সকল মেনু

মলম পার্টির দুই সদস্যের মৃত্যুদণ্ড বহাল

Highনিজস্ব প্রতিবেদক : মলম পার্টির দুই সদস্যকে ছিনতাই ও হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে দুই সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশও বহাল রেখেছেন উচ্চ আদালত।

ডেথ রেফারেন্স ও ফৌজদারি আপিলের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আব্দুল হাই ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল মো. মনিরুজ্জামান রুবেল এবং সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম আজাদ খান।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০০৭ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক দেওয়ান রাহাত করিম মুকুল (৩৬) ক্লাস শেষে রাত ৮টার দিকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশে সিএনজিতে উঠেন।

সিএনজি মহাখালী ফ্লাইওভারের নিকট এলে মলম পার্টির সদস্য ও চালক মুক্তার হোসেন প্রস্রাব করার নাম করে তার অন্য সঙ্গী মোশারফ হোসেন ওরফে হাজীসাব, লিটন মল্লিক ও জাহাঙ্গীরকে সিএনজিতে তুলে নেয়।

এরপর তারা রাহাতের কাছ থেকে জিনিসপত্র ছিনিয়ে নিতে গেলে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে লিটন গামছা দিয়ে তার গলা পেঁচিয়ে ধরে এবং কিলঘুষি মারতে থাকে। আঘাতের এক পর্যায়ে রাহাত মৃত্যুবরণ করেন। রাহাতের মৃতদেহ মলম পার্টির সদস্যরা আর্মি স্টেডিয়ামের পাশে কাবাব ঘরের পেছনে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়।

স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে মৃতদেহ উদ্ধার করে গুলশান থানার উপ-পরিদর্শক মো. মাঈনুল জাকির অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করে।

এরপর একই বছরের ২ অক্টোবর মলম পার্টির ওই সদস্যরা একই উপায়ে সিএনজিতে ভাড়াটিয়া তুলে ছিনতাই করতে গেলে মৎস্য ভবনের কাছে তারা ছিনতাই করতে ব্যর্থ হয়ে সিএনজি ফেলে পালিয়ে যায়।

পরবর্তী সময়ে রমনা থানার পুলিশ সিএনজিটি জব্দ করে। সূত্র ধরে সিএনজির মূলচালক আলালকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আলাল স্বীকারোক্তি দিয়ে পুলিশকে জানায়, তার কাছ থেকে সিএনজি নিয়ে মুক্তারসহ মলম পার্টির এই চার সদস্য ছিনতাই করে থাকেন এবং নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাহাত করিমকে হত্যার বিষয়টিও তিনি স্বীকার করেন।

আলালের দেওয়া তথ্যানুযায়ী হত্যার সঙ্গে জড়িত মোশারফ হোসেন, মুক্তার হোসেন এবং জাহাঙ্গীরকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে লিটন পলাতক ছিলেন।

এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৬ এপ্রিল ডিবির পক্ষ থেকে চার্জশিট দাখিল করা হয়।

একই সঙ্গে গ্রেফতার হওয়া চারজন আসামি প্রভাষক রাহাত হত্যার সঙ্গে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী পেশ করেন।

প্রসিকিউশনের ২৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ শেষে ২০০৯ সালের ২৯ জুলাই দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১, ঢাকার বিচারক মো. মাসদার হোসেন মোশারফ হোসেন ও লিটনকে মৃত্যুদণ্ড ও বাকি তিনজনকে যাবজ্জীবন দিয়ে রায় ঘোষণা করেন।

রায়ের পরে মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি লিটন আদালতে আত্মসমর্পন করেন।

বিচারিক আদালতের দেওয়া এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি শেষে হাইকোর্ট আলালকে খালাস প্রদান করেন। বাকি চারজনের সাজা বহাল রাখেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top