সকল মেনু

মওলানা ভাসানীর ১৩৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

হটনিউজ২৪বিডি.কম:ঢাকা: আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা, মুজিবনগর সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৩৪তম জন্মবার্ষিকী আজ শুক্রবার। ১৮৮০ সালের এই দিনে তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা সদরের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।

তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বাণী দিয়েছেন।

দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে মুনাজাত, আলোচনা সভা ইত্যাদি।

মওলানা ভাসানী ছিলেন বিশ শতকের ব্রিটিশ-ভারতের অন্যতম তৃণমূল রাজনীতিবিদ ও গণআন্দোলনের নায়ক। তিনি ১৯৪৭-এ সৃষ্ট পাকিস্তান ও ১৯৭১-এ প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। দেশের মানুষের কাছে ‘মজলুম জননেতা’ হিসেবে সমধিক পরিচিত তিনি। ১৯৫৪ খ্রিস্টাব্দের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট গঠনকারী প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম ভাসানী। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি।

ভাসানী তার রাজনৈতিক জীবনের বেশিরভাগ সময় মাওপন্থি কম্যুনিস্ট তথা বামধারা রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁর অনুসারীদের অনেকে এজন্য তাঁকে ‘লাল মওলানা’ নামেও ডাকতেন। তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা এবং পঞ্চাশের দশকেই নিশ্চিত হয়েছিলেন যে পাকিস্তানের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ একটি অচল রাষ্ট্রকাঠামো। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের কাগমারি সম্মেলনে তিনি পাকিস্তানের পশ্চিমা শাসকদের ‘ওয়ালাকুমুসসালাম’ বলে সর্বপ্রথম পূর্ব পাকিস্তানের বিচ্ছিন্নতার ঐতিহাসিক ঘণ্টা বাজিয়েছিলেন। সেই অর্থে বলা চলে, ভাসানীই বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রথম বাণী শুনিয়েছেন।

১৯৫৬ সালে পাকিস্তান গণপরিষদে যে খসড়া শাসনতন্ত্র বিল পেশ করা হয় তাতে পাকিস্তানকে ইসলামিক রিপাবলিক বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। তখন মাওলানা ভাসানী পল্টনের জনসভায় তার বিরোধিতা করে সুস্পষ্ট বক্তব্য দিয়েছিলেন।

কাগমারি সম্মেলনে ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়। ৮ ফেব্রুয়ারি ডক্টর কাজী মোতাহার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি আরম্ভ হয়। ওই সভায় মওলানা ভাসানী বলেন, পূর্ববাংলা পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শাসকদের দ্বারা শোষিত হতে থাকলে পূর্ববঙ্গবাসী তাদের সালামু ওআলায়কুম জানাতে বাধ্য হবে।

এছাড়া কাগমারি সম্মেলনে ভাসানী পাক-মার্কিন সামরিক চুক্তি বাতিলের দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রী সোহরাওয়ার্দী সেই দাবি প্রত্যাখান করলে ১৮ মার্চ আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। একই বছর ২৫ জুলাই তার নেতৃত্বে ঢাকার রূপমহল সিনেমা হলে ‘ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি’ (ন্যাপ) গঠিত হয়। ন্যাপ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভাসানী প্রকাশ্যে বামপন্থি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং এর পর থেকে সবসময় বাম ধারার রাজনীতির সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

মওলানা ভাসানী ১৯৭০ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন ময়দানে এক জনসভায় ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান’ দাবি উত্থাপন করেন। ১৯৭১ এর মার্চ মাসে শেখ মুজিবুর রহমানের অসহযোগ আন্দোলনের প্রতি সমর্থন প্রদান করেন এবং ১৮ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত জনসভায় স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের জন্য তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top