সকল মেনু

হুমকির মুখে মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন শিল্প

 এম শাহজাহান আহমদ, মৌলভীবাজার: চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন শিল্পে লাগাতার অবরোধ,হরতাল আর নাশকতার কারণে ধ্বস নেমেছে। প্রতিদিন যে জেলায় আগমন ঘটে কয়েক হাজার দেশী বিদেশী পর্যটকের। সেই ভরা মৌসুমে পর্যটক শূন্য জেলার দৃষ্টিনন্দন স্থানগুলো। পর্যটক না আসায় ও অগ্রিম বুকিং ফিরিয়ে দেয়ায় প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার লোকসান গুনতে হচ্ছে রির্সোট,হোটেল ও রেষ্ট হাউস ব্যবসায়ীদের। প্রকৃতির লীলাভূমি খ্যাত দেশের পর্যটন নগরী মৌলভীবাজার জেলায় অসংখ্য পর্যটন স্পর্ট ও শতাধিক চা বাগান। সারি সারি চা বাগানে শ্রমিকদের নিপুন হাতে পাতা তোলার দৃশ্য পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। রয়েছে ওর্য়াল্ডের শীর্ষস্থান অর্জনকারী বিলাশবহুল দুসাই ও গ্রান্ড সুলতান রির্সোট‘ এবং দেশের ১০টি জাতীয় উদ্যানের মধ্যে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ চা গবেষনা কেন্দ্র,মনু ব্যারেজ,বর্ষিজোড়া ইকোপাক,বাইক্কাবিল হাইল হাওর,হাম হাম জলপ্রপাত,মাধবপুর লেইক ও মাধবকুন্ড জলপ্রপাত,ঐতিহ্যবাহী নিমাই শিববাড়ী,খাসিয়া পুঞ্জি,মুনিপুরি পাড়া পর্যটকের পদচারণায় মুখর থাকে। প্রতিবছর শীত ও পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে দেশী বিদেশী পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখরিত থাকে দৃষ্ঠিনন্দন এসব স্থান। হাজার হাজার পর্যটকের পদচারনায় মুখরিত পর্যটকদের রাত্রি যাপনের জন্য গড়ে উঠেছে প্রায় দুই শতাধিক নয়নাভিরাম রেষ্ট হাউস,রির্সোট ও হোটেল। এসব প্রতিষ্ঠানের মালিক ও শ্রমিকরা পাড় করছেন অলস সময়। ভরা পর্যটন মৌসুমের এসব দর্শণীয় স্থানে পর্যটক শূন্য পড়ে আছে। এব্যাপারে স্থানীয় ছোট বড় রিসোর্ড ও হোটেল মোটেল মালিকরা জানান, লাগাতার অবরোধে পর্যটক না আসায় পর্যটন নির্ভরশীলরা জীবিকা নির্বাহকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন ক্ষতির সম্মুখিন। পর্যটন শিল্প সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বলেন দু:খ নিয়ে বলেন। আমরা এই অবস্থায় চলতে থাকলে ব্যবসা বানিজ্য বন্ধ করে দিতে হবে। পর্যটকের আনাগোনা না থাকায় এর সরাসরি প্রভাব পড়েছে ছোটবড় মিলিয়ে দুই শতাধিক রেষ্ট হাউস ও আবাসিক হোটেলে। বছরের এই সময়টাতে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিজাত রেস্তোরাগুলোতে ভিড় থাকার কথা যেসব নেই কোন পর্যটকের দেখা। এব্যাপারে মনির হোসেন,রেঞ্জ কর্মকতা,লাউয়াছড়া রেঞ্জ ও আফজালুল হক,হিসাব রক্ষক,সহ ব্যবস্থাপনা কমিঠি (ক্যাল) লাউয়াছড়া জানান,এশিয়ার অন্যতম রেইন ফরেষ্ট জাতীয় উদ্যানের মধ্যে বিখ্যাত লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বিরাজ করছে করুন অবস্থা। যেখানে এই স্থানটি পর্যটন মৌসুমী প্রতিদিন ৩থেকে ৪হাজার লোক সমাগম ঘটে। সেখান থেকে গড়ে প্রতিদিন ৬০থেকে ৭০হাজার টাকার টিকেট বিক্রি হয়। সেখানে হরতাল ও টানা অবরোধের কারনে টিকেট বিক্রি নেমে গেছে অনেকটা শূণ্যের কোটায়। সারাদিনে ১‘শ পর্যটকের দেখা মিলে না এমনই জানা গেলো সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে। এব্যাপারে কাজি শরিফ আহমেদ,ফিন্যালসিয়াল কনটলার, দুসাই রির্সোট ও ফারুক রহমান,পরিচালক, গ্রান্ড সুলতান রির্সোট এন্ড গলফ,মৌলভীবাজার জানান- বিগত বছরের দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের কারণে তাদের ব্যবসা বাণিজ্যে ধস নেমেছিল। কিন্তু দেশে চলমান অবরোধ ও হরতালের কারণে এবছরও সেটা পুষিয়ে উঠতে পারবেন না। ফলে তাদের অনেকটা পথে বসার উপক্রম হয়ে পড়েছে। যার ফলে পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন খাতে প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে কয়েক লক্ষ টাকা। আর টানা এক মাসের এই অবরোধে যার পরিমান ছাড়িয়ে গেছে কোটি টাকার উপড়ে। অনেকে বাধ্য হয়েই ছাটাই করছেন কর্মচারী। এ শিল্পের সাথে জড়িত হাজারো মানুষের জীববিকা ও এ খাত থেকে সরকারের বিশাল রাজস্ব আয় বৃদ্ধির স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে সমঝোতার মাধ্যমে এগ্রিয়ে আসবেন এমনটাই আশা করছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top