সকল মেনু

রাজনৈতিক অস্থিরতায় সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালে বন্ধের পথে

Filaria Hopitalমো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী  : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরে অবস্থিত ফাইলেরিয়া হাসপাতালে টানা অবরোধ ও হরতালের কারণে দুর-দুরান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসতে পারছেন না। ফলে রাজনৈতিক অস্থিতার কবলে পড়ে এটি বন্ধের পথে। এতে করে হাসপাতালের সামগ্রিক ব্যয় মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে। আয় থেকে ব্যয় মেটানো অসম্ভব হয়ে পড়ায় দেখা দিয়েছে ওষুধের চরম সংকট। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে হাসপাতাল কর্মীদের বেতন-ভাতাও। এ অবস্থায় লন্ডন প্রবাসী ডা. আব্দুল কাদেরের দেয়া অনুদানের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে গেল মাসে সামান্য কিছু ওষুধ কিনে রোগীদের মাঝে সরকবরাহ করা হয়।
এই জনপদের গোদ বা ফাইলেরিয়া রোগীদের কথা চিন্তা করে শহরের উপকন্ঠে কামারপুকুর ইউনিয়নের ধলাগাছে ১০ বেডের এই হাসপাতালটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা করা হয়। হাসাপতালটি চালু থেকে রোগিদের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হত ওষুধ। চিকিৎসাসেবা দিতেন সরকারি চিকিৎসক ও নার্সরা। হাসপাতালে কর্মরত ব্যক্তিদের বেতন- ভাতা পরিশোধ করতে সরকার থেকে দেয়া হত আর্থিক অনুদানও। কিন্ত ২০১১ সালে হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. মোয়াজ্জেম হোসেন আকর্ষিকভাবে হাসপাতালটি ছেড়ে সাভারে অনুরুপ একটি হাসপাতাল সাভারে প্রতিষ্ঠা করেন। এ অবস্থায় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে হাসপাতালের হাল ধরেন এবং গঠন করেন পরিচালনা পরিষদ। এতে হাসপাতালের দুর্নীতি বন্ধ হলেও সরকারি পক্ষ থেকে বন্ধ হয়ে যায় সকল সুযোগ- সুবিধা। হাসপাপাতালের আয় বলতে রোগি ভর্তি ফি, বেড ভাড়া, অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া অন্যতম। এসব খাত থেকে প্রতিমাসে আয় হয় ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। অথচ হাসপাতালের ১৮ জন কর্মকতা- কর্মচারির বেতন ও ওষুধ কেনা বাবদ প্রতিমাসে ব্যয় হয় ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ টাকা।
প্রথমে এই হাসপাতালটি ভালভাবে চললেও বর্তমানে নানা সমস্যায় জড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ সময়ে আন্ত:বিভাগে প্রতিদিনই রোগী আসতো। আউটডোরের প্রচুর রোগী আসতেন চিকিৎসা নিতে। আর এই দুই খাতের আয় দিয়েই বেতন-ভাতা দেয়া হয় হাসপাতালের ২ জন চিকিৎসকসহ ১৮ জন কর্মরত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের। কেনা হতো প্রয়োজনীয় ওষুধ। বর্তমানে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে হাসপাতালের আয়ের খাত বন্ধ হয়ে গেছে। কর্তৃপক্ষ হাসপাতালটিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সটি ভাড়ায় খাটাচ্ছেন। আয়ের সর্বক্ষেত্রে ধ্বস নামায় আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে হাসপাতালটি। ফলে প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা- কর্মচারীদের গেল বছরের ডিসেম্বর ও চলতি বছরের জানুয়ারি এবং ফেব্র“য়ারি মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সুরত আলী বাবু সংকটজনক পরিস্থিতির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কর্মকর্তা- কর্মচারীদের বেতন ভাতা দেয়া সম্ভব হয়নি এবং ওষুধ সংকটে পড়েছে হাসপাতালটি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top