সকল মেনু

অর্থবহ নির্বাচনের জন্য এই মুহূর্তে সংলাপের ব্যবস্থা করুন : রিজভী

Risbi Ahamedরাজনৈতিক প্রতিবেদক : একটি অর্থবহ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে এই মুহূর্তে কার্যকর সংলাপের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

শুক্রবার দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে রিজভী আহমেদ সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, উৎপীড়ণ, পরিকল্পিত নাশকতা, প্রকাশ্য গুলি করে অবরোধকারীদের হত্যা আর ধরপাকড়ের পথ থেকে সরে আসুন। চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি দিন।

তিনি বলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত না বিজয় অর্জিত হচ্ছে ততোক্ষণ পর্যন্ত চলমান অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

রিজভী বলেন, বিরোধী দলের গণতান্ত্রিক অধিকারগুলো তথা বাক, সমাবেশ, চলাচলের স্বাধীনতা ও জনগণের ভোটাধিকার পূনঃরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনকে দমাতে বর্তমান অবৈধ সরকার জনগণের টাকায় পরিচালিত বিভিন্ন সরকারি বাহিনীকে জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে।

তিনি বলেন, বিজিবির মহাপরিচালক ‘প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করবে বিজিবি’ বলে যে হুমকি দিয়েছেন সেটি নজীরবিহীন, অমানবিক ও আতঙ্কজনক।

রিজভী বলেন, বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজেদের লোকদের বসিয়ে এই সমস্ত বাহিনীগুলোকে গণশত্রুতে পরিণত করা হয়েছে। বিজিবির দায়িত্ব সীমান্ত পাহারা দেয়া। প্রায় প্রতিদিনই আমাদের দেশের লোককে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ফেলানীর লাশ যখন কাঁটাতারের ওপর ঝোলে তখন এই ধরনের মহাপরিচালকরা নিশ্চুপ থাকে। কিন্তু জনগণের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণ করতে এরা দ্রুত তৎপরতা দেখায়।

রিজভী আহমেদ বলেন, আবার অন্যদিকে যৌথবাহিনীর নামে গ্রাম-গঞ্জে নিরীহ জনগণের ওপর চালানো হচ্ছে আক্রমণ। র‌্যাব, পুলিশ ও বিজিবির সমন্বয়ে গঠিত যৌথবাহিনী মানুষ হত্যার নির্দেশনা নিয়ে চলমান আন্দোলনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ছে।

তিনি বলেন, ৭২-৭৫ এর রক্ষীবাহিনীর প্রেতাত্মা নিয়ে এই যৌথবাহিনী গ্রাম-গঞ্জে বিভৎস তা-ব চালাচ্ছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ-কানসাটের কয়েকটি গ্রামে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের হত্যা, বাড়িঘর ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। আতঙ্কে দিশেহারা মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এই পৈশাচিক তা-ব চলছে শিবগঞ্জ-কানসাটসহ সারা বাংলাদেশে।

রিজভী বলেন, বাপকে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে ছেলেকে কিংবা ছেলেকে ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে পিতাকে অথবা ভাইকে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। পরিবারের মা-বোনদের সঙ্গে করা হচ্ছে ভয়ংকর অসদাচরণ।

তিনি বলেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে বারবার বলেছিলাম, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এখন আর জনগণের বাহিনী নয়, এটি দলীয় ক্যাডারে সাজানো আওয়ামী রক্ষাকারী বাহিনী, যদিও জনগণের টাকায় তারা বেতন পায়।

রিজভী বলেন, শতকরা ৫ ভাগ ভোট নিয়ে জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা এই প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মসনদ থেকে অবতরণ করতে এতো অনিহা কেন? কারণ এই ভোটারবিহীন সরকার এতোই অনাচার করেছে যে, জনগণের ক্রোধের ভয়ে দলীয় লোকদের দিয়ে গঠিত আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর প্রহরায় ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে আছে। তাই সংকট নিরসন করতে তারা ভয় পা্‌চ্েছ।

তিনি বলেন, শান্তি, স্থিতি ও স্বস্তির রাজনীতির পরিবেশ সৃষ্টিতে তারা অনাগ্রহী এবং এই কারণেই একটি স্বচ্ছ ও সবার অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে তারা ভয় পায়।

রিজভী আহমেদ দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না এবং ক্ষমতায় গেলে কারো প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবে না। আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে আমরা বদ্ধপরিকর।

তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার ফিরে পাওয়া ও একটি অবাধ নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্যই আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে লাগাতার এই আন্দোলনে রত আছি। এই অবৈধ সরকার এখন খাদের কিনারায় এসে দাঁড়িয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top