সকল মেনু

শ্রমিক নিবন্ধনের হিড়িক, সাড়া মিলছে না নারীদের

শ্রমিক নিবন্ধনেরনিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদি সরকার থেকে গৃহকর্মীর চাহিদার কথা বলা হলেও শ্রমিকদের নাম নিবন্ধন চলছে গণহারে। এতে কেবল নিবন্ধন কার্যক্রমই বিঘ্নিত হচ্ছে না, ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে বিদেশ গমনেচ্ছুদের। পাশাপাশি সরকারিভাবে প্রচার না থাকায় আশানুরূপ সাড়া মিলছে না নারী শ্রমিকদের। এতে চাহিদা মত গৃহকর্মী পাঠানো নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।

এ অবস্থার জন্য সরকারের পরিকল্পনাহীনতাকে দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। অন্যদিকে, আপাতত গৃহকর্মী পাঠানো হলেও নিবন্ধনকারী অন্যান্য শ্রমিকদেরও পর্যায়ক্রমে সৌদি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ সচিব।

রানা নামের এক যুবকের মত প্রবাসী কল্যাণ ভবনে নাম নিবন্ধন করতে আসা মানুষের বেশির ভাগই এসেছেন বিভিন্ন মাধ্যম থেকে খবর পেয়ে, ভাসা-ভাসা জ্ঞান নিয়ে। জানেন না ঠিক কোন ধরণের শ্রমিকরা পাবেন বিনা খরচে সৌদি যাবার সুযোগ।

সরকারিভাবে প্রচারের ব্যবস্থা না থাকায় সুনিশ্চিত তথ্য ছাড়াই হন্নে হয়ে দেশের নানা প্রান্ত থেকে রাজধানীতে ছুটে এসেছেন দারিদ্র্যের যাঁতাকলে পিষ্ট দিনমজুর-খেতমজুর মানুষগুলো।

তারা বলেন,’আমরা যেকোনো কাজই করতে পারবো। অনেক কষ্টে হরতাল অবরোধের মধ্যে ফরম জমা দিতে এসেছি।’

খুব শিগগিরই বিদেশ গিয়ে ভাগ্যের চাকা ঘোরাবেন, এমন আশায় বুক বাঁধলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। জনশক্তি রপ্তানিতে সম্প্রতি সৌদি সরকারে সঙ্গে বাংলাদেশের যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে অনুসারে আপাতত যেতে পারবেন কেবল গৃহকর্মীরাই।

নিবন্ধন শুরুর পর থেকে কেন্দ্রগুলোতে হিড়িক দেখা গেলেও নারী শ্রমিকের উপস্থিতি ছিলো খুবই কম। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রেই ছিলো বিশৃঙ্খলা, উঠেছে বিনামূল্যের ফরম চড়া মূল্যে বিক্রির অভিযোগও।

বৃহস্পতিবার অনলাইনে আবেদনের ঘোষণা আসায় অব্যবস্থাপনা হয়তো অনেকটাই কমে আসবে। কিন্তু জনগণকে সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিয়ে শুরু হওয়া এই গণনিবন্ধনের সফলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিটের চেয়ারপার্সন তাসনিম সিদ্দিকী বলেন, ‘পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বলা যেতো যে, নারী শ্রমিক এই মুহূর্তে আমরা রেজিস্ট্রেশন চাই। আমরা অন্য শ্রমিকের রেজিস্ট্রেশন চাই না। এই মানুষগুলো দুইশ’ টাকা খরচ করে রেজিস্ট্রেশন করবে। আগেও কিন্তু বিশ লাখের মতো মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছিল। সেই লোকগুলো কিন্তু কোথাও যেতে পারেনি। একই অবস্থা কিন্তু এবার হবে। তাহলে এটা যেনে শুনে এই কাজটার সুযোগ সরকার কেন দিচ্ছে। এটার ফলাফল হিসেবে মানুষ কিন্তু এক ধরণের প্রতারণার মুখেই পড়বে।’

এদিকে, নেতিবাচক ধারণা পোষণের কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব খন্দকার মো. ইফতেখার রহমান বলছেন, প্রাথমিকভাবে নারী শ্রমিক পাঠানো হলেও অন্যান্য খাতে পুরুষরাও পর্যায়ক্রমে সুযোগ পাবেন।

তিনি বলেন, ‘সৌদি সরকার প্রাথমিকভাবে প্রথম যাত্রায় নারী শ্রমিক নেবে। কিন্তু অন্য শ্রমিক নেবে না তা তো আমরা বলতে পারছি না। সেই জন্য রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে।’

আগামী তিন-চার মাসের মধ্যেই সৌদিতে শ্রমিক পাঠানো শুরু করতে পারবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top