সকল মেনু

ইস্কাটন এলাকায় সৌদি গমনেচ্ছুদের ভীড়

Probashi-Vobonনিজস্ব প্রতিবেদক : সৌদি আরব গমনেচ্ছুদের ভীড়ে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা।
নিউ ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে নিবন্ধন ফরম জমা দিতে ভিড় করেছেন সৌদি আরব গমনেচ্ছুরা। প্রার্থীদের অতিরিক্ত ভীড় সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট করর্মকর্তারা

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে হাজারো মানুষের ভিড়ে বিশৃঙ্খল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সৌদি গমনেচ্ছুদের ভিড় প্রবাসী কল্যাণ ভবন থেকে পূর্বে রমনা থানা ও পশ্চিমে টেলিযোগাযোগ ভবন পর্যন্ত ছড়িয়ে বিস্তৃত হয়েছে।

সৌদি আরব গমনেচ্ছু হাজার হাজার মানুষের চাপ সামাল দিতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর সংশ্লিষ্ট করর্মকর্তারা।

ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিচে মঙ্গলবার ভোর থেকে নাম নিবন্ধনের ফরম জমা দিতে জড়ো হতে থাকেন সৌদি গমনেচ্ছুসহ বিদেশগামীরা। একপর্যায়ে সৌদি গমনেচ্ছুদের (নারী-পুরুষ) লাইন দীর্ঘ হতে হতে ঠেকে মগবাজার মোড় পর্যন্ত। পরে লাইন ভেঙে বিশৃঙ্খলভাবে ফরম জমা দিতে দেখা যায় সৌদি গমনেচ্ছুদের।

রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত সোমবার থেকে শুরু হওয়া চার দিনব্যাপী ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড মেলায় সৌদি গমনেচ্ছুদের নাম নিবন্ধনের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয় জনশক্তি রফতানি ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। এর ফলে সৌদি গমনেচ্ছুদের ভিড় বাড়ে মেলার প্রবাসী কল্যাণ প্যাভিলিয়নে। মেলার দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সৌদি গমনেচ্ছুদের চাপে প্যাভিলিয়ন ভেঙে পড়ে। ওই দিন থেকেই নিবন্ধন ফরম জমা দিতে চাপ বাড়ে ইস্কাটনের প্রবাসী কল্যাণ ভবনের নিচে।

চার দিনব্যাপী ডিজিটাল মেলার শেষদিন বৃহস্পতিবার। বৃহস্পতিবার নিবন্ধন ফরম জমাদানেরও শেষদিন মনে করে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে নির্ধারিত বিএমইটির সংশ্লিষ্ট দফতরে নিবন্ধন ফরম জমা দিতে তাই ভোর থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সৌদি গমনেচ্ছুরা জড়ো হতে থাকেন। যদিও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে, সৌদি গমনেচ্ছুদের নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। শুধু ডিজিটাল মেলার এই চার দিন নয়, নিবন্ধন চলতেই থাকবে।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সৌদি আরবসহ বিদেশ গমনেচ্ছুরা ডিজিটাল মেলা শেষ হওয়ার পরও বিএমইটির অধীনে সব জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিস থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। এতে তাড়াহুড়ো করার প্রয়োজন নেই।

এর আগে গত সোমবার সকালে ঢাকায় সফররত সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উপমন্ত্রী আহমেদ এফ আলফাহিদের নেতৃত্বে ১৯ সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, সৌদি আরবে গৃহস্থালির (হাউজ হোল্ড ওয়ার্কার) কাজে প্রতি মাসে বিনা খরচে ১০ হাজার কর্মী যাবে। তাদের সর্বনিম্ন বেতন হবে ১৫০০ রিয়াল।

এ বিষয়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সৌদি সরকারের সঙ্গে একটি চুক্তি সই হয়। চুক্তি অনুযায়ী আপাতত শুধু ৮০০ রিয়াল বেতনে গৃহকর্মী (নারী) নেবে সৌদি আরব। এর পর ধীরে ধীরে মালী ও দারোয়ানসহ অন্য ১১টি গৃহস্থালির কাজে কর্মী নেবে তারা।

এই চুক্তির মাধ্যমে দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর পর সৌদি আরবের শ্রমবাজার উন্মুক্ত হল বাংলাদেশের জন্য। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। তবে প্রতিশ্রুত বেতন-ভাতার চেয়ে প্রায় অর্ধেক বেতনে চুক্তি হওয়ায় হতাশাও প্রকাশ করেছেন অনেকে।

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবে। দেশটিতে ২০ লাখেরও বেশি বাংলাদেশী কর্মরত রয়েছেন। ২০০৮ সালের পর থেকে বাংলাদেশের জন্য শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। দীর্ঘ চেষ্টা-তদবিরের পর গত ১ ফেব্রুয়ারি সৌদি সরকার বাংলাদেশের ওপর থেকে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে বাজার আবার উন্মুক্ত করে দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top