সকল মেনু

প্রেমিকের মন রাখতেই চলচ্চিত্র ছেড়েছেন মাহি!

মাহিবিনোদন ডেস্ক : চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের অনেকে বলছেন, অভিমান করে চলচ্চিত্র ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন মাহি। আবার প্রোডাকশনের অনেকেই বলছেন, প্রেমঘটিত কারণে মাহি চলচ্চিত্র ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে মাহির নিজের ফেসবুক পোষ্ট থেকে পাওয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে বিনোদন বিশেষজ্ঞরা বের করার চেষ্টা করছেন কী কারণে মাহি এ ধরণের অপ্রত্যাশিত ঘোষণা দিলেন।

‘ভালোবাসার রঙ’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত চলচ্চিত্রে মাহির অভিনয় ক্যারিয়ার শুরু হয় । মাহি অভিনীত বেশিরভাগ চলচ্চিত্রই প্রযোজনা করেছে এ প্রতিষ্ঠানটি। মাহিও বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে বলেছেন, জাজ মাল্টিমিডিয়া তার পরিবার। জাজ মাল্টিমিডিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলিমুল্লাহ খোকনের মতে, অভিমান করেই মাহির এমন ঘোষণা।

মাহির চলচ্চিত্র ছাড়ার ঘোষণা প্রসঙ্গে আলিমুল্লাহ খোকন বিভিন্ন গণমাধ্যমে জানিয়েছেন, চলচ্চিত্রকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্তটা মাহির অল্পবয়সী ছেলেমানুষি সিদ্ধান্ত। শনিবার রাতেও মাহির সঙ্গে আমার মুঠোফোনে কথা হয়েছে। তাকে বলেছি, তুমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছ কেন? তুমি তো চাইলেও চলচ্চিত্র থেকে সরে যেতে পারবে না। তোমার অনেক ভক্ত রয়েছে। সবাই তোমাকে চলচ্চিত্রে দেখতে চায়। পরে যখন চলচ্চিত্রে ফিরে আসবে তখন তুমি মিথ্যাবাদী হয়ে যাবে না? চলচ্চিত্রের সবাই তোমাকে চায়।

অন্যদিকে ফেসবুকে মাহির দেওয়া গত কয়েক দিনের স্ট্যাটাস বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়— ভালবাসার মানুষের ওপর অভিমান করেই চলচ্চিত্রকে বিদায় জানিয়েছেন মাহি। ভালবাসার মানুষটি কে?— এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বেড়াচ্ছেন মাহির ভক্তরা।

ফেসবুকে শুক্রবার মাহি ঘোষণা দেন, অগ্নি-২ চলচ্চিত্র হবে তার অভিনীত শেষ চলচ্চিত্র। এর পরই আলোচনার ঝড় ওঠে।
গত কয়েক দিনে মাহির ফেসবুক বার্তা থেকে অনেকেই ধারণা করছেন, ভালবাসার মানুষের ওপর অভিমান করেই চলচ্চিত্র জগৎকে বিদায় জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জনপ্রিয় এই তারকা। গত মাসে ফেসবুকে দেওয়া বেশিরভাগ স্ট্যাটাসই বলে দিচ্ছে ভালবাসার মানুষের কাছ থেকে অনেক কষ্ট পেয়েছেন মাহি।

তবে সেই প্রযোজকের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই নির্মাতা। এরই মধ্যে চলচ্চিত্রপাড়ায় গুঞ্জন রটেছে— মাহির মান ভাঙাতে এরই মধ্যে সেই প্রযোজক নাকি বিদেশে তার কাছে ছুটে গেছেন।

২২ জানুয়ারি মাহি ফেসবুকে লেখেন, ‘তুমি ফোন করে চুপ করে থাকলেও ভাললাগে। হোয়াই এত্ত ভাললাগে?’ ২৩ জানুয়ারি লেখেন, ‘মনের মাঝে তুমি আছো।’ এর পর ২৬ জানুয়ারি— “অসম্ভব কুৎসিত একটা মেয়ে রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় যদি খেয়াল করে অনেক দূরে দাঁড়িয়ে একটা ছেলে তার জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছে শুধু তাকে এক পলক দেখার জন্য তাহলে? প্রচণ্ড বাজে সময়ে মেয়েটা যখন একা বসে কাঁদছিল ঠিক তখন যদি একজন পাশে এসে বসে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে ‘আমি আছিতো’ তাহলে? তখন বুকের ভেতর একটা ছোট্ট পাখি জন্ম নিবে, পাখিটার নাম হবে ‘মায়া’.. পাখিটা আস্তে আস্তে বড় হবে, বুকের খাঁচায় পাখিটাকে যত্ন করতে পারলে পাখিটা বড় হবে।

পাখিটা বড় হলে তার নাম হবে ‘ভালবাসা’। একবার ‘মায়া’ নামের পাখিটাকে পুষে ‘ভালবাসা’ বানিয়ে ফেললে পাখিটাকে সহজে বিদায় করার উপায় নেই.. বুকের খাঁচা খুলে দিলেও সে উড়ে যাবে না। ‘কষ্ট’ নামের বুলেট দিয়ে তাকে ঝাঁঝরা করে দিতে হয় শেষে। তবু সে মরে না। ‘ভালবাসা’ যদি নাই চাও তাহলে ‘মায়া’টাকেই জন্মাতে দিও না একদম শুরুতেই.. বুকের খাঁচাটা না হয় শূন্যই থাক…।”

২৭ জানুয়ারি লেখেন, ‘কেন এত্ত আহ্লাদ করে কষ্ট পাওয়া।’ পরের দিন লেখেন, ‘ভালবাসা তুমি ভাল থেক তোমার ভালবাসার কাছে। আমার ভালবাসাকে কবর দিয়ে এলাম এইত এই ভোরবেলায় সবার অজান্তে খুব গোপনে।’

২৯ জানুয়ারি আরেকটি ফেসবুক বার্তায় মাহি লেখেন, ‘অনেকগুলো দিন তুমি ঘোরের ভেতর থাকবে, তার পর একদিন তোমার ঘোর কাটবে আর তুমি একলা হয়ে যাবে… বাকিটুকু জীবন তুমি একলাই কাটাবে… একটা মাহিহীন জীবন… আর এটাই তোমার শাস্তি।’
একই দিন আরেকটি বার্তায় লেখেন, “ঠিক আজ থেকে তোমার ওপর আমার আর কোনো অভিযোগ নেই।

কারণ, গতকাল পর্যন্ত আমার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ তুমি ছিলে, আমার থেকেও বেশি প্রিয় আর আপন ছিলে, আমার থেকেও বেশি ভালবাসার মানুষ ছিলে… কিন্তু এখন আমার জন্য সবচেয়ে এবং একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ মানুষ হলাম ‘আমি’ আর আমার ‘পরিবার’…।”

৩০ জানুয়ারি লেখেন, ‘অগ্নি-টু আমার শেষ ছবি। আমি আমেরিকা যাচ্ছি। জানি না, সবার সঙ্গে আবার কবে দেখা হবে। সবাইকে অনেক মিস করব।’

কেন চলচ্চিত্র ছেড়ে দিচ্ছেন মাহি? এ বিষয়ে ফেসবুকে মাহির সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘চলচ্চিত্রে অভিনয় করব না। আপাতত পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চাই। আমেরিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চেষ্টা করছি।’
‘চলচ্চিত্রে থেকেও তো পড়াশোনা করা যায়’— এ কথার জবাবে মাহি কিছু বলেননি। একই সঙ্গে চলচ্চিত্র ছাড়ার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতেও রাজি হননি তিনি। কার ওপর অভিমান তাও বলতে নারাজ মাহি।

মাহির ঘনিষ্ঠ এক চলচ্চিত্র নির্মাতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রের একজন প্রযোজকের সঙ্গে মাহির দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক। ভালবাসার নাম করে মাহিকে মূলত বাণিজ্যের জন্যই তৈরি করেছিলেন তিনি। এখন মাহি যখন দেখল ভালবাসার চেয়ে বাণিজ্যটাই মুখ্য তখন মাহি নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছে চলচ্চিত্র থেকে।’

আব্দুল আজিজ অন্য একটি চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে রবিবার কলকাতায় গেছেন বলে জানিয়েছেন জাজের সিইও আলিমুল্লাহ খোকন তবে সেই প্রযোজকের নাম বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন ওই নির্মাতা। এরই মধ্যে চলচ্চিত্রপাড়ায় গুঞ্জন রটেছে— মাহির মান ভাঙাতে এরই মধ্যে সেই প্রযোজক নাকি বিদেশে তার কাছে ছুটে গেছেন।

উত্তরা মডেল হাই স্কুল থেকে এসএসসি ও সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন মাহি। পরে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনিং বিষয়ে অনার্সে ভর্তি হন। চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ২০১২ সালে ‘ভালোবাসার রঙ’ এর মাধ্যমে। সর্বশেষ দুই বাংলায় মুক্তি পেয়েছে মাহি অভিনীত যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র ‘রোমিও বনাম জুলিয়েট’। এ ছাড়া ৬ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে তার আরেকটিছবি ‘বিগ ব্রাদার’। ছবিটিতে মাহির বিপরীতে আছেন শিপন।

২০ ফেব্রুয়ারি থেকে ব্যাংককে ‘অগ্নি-২’ ছবির শুটিং শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এতে মাহির বিপরীতে আছেন কলকাতার নায়ক ওম। ছবিটির পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী। এ চলচ্চিত্রটিও প্রযোজনা করছে জাজ মাল্টিমিডিয়া। প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার প্রযোজক আব্দুল আজিজ অন্য একটি চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে রবিবার কলকাতায় গেছেন বলে জানিয়েছে জাজের সিইও আলিমুল্লাহ খোকন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top