সকল মেনু

চট্টগ্রামে নাশকতা: সন্ত্রাসী ভাড়া করছেন বিএনপি নেতারা

সন্ত্রাসী ভাড়ানিজস্ব প্রতিবেদক : কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা আবুল হাশেম বক্কর এবং স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা এস কে খোদা তোতনের প্রত্যক্ষ নির্দেশনায় আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে বন্দরনগরী চট্টগ্রামে নাশকতা চালাচ্ছে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীরা। ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করা এসব সন্ত্রাসীদের সহায়তায় রয়েছেন বিএনপি নেতা নবাব খান, সাবেক ছাত্রদল নেতা শওকত আজম খাজা এবং সাইফুল আলম শপথসহ আরো কয়েকজন। বোমাবাজির ঘটনায় হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়া সন্ত্রাসীরা আদালতে দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে চাঞ্চল্যকর এসব তথ্য জানিয়েছে।

গ্রেফতারকৃতদের একজন বলেন, ‘আমাদের সাথে দশ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। তারা আমাদের গাড়ি ভাঙচুর করতে বলে। সে অনুযায়ী আমরা গাড়ি ভাঙচুর করি।’

গ্রেফতারকৃত ইদ্রিস আলী বলেন, ‘কেন্দ্রীয় যুবদলের ভাইস প্রেসিডেন্ট আবুল হাশেম বক্কর এবং শওকত আজম খাজা মহানগরের নেতৃত্বে আমাদের ওয়ার্ডের মধ্যে গাড়ি পোড়ানোর নির্দেশ দেয়।’

নগরীর বিভিন্ন স্থানে নাশকতা সৃষ্টির ইন্ধনদাতাদের ব্যাপারে এভাবেই বর্ণনা দেন গাড়িতে আগুন দেয়া এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ইদ্রিস ও হোসেন। শুধু এ দু’জন নয়, গত দু’সপ্তাহে এ পর্যন্ত ৬ জন নাশকতার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে। সেসব জবানবন্দীতে উঠে এসেছে নাশকতার সাথে সম্পৃক্ত, ইন্ধন এবং অর্থদাতাদের বিস্তারিত বিবরণ।

সিএমপি বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘ইদ্রিস আলীকে গ্রেফতারের পর সে জানায়, চট্টগ্রাম মহানগর এবং কেন্দ্রীয় যুবদল নেতা আবুল হাশেম বক্করের নির্দেশে এবং শওকত আজম খাজা  ও সাইফুল আলমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে গাড়িতে আগুন দেয়ার ঘটনাটি ঘটে। সেই সাথে ওয়ার্ড সেক্রেটারি সাজু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারের সহায়তায় লোক ভাড়া করে গাড়ি পোড়ানো হয়।’

সিএমপি বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘নাশকতা সৃষ্টির জন্য তারা ৮শ’ টাকায় আটকৃতদের ভাড়া করে তাদের হাতে তিনটি ককটেল তুলে দেয়। এগুলো বন্দর ভবনের সামনে বিস্ফোরণ করতে বলা হয়। যাতে সাধারণ যান চলাচল বিঘ্নিত হয়।’

জবানবন্দীতে আসামিরা জানিয়েছে, প্রতিটি ঘটনার জন্য ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় তাদের ভাড়া করা হয়। নির্দেশদাতারা এসব অর্থের অর্ধেক যোগান দিয়ে থাকেন। আর বাকি অর্ধেক পরিশোধ করছে স্থানীয় নেতারা। আর সিএমপির এ কর্মকর্তা বলছেন,আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়েই চালানো হচ্ছে এসব নাশকতা।

সিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রকৌশলী বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘আটককৃতরা জবানবন্দীতে বলেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং লোক সমাগম থাকায় স্থানীয় নেতারা তাদেরকে ভাড়া করে এগুলো ঘটাচ্ছে।’

তবে সিএমপি’র এ শীর্ষ কর্মকর্তা জানান,আসামীদের দেয়া জবানবন্দী পর্যালোচনা করে নাশকতায় ইন্ধন এবং অর্থদাতাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সিএমপির ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম শহীদুর রহমান জানান, ‘জবানন্দীর কপি হাতে পেয়েছি। সে আলোকে আমরা দুষ্কৃতিকারীদের গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।’

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গত ৪০ দিনের সহিংসতার ঘটনায় চট্টগ্রামে মোট ৩৮টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার এজাহারভূক্ত সাড়ে ৯’শ আসামীর মধ্যে পুলিশ ৪’শ ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top