সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরার চাঞ্চল্যকর জগদীশ গোস্বামী হত্যা মামলার তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত করা হয়েছে। সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা পুলিশের চুড়ান্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদির নারাজি আবেদন শুনানী শেষে রোববার এ আদেশ দেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, বিরোধ নিষ্পত্তির নাম করে গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার গোপনীনাথপুৃরের জগদীশ গোস্বামীকে বাড়ি থেকে ডেকে আনে একই গ্রামের শুকপদ গাইন, দূঃখীরাম গাইন, ছাতিয়ানতলা গ্রামের রবিউল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম ও গোবিন্দকাটি গ্রামের রানা। গত ২৬ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে তার উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়ে ছয়ঘরিয়া সীমান্তের ৯নং পিলারের কাছে মৃত ভেবে ফেলে রেখে যায়। পরদিন দুপুর দু’টোর দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। থানা মামলা না নেওয়ায় ১৩ অক্টোবর মঞ্জু গোস্বামী বাদি হয়ে শুকপদ গাইন, দূঃখীরাম গাই, জামায়াতের সক্রিয় সদস্য রবিউল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, ও রানার নামে সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করে আসামীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। পুলিশ ২২ অক্টোবর মামলা (জিআর- ৭৭৯/১৪ সদর) রেকর্ড করে। আদালতের আদেশ সংক্রান্ত মামলা নথি থানায় পাঠানোর আগেই বাদি পক্ষের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও মুখ্য বিচারক হাকিম আদালতের পেশকার আব্দুস সালাম আদেশ ও নথি কাটা ছেঁড়া করে কালীগঞ্জ থানার নলতা গ্রামের এশার আলী ও টাউ দাসের নাম মামলায় সম্পৃক্ত করেন। এ ঘটনায় পেশকার আব্দুস সালামকে নেজারত শাখায় প্রত্যাহার করা হয়। অভিযোগ করায় গত ২৬ নভেম্বর জ্যেষ্ট বিচারিক হাকিম মোরশেদুল আলম বাদিসহ চার জনের জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপরও সালাম পেশকার গত ১১ ডিসেম্বর থেকে স্বপদে বহাল হয়ে চাকরি করে যাচ্ছেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ গত ২৮ ডিসেম্বর সকল আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
ঘটনার বিবরনে আরো জানা যায়, মামলার বাদি ও সাক্ষীদের জবানবন্দি না নিয়ে আসামীদের দারা প্রভাবিত হয়ে আদালতে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিলের বিরুদ্ধে মামলার বাদি মঞ্জু গোস্বামী ৩০ ডিসেম্বর আদালতে পাঁচজন আসামীর বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন। রোববার ধার্য দিনে নারাজির আবেদনের শুনানী শেষে মুখ্য বিচারিক হাকিম নিতাই চন্দ্র সাহা মামলার তদন্তভার সিআইডিতে ন্যস্ত করেন।
সিআইডি’র খুলনা বিভাগীয় পুলিশ সুপার সামছুল আলম জানান, আদালতের নির্দেশের কপি হাতে পাওয়ার পর আসামীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার বাদি মঞ্জু গোস্বামী জানান, যারা আদালতে বিচারকের আদেশ কেটে পরিবর্তন করেছে সেই আইনজীবী অ্যাড. আজাহারুল ইসলাম ও মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের পেশকার আব্দুস সালাম কিভাবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে এটা তাদের বোধগম্য হয়নি। একইভাবে ২০০ টাকা ফিস জমা দিয়ে এ সংক্রন্ত অভিযোগ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি/সম্পাদকের কাছে করার পরও তারা অদ্যবধি কোন ব্যবস্থা না নেওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।