সকল মেনু

অবরোধে সাতক্ষীরার অটো রাইস মিলগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত

Riceসাতক্ষীরা প্রতিনিধি : হরতাল ও অবরোধের কারণে সাতক্ষীরার অটো রাইস মিলগুলো চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবহন না পাওয়ায় সরবরাহ করা যাচ্ছে না উৎপাদিত চাল। ফলে হাজার হাজার টন চাল অবিক্রিত হয়ে আছে এসব মিলে। এতে করে মিলার ও ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি এ কাজের সাথে জড়িত শ্রমিকরাও বিপাকে পড়েছে। চাল বিক্রি করতে না পারায় শ্রমিকদের মজুরী দিতে পারছে না অটো-রাইস মিল মালিকরা। অন্যদিকে ভারতীয় চাল আমদানি বেড়ে যাওয়ায়ও দেশি চাল ব্যবসায়ীরা ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন হাজার হাজার মেট্রিকটন ভারতীয় চাল আমদানির ফলে দেশে তৈরি চালের বাজার হারিয়ে যাচ্ছে।
সাতক্ষীরার সবচেয়ে বৃহৎ অটো-রাইস মিল রামচন্দ্রপুর মোড়ে অবস্থিত সাতক্ষীরা এগ্রো-ইন্ডাষ্ট্রিজ। এ মিলে প্রতিদিন হাজার হাজার মন চাল প্রসেসিং ও উৎপাদন করা হয়। জেলার অনেক বড় বড় চাল ব্যবসায়ীরা এখান থেকে চাল প্রসেসিং করে তা ঢাকা, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ ও বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু একটানা দুই সপ্তাহের অবরোধের কারণে ব্যবসায়ীরা তাদের উৎপাদিত চাল জেলার বাইরে সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে মজুত হয়ে আছে এ মিলে বিপুল পরিমান চাল।
অটো-রাইস মিল সাতক্ষীরা এগ্রো-ইন্ডাষ্ট্রিজ’র সত্বাধিকারী মো. রেফাতুল্লাহ জানান, অন্যান্য ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি তিনি নিজেও চাল সরবরাহ করেন দেশের বিভিন্ন জেলাতে। কিন্তু অবরোধের কারণে পরিবহন করতে না পারায় তার উৎপাদিত চাল জেলার বাইরে নিয়ে যেতে পারছে না। ফলে তিনি ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তিনি বলেন, মিলের কর্মকর্তা ও অন্যান্য কর্মচারীদের বেতন এবং বিদ্যুৎ খরচ খুবই ব্যয়বহুল। কিন্তু চাল বিক্রি করতে না পারায় শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তার। এছাড়াও চালের ব্যবসায় আরো ক্ষতি হচ্ছে ভারতীয় চাল আমদানির ফলে। তিনি বলেন, প্রতিদিন ভোমরা বন্দর দিয়ে যে পরিমান চাল আসছে তাতে করে জেলার অধিকাংশ চাল উৎপাদনকারী মিল মালিক ও ব্যবসায়ীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সাতক্ষীরার চাল উৎপাদন ও পাইকারী কেনাবেচার আরো এক অন্যতম মোকাম হচ্ছে ঝাউডাঙ্গা বাজার। এবাজারে প্রায় অর্ধশতাধিক ছোট বড় অটো-রাইস মিল রয়েছে। প্রতিদিনি এ মোকামে প্রচুর চাল কেনাবেচা হয়ে থাকে। দেশের বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এখান ট্রাক বোঝাই করে চাল কিনে নিয়ে যায়। কিন্তু অবরোধের কারনে বাইরের কোনো পাইকারা যেমন আসতে পারছে তেমনি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও জেলার বাইরেচাল নিতে পারছেনা।এ বাজারের চাল উৎপাদন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স পাপন অটো-রাইস মিলের মালিক পরিতোষ কুমার জানান, গত কয়েক দিনের অবরোধে তার প্রতিষ্ঠানটি কয়েক লাখ টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতিদিন শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ হয় কমপক্ষে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা। কিন্তু ১৭/১৮ দিন যাবত মিলের উৎপাদিত কোনো চাল বিক্রি করতে না পারায় এসব খরচ গুণতে হচ্ছে তাকে। তাছাড়া অবরোধ না থাকলে এ সময় মিলে চাল উৎপাদন ও বিক্রি করে অন্তুত: ৪ থেকে ৫ লাখটাকামুনাফাহতো।জেলা শহর ও ঝাউডাঙ্গা বাজার ছাড়াও সাতক্ষীরায় প্রায় শতাধিক অটো-রাইস মিল ও চাল ব্যবসায়ীরা অবরোধে কারনে দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top