সকল মেনু

আবারও উত্তপ্ত হতে চলেছে চবির রাজনীতি

চবিরোমান শেখ, চট্টগ্রাম : আবারো উত্তপ্ত হতে চলেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের রাজনীতি। চবি’র ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক সংগঠন ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স) এবং চ্যুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)’র মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ সংঘর্ষ চলে আসছে। এ দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ আরো ভয়াবহ রুপ নিয়েছিলো গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী দিবসে শহীদ মিনারে ফুল দেওয়াকে কেন্দ্র করে। সেখানে ছাত্রলীগের এই দুগ্রুপের সংঘর্ষে নিহত হন সংস্কৃত বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাপস সরকার। নিহত তাপসকে সিএফসি গ্রুপের কর্মী বলে দাবি করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। ওই দিন শাহজালাল হলে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ভিএক্সের ২৭ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করে।  এরপর থেকে ক্যা¤পাস ছাড়া ভিএক্স নেতাকর্মীরা।
সম্প্রতি জেল থেকে ছাড়া পেয়ে রবিবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে গিয়ে ভিএক্স-সিএফসি’র মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একইদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকজন প্রক্টর ও শিক্ষককে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া দেয় এবং প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক ক্লাব ও মূল ফটকেও তালা লাগিয়ে দেয় ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা।
তাপস হত্যা মামলায় ভিএক্স গ্রুপের প্রায় ৫০ জনের মতো গ্রেফতার হলেও রোববার ১৯ নেতাকর্মী জামিনে বেরিয়ে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ে হারানো অবস্থান পুনরুদ্ধারে নানা তৎপরতা শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বগিভিত্তিক সংগঠন ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)।
অন্যদিকে নিজেদের সমর্থকের হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে না দেওয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছে বগিভিত্তিক আরেক সংগঠন চ্যুজ ফ্রেন্ডস উইথ কেয়ার (সিএফসি)।
এমন অবস্থায় চবি ছাত্রলীগের রাজনীতির মাঠ আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ঠরা। রোববার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেই দুগ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং অস্ত্র হাতে শিক্ষকদের ধাওয়াসহ প্রশাসনিক ভবন, শিক্ষক ক্লাব ও মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেয়। এ অবস্থায় আগামী সপ্তাহে আন্দোলন কর্মসুচীও পালনের পরিকল্পনা করছে বলে সংগঠনের পক্ষ থেকে জাননো হয়।
ভিএক্স ও সিএফসি দুই পক্ষই চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী বলে পরিচিত।
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও ভিক্স পক্ষের নেতা এস এম আরিফুল ইসলাম বলেন, নিজেরা খুন করে সিএফসি আমাদের নিরপরাধ নেতা-কর্মীদের ফাঁসিয়ে দিয়েছে। তাদের চক্রান্তের কারণে আমাদের প্রায় ৪০০ নেতা-কর্মী আজ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারেনা। আমরাও চাই তাপসের খুনীদের সাঁজা হোক, কিন্তু আমরা অপরাধ না করে কেন শাস্তি পাব ? বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪০০ শিক্ষার্থীর শিক্ষার পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদেরকে অবস্থান করতে না দেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারেনা।
এদিকে দীর্ঘ দেড় বছর পর ক্যাম্পাসে নিজেদের অবস্থান ফিরে পাওয়ার পর সিএফসি তাদের প্রতিপক্ষকে ছাড় দিতে নারাজ। তারা বলছেন, খুনি ভিএক্স পক্ষ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায় তারা নিবেন না।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সিএফসি পক্ষের নেতা সুমন মামুন বলেন, খুনী ভিএক্স পক্ষ যদি ক্যা¤পাসে প্রবেশ করতে চায় তাহলে তাদেরকে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে আসতে হবে। অন্যথায় কোনো ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনার দায় আমরা নিতে পারব না।
ছাত্রলীগের দুই পক্ষের অবস্থান যাই হোক না কেন, যেকোনো মূল্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিত স্বাভাবিক রাখতে বদ্ধ পরিকর বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসন।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সিরাজ-উদ দৌল্লাহ বলেন, কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট করতে চায় তাহলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষনিক একাডেমিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top