সকল মেনু

শিবিরের মাধ্যমে সংগঠিত হচ্ছে জঙ্গি সদস্যরা

shibir-jongiনিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের হালিশহরে জঙ্গি দলের গোপন আস্তানাটি গড়ে তোলা হয়েছিলো শিবিরের সাবেক সাথী আজিজুল হকের তত্ত্বাবধানেই। এ আস্তানা থেকেই ৩০টি বোমা এবং বিপুল পরিমাণ বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করা হয়েছে তার ছোট ভাই শিবির কর্মী ফয়জুল হক ওরফে ফয়েজ এবং ছোট বোন ইসলামী ছাত্রী সংস্থার কর্মী রহিমা আক্তারকে। আর র‌্যাবের দায়ের করা সন্ত্রাস বিরোধী মামলায় আসামি করা হয়েছে ভাই-বোন তিনজনকেই। শিবিরের মাধ্যমে জঙ্গি সদস্যরা সংগঠিত হচ্ছে বলে অনেকটা নিশ্চিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ কর্মকর্তারা।

মূলত চট্টগ্রামে বোমা তৈরি কিংবা জঙ্গি আস্তানা গড়ার কাজে শিবির জড়িয়ে পড়েছে এ ধারণা প্রথম সৃষ্টি হয় ২০১৩ সালের ৭ অক্টোবর লালখান বাজার মাদ্রাসায় ভয়াবহ গ্রেনেড বিস্ফোরণের পর। এসময় হেফাজতের এ মাদ্রাসায় গ্রেনেড তৈরি করতে গিয়ে বাকি দু’জনের সাথে নিহত হয় শিবির কর্মী বোমা বিশেষজ্ঞ নুরন্নবী। মারা যাওয়ার কারণে নুরন্নবীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা না গেলেও এবার হাতেনাতে প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।

শনিবার সকালে নগরীর হালিশহর এলাকায় বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকসহ গ্রেফতারকৃত ৪ জনই শিবিরের কর্মী। এর মধ্যে দু’জন আবার ভাই-বোন। এদের বড় ভাই শিবিরের সাবেক সাথী আজিজুল হকই এ জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছিলো। কিন্তু গত ৭ জানুয়ারি নাশকতা সৃষ্টির অভিযোগে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে দায়িত্ব বুঝে নেয় ছোট ভাই ফয়জুল এবং বোন রহিমা আকতার।

হালিশহর থানার অফিসার ইনচার্জ শাহজাহান কবীর ভূইয়া বলেন, ‘ছয়জনকে আসামি করে মামলা এজাহার দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ফয়জুল হক, রহিমা জান্নাত এই দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা আপন ভাই-বোন। এছাড়া, আরও দুইজন আছে জাহিদুল্লাহ এবং আব্দুল হাই এবং পলাতক দেখানো হয়েছে দুইজনকে তাদের একজনের নাম হলো পারভেজ।’

সিএমপি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) আবদুর রউফ বলেন, ‘গত জানুয়ারির ৭ তারিখে লালদিঘি এলাকা থেকে আজিজুল হককে আমরা গ্রেফতার করি। গত ৫ জানুয়ারি যে সমাবেশ হয়েছিল ওই সমাবেশে যে বিস্ফোরক চার্জ করা হয়েছিল মূলত তার সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার কারণেই আমরা তাকে উক্ত মামলায় গ্রেফতার দেখাই।’

এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় হালিশহর থানায় শিবিরের ৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়েরের পর এ ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশ। আর প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা অনেকটা নিশ্চিত শিবিরের তত্ত্বাবধানেই চলছিল এ জঙ্গি তৎপরতা।

সিএমপি’র পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল বলেন, ‘শিবিরের ওই সমস্ত লোকদেরই যে এই যন্ত্রপাতি এই সমস্ত বোমা বানানোর মশলাগুলো তাদের কাছে যে পাওয়া গেল এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেল।’

সিএমপি’র সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার (কোতোয়ালী জোন) আবদুর রউফ বলেন, ‘পুলিশের কাছে তথ্যমতে সে শিবিরের সাবেক সাথী ছিল এবং বর্তমানে সে জামায়াতের সাথে সংশ্লিষ্ট আছে।’

এদিকে, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনে নাশকতা সৃষ্টির জন্য শিবির এবং জঙ্গি সদস্যরা নানা ধরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সিএমপি কমিশনারের।

তিনি বলেন, ‘যেসমস্ত বোমা, গোলাবারুদ ব্যবহার করা দরকার। তারা এখন সে সমস্তগুলো জড়ো করছে এবং সেগুলো দিয়ে তারা তৎপরতা অব্যাহত রাখছে।’

ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছে, বিদেশী অর্থায়নেই এ জঙ্গি আস্তানা গড়ে তোলার পাশাপাশি বোমা তৈরির কাজ চলছিলো। আর জঙ্গি তৎপরতার সাথে সম্পৃক্ত শিবিরের বাকি নেতা-কর্মীদের আইনের আওতায় আনতে গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top