সকল মেনু

সাগর রুনি হত্যায় তিন বছরেও খুনের মোটিভ অধরা

 আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: ঢাকা: তিন বছরেও আলোচিত সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর রুনি হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা হয়নি। মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ব্যর্থতার পর ২ বছর ১০ মাসের তদন্তেও র‌্যাব তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি। এজন্য আদালতের কাছ থেকে ৩২ বার সময় নেয় র‌্যাব। তিন বছরে দফায় দফায় তদন্ত কর্মকর্তা বদল আর তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আদালত সময় দেওয়ার পরও বহুল আলোচিত এ হত্যা মামলায় কোনো অগ্রগতি নেই। আর এ কারণে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত খুনিরা ধরা পড়বে কি না এবং কি কারণে তাদের খুন করা হয়েছে (মোটিভ) তার রহস্য বের হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়েছে। ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর শেরেবাংলানগর থানাধীন পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাসায় খুন হন মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সাংবাদিক মেহেরুন রুনি। হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম রোমান বাদি হয়ে শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

নিজ বাসায় সাংবাদিক দম্পত্তি খুনের ঘটনায় সারাদেশে সাংবাদিক থেকে শুরু করে পেশাজীবী সকলেই প্রতিবাদ এবং ঘাতকদের গ্রেফতারের দাবি করেছিলেন।

ওই সময় ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার করা হবে বলে ঘোষণাও দিয়েছিলেন। শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নয় তৎকালীন অনেক মন্ত্রীই আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের খুনিদের গ্রেফতারে নানা আশ্বাস দেন। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। হত্যার ৩ বছরেও খুনি কারা বা কেনই খুন করা হয়েছে সে সকল বিষয়ে অধরাই থেকে গেছে।

এই ঘটনায় প্রথমে শেরেবাংলা নগর থানার এসআই জহুরুল ইসলাম ও পরে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রবিউল আলম মামলার তদন্ত করেন।

হত্যা মোটিভ বের করতে না পারায় হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি র‌্যাবে স্থানান্তর করা হয়। র‌্যাবে প্রথমে মামলাটি তদন্ত করেন সিনিয়র এএসপি জাফর উল্লাহ। পরে তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়। বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছেন এএসপি ওয়ারেছ আলী মিয়া।

আলোচিত এই হত্যার আট মাস পর ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর বনানী থানার হত্যা ও ডাকাতি মামলায় আটক পাঁচ আসামি- মিন্টু ওরফে বারগিরা মিন্টু, বকুল মিয়া, কামরুল হাসান অরুণ, রফিকুল ইসলাম ও আবু সাঈদকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরা বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. নারায়ণ চন্দ্র দত্ত নিতাই হত্যা মামলার আসামি।

নিহত দম্পতির কথিত পারিবারিক বন্ধু তানভীর রহমান এবং তাদের বাসার দারোয়ান পলাশ রুদ্র পালকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে আরেক দারোয়ান এনাম আহমেদ ওরফে হুমায়ুন কবিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। মামলার অগ্রগতি বলতে এটুকুই। তানভীর রহমান গত ২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট থেকে জামিন পান।

র‌্যাবের তদন্তে সন্দেহভাজন মোট ১৬ জনের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পাঠায়। এছাড়া আলামত হিসেবে জব্দ করা ছুরি ও পোশাকের নমুনা। কিন্তু তাতেও খুনি সনাক্ত করা যায়নি।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের উপ-পরিচালক মেজর রুম্মান মাহমুদ হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা রহস্য উন্মোচনে চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। বিদেশে যেসব ডিএনএ আলামত পাঠানো হয়েছিল, তার সব প্রতিবেদন দেশে এসেছে। ডিএনএ পরীক্ষার আলামত ও অন্যান্য তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা হচ্ছে। সবকিছুই পর্যালোচনা করেই এই মামলার র‌্যাব চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে র‌্যাব বলে জানান তিনি।

এদিকে সর্বশেষ ২ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা র‌্যাবের ইনভেস্টিগেশন এবং ফরেনসিক উইংয়ের সহকারী পরিচালক (সহকারী পুলিশ সুপার) ওয়ারেছ আলী মিয়া। এ কারণে আগামী ১ এপ্রিল পুনরায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়।

তবে এ দিনও মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে কি না তা সঠিক করে বলতে পারেনি র‌্যাবের কর্মকর্তারা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top