সকল মেনু

শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন করতে দিলেন না শিক্ষকরা

 ভোলা প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত ভোলা সরকারি ফজিলতুন্নেছা মহিলা কলেজের সেই শিক্ষককে চাকুরিচ্যুত করার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন করতে দিলেননা শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরা জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রবিবার সকাল ১১টায় কলেজের সামনে রাস্তায় দাড়িয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করার প্রস্তুতি নেয়ার সময় কলেজের শিক্ষকরা এতে বাঁধা প্রদান করেন। তারা আন্দোলনরত একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রীদেরকে কলেজের ভেতর ঢুকিয়ে বাহির থেকে তালাবদ্ধ করে রাখেন। এতে শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে, কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ ফকরুল আলম পাশা ছাত্রীদেরকে মানববন্ধন কর্মসূচিতে বাঁধা দেয়ার কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা ছাত্রীদের মানবন্ধনের বিষয়টি জানতামনা। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যক্ষ বলেন, আমরা জেনেছি যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত শিক্ষক হাবিবকে খুলনা থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছিল। তবে, কি কারণে শাস্তি মূলক বদলি করা হয়েছিল তা আমাদের জানা নেই। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ভোলা সরকারি ফজিলতুন্নেছা মহিলা কলেজের ইংরেজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাবিবুর রহমান কলেজে যোগদানের পর থেকে শিক্ষার্থীরা তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন।

কেউ না পড়লে বা পড়তে রাজি না হলে তাকে ফেল করিয়ে দেয়াসহ নানা রকম ভয়ভীতি প্রদর্শণ করে থাকেন। এ ছাড়াও ওই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট কক্ষ ও ক্লাস রুমে যৌন হয়রানি করতেন বলেও অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পেতনা। বিষয়টি কলেজ অধ্যক্ষকে জানানো হলেও তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। শিক্ষক হাবিবুর রহমানের অশোভন আচরণ ও যৌন হয়রানির বিষয়টি চরম পর্যায়ে পৌছলে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে আন্দোলনে নামেন। কলেজের একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা বুধবার থেকে লম্পট শিক্ষকের বিচার দাবি জানিয়ে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ মিছিল শেষে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করে। একই দাবিতে শনিবারও ক্লাস বর্জন করেছে ভোলা সরকারি ফজিলাতুন্নেছা মহিলা কলেজের ছাত্রীরা। আন্দোলনকারীরা ওই দিন সকালে কলেজে এসে ফের ৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়। তারা আগামী ৫ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত সেই শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে চাকুরিচ্যুত করার দাবি জানান। এদিকে যৌন হয়রনীর দায়ে অভিযুক্ত সেই শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে স্ট্যান্ডরিলিজ কর হয়েছে। তার বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটি রবিবার রিপোর্ট প্রদান করবেন। এ ছাড়া অভিযুক্ত ইংরেজি বিভাগের সহকরী অধ্যাপক মোঃ হাবিবুর রহমানকে স্ট্যান্ডরিলিজ করে চট্টগ্রামের সন্দ্বীপ সরকারি হাজী এবি কলেজে বদলি করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ডিজি এ আদেশ দিয়েছেন। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকেও তদন্ড করা হবে। তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রী রাবেয়া বেগম, পুজা, রিপা, বশরি, রিয়া সাহা, একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী তামান্না ইসলাম তিথি, ইশরাত জাহান, রেজওয়ানা, সানজিদাসহ আন্দোলনরত ছাত্রীরা জানায়, যৌন হয়রানির দায়ে অভিযুক্ত সেই শিক্ষক হাবিবুর রহমানকে চাকুরিচ্যুত করে গ্রেপ্তার করা না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ কলেজের অধ্যক্ষ সেই অভিযুক্ত শিক্ষককে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top