ইকবাল হোসেন, রংপুর প্রতিনিধি : বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহামেদ বলেছেন, আমারা সাধারণ মানুষকে গুলি করে মারার জন্য মাঠে নামিনি। দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই বিজিবিকে মাঠে নামানো হয়েছে। বিজিবি দেশের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে। যারা বোমাবাজ ও সন্ত্রাসী তাদের কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না । বিজিবির সামনে সন্ত্রাসীরা এলে বা বিজিবি আক্রান্ত হলে তারা বসে থাকবে না, আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি করবে। তবে ২০১৩ সালে কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলেও এবছর বিজিবির গুলিতে কোথাও কেউ মারা যায়নি। রোববার রংপুরে বিজিবির উত্তর-পশ্চিম রিজিয়ন-এর সদর দফতরসহ বিভিন্ন ভবন উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর উত্তর-পশ্চিম রিজিয়নের প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহফুজুর রহমান এবং বিভিন্ন সেক্টরের প্রধানসহ উর্ধতন কর্মকর্তা। বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, দেশের চলমান সংকট নিরসনে জেলা প্রশাসকদের অনুরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সংবিধান অনুসারে বিজিবির ৫টি কাজে সীমাবদ্ধ। এরমধ্যে সীমান্ত পাহারা, সীমান্তে অপরাধ দমন, সীমান্ত দিয়ে নারী শিশু পাচাররোধ, বে-সামরিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তা করা এবং সরকার কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব যখন যেভাবে বলবে তা পালন করা। উলে¬খিত ৫টি কাজ পালনে বিজিবি তাদের সর্বশক্তি দিয়ে পালন করে যাচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বর্তমান পরিস্থিতির কথা উলে¬খ করে বলেন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এখন হরতাল ও অবরোধের নামে দেশের বিভিন্ন স্থানে জ্বালাও পোড়াও ও বোমাবাজি চলছে। অনেক স্থানে পেট্রোল বোমা মেরে সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হচ্ছে। আর ওই সকল স্থানে বিজিবির সদস্যরা উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনছে। বিজিবি সাধারণ মানুষকে মারতে মাঠে নামেনি। তিনি আরো বলেন, দেশের যে স্থানে বাসে বা ট্রাকে পেট্রোল বোমা হামলা চালানো হয়েছে। সেই স্থানটি চিহ্নিত করে বিজিবি মোতায়েন করায় সেখানে আর বোমবাজি করতে পারছে না সন্ত্রাসীরা। বিজিবি মাঠে নামার পর থেকে বিভিন্নস্থান থেকে গান পাউডার, পেট্রোল বোমা উদ্ধারসহ নাশকতাকারীদের আটক করা হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক আরো বলেন, কৃষকদের কাছে যাতে করে সার, ডিজেলসহ বিভিন্ন কৃষি সামগ্রী দ্রুত পৌছানো যায় সে লক্ষ্যে বিজিবির সদস্যরা কাজ করছে। এখন বিজিবি প্রহরায় গত এক সপ্তাহে দেড় লাখেরও বেশি বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করেছে।
কারন মিডিয়ার মাধ্যমে দেশবাসী জেনেছে ২০১৩ সালের তারা দেশের মধ্যে কিভাবে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন শুরু করেছিল। আর সেই আন্দোলন দমাতে বিজিবি কি ভূমিকা পালন করেছিল প্রয়োজন হলে আমরা আবার সেই ভূমিকায় ফিরে যাবো। আমরা দেশের পরিস্থিতি সামলাতে প্রয়োজনে যা যা করা দরকার তাই করবো। এখানে কোন ছাড় নেই। বিজিবির সাথে থাকা ম্যাজিস্ট্রেটের অনুমতি নিয়েই হয কাজ করা হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সীমান্তে হত্যা ও চোরাচালান বন্ধ সম্পর্কে মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ জানান, আমাদের সীমান্তের প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এখনো অরক্ষিত। এর পরেও সীমান্তে হত্যা এখন শুন্যের কোঠায়। তবে সীমান্তে চোরাচালান দু’একটি হলেও সেগুলো উলে¬খ করার মতো নয়। তবে কখনও সীমান্তে কোথাও কোন হত্যা কিংবা কাউকে ধরে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকি। এরআগে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহামেদ রংপুর বিজিবির রিজিয়ন এর উত্তর-পশ্চিম জোনের সদর দফতর এর সামনে একটি আমের চারা রোপন করে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মুনাজাত করেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।