সকল মেনু

‘বিএনপি-জামায়াত গ্রেনেড মারারও পরিকল্পনা করছে’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনানিজস্ব প্রতিবেদক : বিদেশীদের সমর্থন না পেয়ে সহিংসতাকারীরা পেট্রোল বোমার পরিবর্তে এখন গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনা করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার সকালে সচিবালয়ের আইন মন্ত্রণালয় পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।

এসময় তিনি বিচারের দীর্ঘসূত্রিতা ও আইনের ফাঁক দিয়ে যাতে সন্ত্রাসীরা বেরিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের সতর্ক থাকার নির্দেশ দেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘মানুষ যাতে দ্রুত বিচার পায় সেজন্য নতুনভাবে আমাদেরকে ভাবতে হবে। আইনের পদ্ধতি কিভাবে আরও সহজ করা যায় সেটা ভাবতে হবে। রাজনৈতিক আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষকে হত্যা করার সংস্কৃতি বাংলাদেশে কখনোই ছিল না। অপরাধীরা যেন আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে যেতে না পারে সে বিষয়টার দিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘এরইমধ্যে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সংশ্লিষ্ট সকলে, আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তারা খুঁজে খুঁজে বের করছে, ধরছে। ধরার ফলে নাশকতার হাত থেকে বাংলাদেশ বাঁচতে পারছে। কিন্তু যারা এসব করছে তাদের বিচারটা দ্রুত হওয়া দরকার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও দ্রুত শাস্তি হওয়া দরকার। যাতে আর যেন কেউ এভাবে করতে না পারে।’

হরতাল-অবরোধের নামে আগুন-বোমায় মানুষ পুড়িয়ে হত্যাকারীদের একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সঙ্গেও তুলনা করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “আমি তো মনে করি, ১৯৭১ সালে যারা আমাদের নারী-শিশুদের হত্যা করেছে, নারীদের ওপর অত্যাচার করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে, ঘরবাড়ি পুড়িয়েছে; এখন যারা এই ধরনের অপরাধ সংঘটিত করছে, পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারছে-এদের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। এরা একই লোক- একই ধরনের, একই মানসিকতা নিয়ে তারা করছে। কাজেই এদেরও বিচার হতে হবে।”

যুদ্ধাপরাধের বিচার ঠেকাতে জামায়াতের তাণ্ডব এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি-জামায়াত জোটের সহিংস আন্দোলনের পরেও ‘দক্ষতার’ সঙ্গে রাষ্ট্র পরিচালনার কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

নাশকতা ঘটিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্ববাসীর কাছে ‘হেয়’ করা হচ্ছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অর্জন কী করছে সেটা আমি জানি না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের মান, সন্মান, মর্যাদা যে ক্ষুণ্ন হচ্ছে এবং বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যে নষ্ট করছে এবং বাংলাদেশকে যে আজকে একটা প্রশ্নের সম্মুখীন নিয়ে আসা; এটা কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট খুব ভালভাবে করে দিয়েছে।”

‘পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা’ করে বিএনপি-জামায়াত জোট দেশি-বিদেশি সমর্থন হারাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “এটা করে তাদের কী অর্জন হবে? তারা শুধু তারিখ দিয়ে যাচ্ছে যে, এই তারিখের মধ্যে সরকার ফেলে দেবে। এখন দেশি-বিদেশি কারো সমর্থন পাচ্ছে না। এতোদিন পরের মুখাপেক্ষী ছিল। ভাবছিল যে, অনেক কিছু হয়ে যাবে তাদের পক্ষে।

“কিন্তু যারা পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ মারে তাদের পক্ষে কেউ থাকে না। এটা বোধহয় এখন দেখতে পেয়ে আরো বেশি করে কীভাবে মানুষ হত্যা করা যায় সেজন্য পেট্রোল বোমা নয় গ্রেনেড মারার পরিকল্পনা করছে এবং বড় বড় নাশকতা করার।”

নাশকতাকারীদের দমন করে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় জানান শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “দেশের মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। কাজেই সেই দায়িত্বটা আমরা পালন করব। বাংলাদেশের মাটিতে কোনো জঙ্গি-সন্ত্রাসীর স্থান যেন না হয়, বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ার সব থেকে শান্তিপূর্ণ দেশ। সেভাবেই আমরা এই দেশকে গড়ে তুলতে চাই।”

অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের নজিরবিহীন সাফল্যের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক সূচকে সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ‘বিস্ময়’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। কিন্তু বিএনপি ও তার মিত্ররা দেশকে করুণার পাত্র বানাতে চায়।

তিনি আরও বলেন, মানুষ যাতে বিচার পায়, শান্তিতে বাস করতে পারে এবং অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছলতার সঙ্গে এগিয়ে যায়, এ জন্য বর্তমান সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top