সকল মেনু

সাতক্ষীরার পুরাকীর্তি

 মো. মাহমুদ হাসান,খুলনা ব্যুরো: প্রতাপাদিত্যের পতনের পর খুলনা-সাতক্ষীরা অঞ্চল চলে যায় জমিদারদের নিয়ন্ত্রণে। খান-ই-আজম মির্জা আজিজ কোকা (১৮৮২-১৮৮৩ খ্রি:) প্রতাপের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের পুরস্কারস্বরূপ মোঘলদের কাছ থেকে লাভ করেছিলেন আসিদপুর, সৈয়দপুর, মুগদাগাছা ও মল্লিকপুরের জমিদারি। এ সময়ে দক্ষিণাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য অপরাপর জমিদাররা হলেন ভবেশ্বর রায়, মাহতাব রায় (১৫৮৮-১৬১৯ খ্রি:), কন্দর্প রায়, মনোহর রায় (১৬৪০-১৭০৫ খ্রি:) ও শ্রীকৃষ্ণ রায় (১৭০৫-১৭৭২ খ্রি:)।বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার দেওয়ান ও নাজিম হিসেবে আলীবর্দী খাঁ নিযুক্তি পান ১৭৪০ খ্রি:।আর ইংরেজরা এ দেশে বাণিজ্য শুরু করে ১৭৪২ খ্রি:। এ সময়ে মারাঠা বর্গীরা আক্রমণ চালায় বাংলায়। খুলনা অঞ্চলও আক্রান্ত হয় মারাঠা কর্তৃক (১৭৪৮ খ্রি:)।

সুন্দরবন, সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রতাপাদিত্যের পর ব্যাপক প্রশাসনিক উন্নতি হয় হেংকেলের আন্তরিকতায়। ১৭৮১ খ্রি: টিলম্যান হেংকেল প্রথম ম্যাজিস্ট্রেট ও জজ নিযুক্ত হন যশোর অঞ্চলে। ঐ বছরই যশোরে প্রথম আদালত স্থাপিত হয়। ১৭৮৬ খ্রি: তিনি খুঁটি দিয়ে সীমানা চিহ্নিত করেন। ১৭৮৬ খ্রি: যশোর পৃথক জেলার মর্যাদা পায়। এরপর থেকে যশোর অঞ্চল প্রশাসনিকভাবে বিকেন্দ্রীকরণ হতে থাকে।সাতক্ষীরা মহকুমা ও খুলনা জেলা সৃষ্টি হয় যথাক্রমে ১৮৫২ ও ১৮৮২ সালে। প্রথমে সাতক্ষীরা মহকুমাকে যুক্ত করা নদীয়া জেলার সঙ্গে, ১৮৬১ সালে আবার আনা হয় চব্বিশ পরগণার জেলায়। লড রিপনের (১৮৮০-৮৪) সময় ১৮৮২ সালে সাতক্ষীরাকে একটি মহকুমা করে খুলনা জেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।ইতিহাসের এ ধারাবাহিকতায় নানা ধর্মাবলম্বী, নানা পেশার, নানা ভাষার লোক বিভিন্ন সময়ে এ জনপদে তাদের বসত গেড়েছেন।

সঙ্গত কারণেই তাদের কিছু কীর্তির ধ্বংসাবশেষ এখনও আছে এ জনপদে। সংরক্ষণের অভাব, সরকারের উদাসীন্য, ঐতিহাসিক নিদর্শন ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার, লবণাক্ত আবহাওয়া, ধ্বংস ইত্যাদি কারণে বহু প্রাচীন নিদর্শন আজ বিস্মৃতির অতলে, তবুও এখনো যে নিদর্শনসমূহ টিকে আছে তা দেখে ও তার ইতিহাস ঘেটে নির্দ্বিধায় এ সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায়, বাংলাদেশ তথা বিশ্বের প্রাচীনতম নিদর্শনসমূহের পাশাপাশি অতি সহজেই এ প্রাচীন কীর্তিসমূহ স্থান লাভের যোগ্য।সাতক্ষীরা অঞ্চলে এখনো যে সমস্ত পুরাকীর্তির সন্ধান পাওয়া যায় তা হলো- মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, দুর্গ, স্তূপ, গড়,ভাস্কর্য, পোড়ামাটির চিত্রফলক,বৃহৎকায় দিঘি,মাজার,মুদ্রা,হাম্মামখানা, লিপি, মূর্তি ও মানুষের ব্যবহার্য নানা উপকরণ। এ সমস্ত পুরাকীর্তির অনুসন্ধান ইতোপূর্বে যা হয়েছে তা খণ্ডিত। সাতক্ষীরা অঞ্চলের অনালোচিত ও অল্পালোচিত কয়েকটি পুরাকীর্তির সরেজমিন ধারাবাহিক তথ্যানুসন্ধান বর্তমান গবেষণায় তুলে ধরা হলো। (চলমান)

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top