সকল মেনু

ভোলায় নিরাপরাধ গৃহবধূর হাজতবাস, অভিযোগ না করতে হুমকি প্রদান

Pic--(1)--28--01--15এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা প্রতিনিধি : পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতায় ও স্থানীয় এক চৌকিদারের পূর্ব শত্রুতার জের ধরে বিনা দোষে জেল খাটলেন ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডেও কৃষক আবুল হাশেমের স্ত্রী গৃহবধূ সালেকা বেগম (৪২)। একটি মামলার ওয়ারেন্টের আসামী সাথে নাম ঠিকানার মিল থাকায় গত ৬ জানুয়ারী দিবাগত রাতে স্থানীয় চৌকিদারের সহায়তায় পুলিশের ওসি হুমায়ুন কবির গভীর রাতে সালেকাকে আটক করে কোর্টে চালান করেন। এ ঘটনা প্রকাশ হলে স্থানীয় সাধারণ মানুষ পুলিশের উপর ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে। এ ছাড়া ওই পরিবারটি যাতে করে কোন কিছু না করে তার জন্য হুমকি প্রদান করা হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
স্থানীয় সুত্র জানায়, তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আড়ালিয়া গ্রামের সামছুদ্দিনের স্ত্রী আকলিমা বেগম গত ১ জানুয়ারী/১৪ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ভোলার আদালতে তার স্বামী সামছুদ্দিন, দেবর মাইনুদ্দিন, শ্বশুর আবুল হাসেম ও শাশুড়ী সালেকা বেগমকে আসামী করে ১১(গ)/৩০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৩০/১৪। উক্ত মামলায় বাদীর শ্বাশুড়ী সালেকা বেগম ছাড়া প্রত্যেকে কোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পেলেও সালেকার নামে একটি ওয়ারেন্ট আসে তজুমদ্দিন থানায়। এর প্রেক্ষিতে চাঁদপুর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের চৌকিদার নাসির নামের মিল থাকায় পূর্ব শত্রুতা উদ্ধার করতে থানার ওসিকে ম্যানেজ করে নিরাপরাধ গৃহবধূ সালেকা বেগমকে ফাঁসিয়ে দেয়। গত ৬ জানুয়ারী দিবাগত রাত ২ টায় থানার ওসি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও স্থানীয় চৌকিদার নাসিরসহ গৃহবধূ সালেকাকে আটক করে পরদিন সকালে কোর্টে চালান করে। আসামী পরিবর্তনের বিষয়টি কোর্টে ধরা পরলে সালেকা কোর্ট থেকে ছাড়া পাওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়।
থানা সুত্রে জানা গেছে, ওসি হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে ওই দিন সালেকা আটক হলেও থানার জিডি বইতে তার নামটি তিনি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন। আর এনিয়ে এঘটনায় সন্দেহের ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। গৃহবধূ সালেকা কোর্ট থেকে ছাড়া পেয়ে গত ২৪ জানুয়ারী পুলিশ ও চৌকিদার নাসিরের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের কাছে বিভিন্ন অভিযোগ করেন।
অভিযোগে উল্লেখ, গত ৬ জানুয়ারী দিবাগত রাত ২ টায় থানার ওসি হুমায়ুন কবির ৮/৯ জন পুলিশ ও স্থানীয় চৌকিদার নাসিরসহ এসে সালেকার আড়ালিয়া গ্রামের বাড়ি থেকে জোড়পূর্বক সালেকাকে থানায় নিয়ে আসেন। পুলিশের কাছে সালেকা এর কারণ জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট আছে বলে জানায়। কিন্তু সালেকা তার বিরুদ্ধে কোন মামলা নেই বলে বার বার পুলিশের কাছে আকুতি করে কোথাও ভুল হচ্ছে বলে চিৎকার করে কান্নাকাটি করলেও পুলিশ কর্ণপাত করেনি।
সালেকার আরো দাবী, “প্রতিবেশী চৌকিদার নাসির পূর্বের কোন শত্রুতা উদ্ধারের জন্য পুলিশকে ম্যানেজ করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমাকে টেনে হিচড়ে গাড়ীতে উঠানোর সময় পুলিশ ও চৌকিদার নাসির রাস্তায় দাড়িয়ে টাকা ভাগাভাগি করতে দেখেছি। এটা আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র আমি এর বিচার চাই ।
সালেকার বড় ছেলে আইয়ুব (২৫) জানায়, এ ঘটনাটি গোপন রাখতে ও কোথাও কোন অভিযোগ না করতে আমাদেরকে একটি হুমকি ও মহল চাপ দিচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে চৌকিদার নাসিরের সাথে আলাপ করলে সে দাবী করে, ঘটনার সময় রাতে পুলিশের গাড়ীতে করে ওসি আমাকেসহ গুরিন্দা বাজার এলাকায় যান। সেখান থেকে ফেরার পথে সালেকার বাড়িতে গিয়ে ওসি স্যারসহ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। আটকের পরই জানতে পারি ভূল বশত সালেকাকে আটক করা হয়েছে। পরে আমি রাতেই স্থানীয় চেয়ারম্যানকে বিষয়টা জানানোর জন্য চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। সালেকার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই।
এ বিষয়ে তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, স্থানীয় চৌকিদার সনাক্ত করলে দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার তাকে আটক করে কোর্টে চালান করে। কিন্তু আসামীর নাম ভূল হয়েছে এমন কোন তথ্য আমার জানা নাই।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top