সকল মেনু

অবরোধ আর হরতাল সংবিধান পরিপন্থী…….রংপুরে পুলিশের আইজিপি

 ইকবাল হোসেন, রংপুর: পুলিশের আইজিপি একেএম শহীদুল হক বলেছেন, অবরোধ আর হরতাল সংবিধান পরিপন্থী । হরতাল আর অবরোধের নামে যারা দেশের সম্পদ নষ্ট করছে সাধারন মানুষকে পুড়িয়ে মারছে তাদের কোনভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না। জনগনকে সাথে নিয়ে তাদের প্রতিরোধ করা হবে। স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিগুলোর দূর্বলতার কারনে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলো আজ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তবে মানবতা বিরোধী, সন্ত্রাসী, দেশ ও জনগনের শত্র“দের রুখতে হবে। শুক্রবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাস ও নাশকতা রোধে সুধিজনের সাথে আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিধির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালাও পোড়াও হরতাল ও অবরোধকারিদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে তিনি বলেন সংবিধানের কোথাও লেখা নেই গণতান্ত্রিক অধিকার আদায় করতে হরতাল ও অবরোধ দিয়ে মানুষ মারা ও জনগনের সম্পদ নষ্ট করতে হবে। হরতাল অবরোধের মত সংবিধান পরিপন্থি কাজ করে জ্বালাও, পোড়াও মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সংবিধানে রয়েছে প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সমাবেশ করার অনুমতি । একেএম শহীদুল হক  বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি না দেওয়া প্রসঙ্গে বলেন বিএনপি অনুমতি চাওয়ার এক মাস আগে ৫ জানুয়ারীর অনুমতি নিয়েছিল আওয়ামী লীগ। পরে বিএনপি অনুমতি চায়।  দুদলকে এক সাথে অনুমতি দিলে রক্তক্ষয়ি সংঘর্ষের আশংকা ছিল তাই কাউকেই অনুমতি দেওয়া হয়নি। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট ছিল ৫ জানুয়ারী বিএনপি সমাবেশের নামে নাশকতার। তিনি আরো বলেন,  মিঠাপুকুরে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির দুর্বলতার কারণেই স্বাধীনতার বিপ্ক্ষ শক্তি জামায়াত শিবির মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। তারা জনগণের জানমাল নিয়ে ছিনি মিনি খেলছে। আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা করছে। এই অপশক্তিকে নির্মৃূল করতে হলে পুলিশের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তিকে একসাথে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার জন্মস্থানে আজ মহিলাদের ব্যবহার করা হচ্ছে সন্ত্রাসী ও মৌলবাদি কর্মকান্ডে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হচ্ছে মহিলাদের। যারা এসব করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সারা দেশের মধ্যে রংপুরের মিঠাপুকুর, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি ও গোবিন্দগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। এই অবস্থা চলতে দেওয়া যাবে না। সন্ত্রাসের মূল উৎপাটন করতে হবে। পুলিশের আইজিপি ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন প্রসঙ্গে আরো বলেন, যারা  ভোটের কথা বলছেন তারই এদেশের জনগণের ভোটের অধিকার ক্ষুন্ন করেছে। সরকার ভোট দিয়েছে। তারা ভোট কেন্দ্র জ্বালিয়ে দিয়েছে, প্রিজাইডিং অফিসারকে হত্যা করে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে বাধাগ্রস্থ করেছে। ভোটে না গিয়ে এখন তার খেসারত দিচ্ছেন এবং আন্দোলনের নামে জনগনের জানমাল ধ্বংস করছেন আমরা তা হতে দেব না। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারী থেকে এপর্যন্ত আন্দোলনের নামে ২৪ জনকে হত্যা খুন করা করা হয়েছে। এসবের বিরুদ্ধে দেশের মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে অন্দোরনের নামে মানুষকে হত্যা করা হচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও নাশকতা নিমূলে কাজ করে যাব। তিনি টকশো যারা করেন তাদের উদ্দেশ্যে বলেন যারা টকশো করেন তারা বিবেক বুদ্ধি হারিয়ে ফেলেছেন। কারণ তারা কি বলছেন তা তারা নিজেরাই জানে না। শুধু মিথ্যাচার করছে। তিনি বলেন নির্বাচনের পর মানুষ এক বছর শান্তিতে ছিল। দেশের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছিল। দারিদ্রতা কমেছে। স্থিতিশীল পরিস্থিতিকে তারা অস্থিতিশীল করে তুলেছে। এসব আর সহ্য করা হবে না। র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ বলেছেন, মিঠাপুকুরবাসির আজ দুঃখের দিন। একটি গোষ্ঠী নিজেদের সংকীর্ণ স্বার্থ হাসিলের জন্য দেশের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। তারা স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নস্যাৎ করতে চায়। গণতন্ত্রের নামে বোমাবাজী করে উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এসব খুনিদের সমুলে নিশ্চিহ্ন করতে হবে। তিনি বলেন রংপুরে সন্ত্রাসীর সংখ্যা বড়জোর ৭০ থেকে ৭০০ হবে। এসব সন্ত্রাসীদের বিতারিত করতে হবে। তিনি নাশকতাকারিদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা জনগন, রাষ্ট, সমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছো। এর পর থেকে সন্ত্রাস করতে হলে জীবন হাতে নিয়ে এসো। কোন ছাড় দেওয়া হবে না তোমাদের।  তিনি বলেন সন্ত্রাস নির্মূল করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে যা যা  প্রয়োজন তাই  করা হবে।  রংপুরের জেলা প্রশাসক ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিভাগীয় কমিশনার মুহম্মদ দিলোয়ার বখত, ডিআইজি (ভারপ্রাপ্ত) হুমায়ুন কবির, পুলিশ সুপার আবদুর রাজ্জাক, উপজেলা মুক্তযোদ্ধা কমান্ডার শহিদার রহমান, মিঠাপুকুর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জায়গীরহাট ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ তোজাম্মেল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম রাজু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক, মিঠাপুকুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক জাকির হোসেন। এর আগে মিঠাপুকুর পল্লী¬ বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ে বাসে অগ্নিকান্ডে নিহত রহিম বাদশা ও তার মা রহিমা বেগমের পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা এবং রকেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আনোয়ার হোসেনে স্ত্রী হাসি বেগমকে ১০ হাজার টাকা প্রদান করেন।  গত ১৩ জানুয়ারী রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের মিঠাপুকুর উপজেলার জায়গীর বাতাসন ফতেপুর নামকস্থানে খলিল এক্সক্লুসিভ পরিবহনের একটি নৈশ কোচে দুর্বৃত্তরা পেট্রোল হামলা করে। এতে শিশুসহ ৫ যাত্রী অগ্নি দগ্ধ হয়ে মারা যান। এরপর থেকে ওই এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সর্বোচ্চ পদলেক্ষপ নেওয়া হয়। এসব সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top