে পারে আসামি ফারাবী। এছাড়া হামলাকারীর চাপাতির আঘাতে তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যার একটি আঙুল বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হত্যাকান্ডের পরদিন শাহবাগ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন অভিজিতের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top